|
|
|
|
মেদিনীপুর কলেজ |
ভর্তির ফি বাড়ছে না |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
তৃণমূলের একাংশ নেতৃত্বের চাপে ভর্তির ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এলেন মেদিনীপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ। জরুরি বৈঠকে স্থির হয়েছে, ভর্তির ফি আপাতত বাড়ানো হবে না। এক সপ্তাহের মধ্যেই কেন সিদ্ধান্ত বদল? কলেজ সূত্রে খবর, ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের পর থেকে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ চাপ দিচ্ছিলেন। তাঁদের বক্তব্য, সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তারপর মেদিনীপুর পুরসভার ভোট। এখন ফি বাড়ালে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে নির্বাচনে। বিরোধীরাও বিষয়টিকে প্রচারের হাতিয়ার করবে। মেদিনীপুর কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি পদে রয়েছেন শহরের পুরপ্রধান প্রণব বসু। তিনি যে ফি না বাড়াতে বলেছিলেন, তা মেনে নিয়েই মেদিনীপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুধীন্দ্রনাথ বাগ বলেন, “পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ভর্তি ফি আপাতত বাড়ানো হবে না।”
যে বৈঠকে ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়, গত ২৮ মে পরিচালন সমিতির সেই বৈঠকেও ছিলেন প্রণববাবু। সে দিন সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে কলেজের ‘ফিনান্স কমিটি’ ফি বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল। সে ভাবে কেউ আপত্তিও জানাননি। ফলে, প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপরই ফি বৃদ্ধি ঘিরে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। মেদিনীপুর কলেজের ছাত্র সংসদ রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দখলে। কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতিও তৃণমূল নেতা। এই অবস্থায় তৃণমূলের এক পক্ষের বক্তব্য ছিল, কলেজ সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফি বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না। অন্য পক্ষের যুক্তি ছিল, দল ছাত্রছাত্রীদের উপর অন্যায় বোঝা চাপানোর বিরুদ্ধে। টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দেন।
শুধু টিএমসিপি নয়, সরব হয় এসএফআই, ছাত্র পরিষদ, ডিএসও-সহ নানা ছাত্র সংগঠন। তারা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানায়। এসএফআই হুঁশিয়ারি দেয়, ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই আন্দোলন হবে। এই চাপানউতোরের মধ্যে তড়িঘড়ি জরুরি বৈঠক ডাকার সিদ্ধান্ত নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শনিবার কলেজের পরিচালন সমিতির জরুরি বৈঠক হয়। যেখানে শুধুমাত্র ভর্তি ফি নিয়েই আলোচনা হয়। সিদ্ধান্ত হয়েছিল এ বার ভর্তি ফি ন্যূনতম ৪৬০ টাকা বাড়বে। কলেজ কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, রাজ্য সরকারের নির্দেশ রয়েছে, টিউশন ফির ৫০ শতাংশ টাকা সরকারকে দিতে হবে। তাহলে কলেজে যাঁরা অতিথি অধ্যাপক রয়েছেন, তাঁদের মাইনে কী ভাবে দেওয়া হবে। বিদ্যুত্ বিল-সহ কলেজ দেখভালের অনান্য খরচ রয়েছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই ফি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কারণ, এ সব ক্ষেত্রে বছরে প্রায় ৪৯ লক্ষ টাকা খরচ হয়। কলেজের অধ্যক্ষ সুধীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “পরিচালন সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত ফি বাড়ানো হবে না। তবে এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে কলেজ চলবে, সেটাও একটা প্রশ্ন। ফের সমিতির বৈঠকে সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে।” |
|
|
|
|
|