অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া মাটির ঘরে বসে ছোট থেকে স্বপ্ন দেখেছে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। দু’বেলা পেট ভরে খাওয়া জোটেনি। কিন্তু স্বপ্নে ভাটা পড়েনি মন্তেশ্বরের মূলগ্রামের সৌম্যজিৎ দে-র। মাধ্যমিকে প্রায় ৮৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে অবশ্য স্বপ্ন সফল হওয়া নিয়ে শঙ্কায় সে। বাধা হতে পারে পরিবারের অভাবই, এমন
|
সৌম্যজিৎ দে।
—নিজস্ব চিত্র। |
দুশ্চিন্তা নিয়েই দিন কাটছে তার।
দু’কামরার বাড়িতে মা, বাবা, ঠাকুমা ও ভাইয়ের সঙ্গে থাকে সৌম্যজিৎ। বাবা বিভাসবাবু ডানকুনির একটি কারখানার অস্থায়ী কর্মী। সারা মাসে আয় হাজার চারেক টাকা। স্থানীয় বসন্তপুর শরৎশশী শিক্ষানিকেতনে মাধ্যমিক এ বার সৌম্যজিৎই প্রথম হয়েছে। তার ভাই সৌরভও ওই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। সৌম্যজিতের বাবা-মা জানান, পরীক্ষার আগে দু’বেলা ভাল ভাবে খাবারও জোটেনি তার। ইচ্ছে থাকলেও পাঠ্যবইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ার সুযোগ ছিল না। টেস্ট পরীক্ষায় সে পেয়েছিল ৫৬১। মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬১৪।
সৌম্যজিৎ জানায়, প্রয়োজনে সব সময় স্কুলের শিক্ষকদের সাহায্য পেয়েছে সে। বিভাসবাবুর কথায়, “লেখাপড়ার ভাল পরিবেশ ছেলেকে আমরা দিতে পারিনি। তবে বরাবরই ও খুব জেদি। টেস্ট পরীক্ষার পরে পড়াশোনায় আরও মনোযোগী হয়। যেটুকু করেছে তার পুরো কৃতিত্ব ওর একার।” বিভাসবাবুর দাবি, অভাবের সংসারে সৌম্যজিৎ ও সৌরভের পড়ার খরচ বহন করা তাঁর পক্ষে বেশ কষ্টসাধ্য। এই পরিস্থিতিতে বড় ছেলের বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছা কী ভাবে পূরণ করা সম্ভব, তা নিয়েই তিনি চিন্তায়। সৌম্যজিতের মা কাকলীদেবীর কথায়, “ছোট থেকেই ওর ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু আমরা ওকে কতটা সাহায্য করতে পারব, জানি না।” সৌম্যজিৎ বলে, “ফল বেরোবার পরে অনেকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু এর পরে কী ভাবে এগোব, জানি না।” |