আই এস বিন্দ্রা
পুরোটাই নাটক। দিল্লিতে আগে থেকেই লেখা হয়ে গিয়েছিল এই নাটক। বৈঠকে আমিই একমাত্র নির্দিষ্ট ভাবে শ্রীনিবাসনের পদত্যাগের দাবি তুলেছিলাম। একাধিক বার। অন্যরা চুপচাপ বসেছিল। বোর্ডের তদন্ত কমিটি কে গঠন করল, সেই প্রশ্নও তুলি। শ্রীনি বলে, এই ব্যাপারে তার কোনও ধারণা নেই। এই বৈঠকের বৈধতা নিয়ে খোদ শ্রীনিই প্রশ্ন তোলে। ভিডিও কনফারেন্সে থাকা জেটলি বলে পরে, একে বৈধ করে নেওয়া হবে। ডালমিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষমতা নেওয়ার অধিকার নিয়েও প্রশ্ন তুলি। শ্রীনি বলে, সেই অধিকারের ওপর সে-ই সিলমোহর বসিয়ে দেবে। এ সব কী? দেশের ক্রিকেটের বদনাম ঘোচানোর দায়িত্ব আমার একার নয়। বোডের্র্র সবাই যদি চুপ করে বসে থাকে, তা হলে আমি কী করব? |
অরুণ জেটলি
বিন্দ্রার মতো এক জন বর্ষীয়ান ক্রিকেট প্রশাসকের কথার জবাব দিতে চাই না। সম্প্রতি ভারতীয় ক্রিকেটে যা ঘটেছে, যে ভাবে বোর্ড সভাপতির আত্মীয় গোটা ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছে, তাতে তাঁর তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সরে যাওয়াই উচিত। এই মত নিয়ে বোর্ডের মধ্যে কোনও দ্বিমত ছিল না বলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শ্রীনিবাসনের জায়গায় বিশ্বাসযোগ্য বিকল্প ব্যক্তি বলতে দু’জনই ছিলেন শশাঙ্ক মনোহর ও জগমোহন ডালমিয়া। কারণ, সামনে নির্বাচন বলে আমার পক্ষে এই দায়িত্ব এখন নেওয়া সম্ভব নয়। ডালমিয়া অনেক অভিজ্ঞ। তিনি এই দায়িত্ব ভাল ভাবেই পালন করতে পারবেন বলে আমার ধারণা। তাঁকে কত দিন দায়িত্বে থাকতে হবে, তা নির্ভর করছে তদন্ত কমিশনের সদস্যদের উপর। তা নিয়ে বোর্ড কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। আইসিসি-র বৈঠকে ডালমিয়ারই যাওয়া উচিত। তবে তা ঠিক করবে ওয়ার্কিং কমিটি। |
সঞ্জয় জাগদালে
আমাকে আজ পদত্যাগ ফিরিয়ে নিতে বলা হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু দুঃখিত, আমি তা পারছি না। আমার উপর কোনও চাপ সৃষ্টি করা হয়নি। আমি কখনও কোনও চাপের কাছে নতিস্বীকার করিনি। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে আমাদের ক্রিকেট প্রশাসনের পুরো সিস্টেম নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন ছিল। কী করে ক্রিকেটকে কলঙ্কমুক্ত করা যায় কী ভাবে, তা নিয়েই আলোচনা হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটাই হল না। এটাই আমার খুব খারাপ লেগেছে। আমাদের আলোচনাটা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে উঠেছিল। সম্প্রতি যে ঘটনাগুলি ঘটেছে, তাতে আমার মনে হয়েছে এটা সেই ক্রিকেট নয়, যার প্রশাসনের দায়িত্বে এসেছিলাম। তাই ছেড়ে দেওয়াই ভাল। আর বোর্ডে ফিরছি না। |
অজয় শিরকে
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র নিয়ে আমার যতটুকু ধারণা রয়েছে, তাতে একটা কথা পরিস্কার বুঝতে পারছি, রবিবারের বৈঠকে যে রফাসূত্র বের করা হল, তা আইনানুগ নয়। পরে এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। তখন আর আমার জবাব দেওয়ার মতো কিছু থাকবে না। তাই আমি এর মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চাই না। আইপিএল ফিক্সিংয়ের তদন্ত কমিশনে প্রথমে আমার নাম রাখা হয়েছিল এবং তা আমার সঙ্গে কথা না বলেই। পরে আমি তা প্রত্যাখ্যান করায় সঞ্জয় জাগদালের নাম রাখা হয়। সেও তার সঙ্গে কথা না বলে। এর প্রতিবাদ করা দরকার ছিল। আমাকে তাই পদত্যাগপত্র ফেরাতে বলা হলেও আমি তা পারছি না। |
|
বিশ্বরূপ দে
এত দিনে জগুদা (ডালমিয়া) সুবিচার পেলেন। ২০০৫-এ ওঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আজ প্রমাণ হয়ে গেল, সেটা ঠিক হয়নি। ডালমিয়ার এটা বিরাট জয়। ভারতীয় ক্রিকেট এখন খুবই খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ডালমিয়াই এই অবস্থায় হাল ধরার যোগ্য লোক ছিলেন। এটা ওঁর কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জও। অতীতে অনেক কঠিন পরিস্থিতির সমাধান উনি করেছেন। এটাও করবেন। |
ললিত মোদী
শয়তানের জোটের তৈরি কৌশল কাজে লেগে গেল। এটাই প্রত্যাশিত ছিল। আসলে বিষটা গভীরে। ভারতীয় ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় কেলেঙ্কারি ধামাচাপ দেওয়ার কাজ শুরু হয়ে গেল। এই কাজে শ্রীনিবাসনের সহযোগী অরুণ জেটলি, রাজীব শুক্ল ও অনুরাগ ঠাকুর। জগমোহন ডালমিয়ার দায়িত্ব নেওয়াটা মোটেই এই পরিস্থিতির সঠিক সমাধান নয়। বড় ফিক্সাররা এ বার এক জায়গায় জড়ো হয়েছে। |
কীর্তি আজাদ
ভারতীয় ক্রিকেটের বদনাম এমনিতেই প্রচুর হয়েছে। রবিবারের এই বৈঠকের পর তো ভারতীয় বোর্ড হাস্যাস্পদ হয়ে উঠল। ভারতীয় ক্রিকেটকে কলঙ্কমুক্ত করতে হলে এখন নরেন্দ্র মোদীর মতো সোজা ও শক্ত লোক দরকার। এদের দ্বারা হবে না। বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মতো অযোগ্য প্রশাসন হয় না। |
বিষেণ সিংহ বেদী
এটা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, আইপিএলের মধ্যে দুর্নীতির যে বীজ পুরোমাত্রায় রয়েছে, তাকেই এখন বড় করে তুলেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এবং তারই কুফল ভোগ করতে হচ্ছে দেশের অসংখ্য ক্রিকেটপ্রমী জনতাকে। দিনের পর দিন চলতে থাকা একটানা অন্যায় ধামাচাপা দিতে এমনকি ক্রিকেটারদেরও মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এটাও ভাল রকম বোঝা যাচ্ছে যে ধোনি সে জন্যই ইংল্যান্ডেও মুখ খুলতে পারেনি। |