সে যে চলে গেল বলে গেল না
শউইজ কনসেনট্রেশন ক্যাম্প।
সালটা ১৯৪১।
পোলিশ-জুইশ এডুকেটর জানুজ করজ্যাক ঠিক করেছিলেন ক্যাম্পের কিছু বাচ্চাকে দিয়ে একটা নাটক করবেন। নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর।’ তখনও এ দেশে ‘ডাকঘর’ মঞ্চস্থ হয়নি। করজ্যাক প্রথম বার সে নাটক মঞ্চস্থ করার কাজটি করেন। বাচ্চাদের দিয়ে এই নাটকটি মঞ্চস্থ করার কারণ একটাই, যাতে তারা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হতে পারে। কিছু দিন পরেই তাদের গ্যাস চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হবে যে।
যাঁরা ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘জীবনস্মৃতি’ দেখেছেন তাঁদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে। কেন এই রকম একটা ঘটনা দিয়ে ঋতুপর্ণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে তথ্যচিত্রটি শেষ করবেন?
কিছু মন্তাজ শট। আর একটা ভয়েসওভার।
তার পরের দৃশ্যটা সম্পূর্ণ আলাদা। চার জন অভিনেতা— যাঁরা তথ্যচিত্রে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চরিত্রে অভিনয় করছেন। তাঁরা সারি দিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ান। সঙ্গে পরিচালক। পেছনে কৌশিকী চক্রবর্তীর গলায় ‘মধুর তোমার শেষ যে না পাই’।
ইচ্ছে করলেই তো পারতেন পুরনো কিছু সিপিয়া ছবি ব্যবহার করতে। বাছতে পারতেন সেই সব ছবি যেখানে দেখা গিয়েছিল কী ভাবে ২২শে শ্রাবণে মানুষের ঢল নেমেছিল রবীন্দ্রনাথকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে।
এই রকম তো বেশ কিছু ছবি সত্যজিৎ রায়ও ব্যবহার করেছিলেন। তাঁর তৈরি রবীন্দ্রনাথের তথ্যচিত্রে। সে ছবি শুরু হয়েছিল সত্যজিৎ রায়ের ভয়েস ওভার দিয়ে: “অন সেভেন্থ অগস্ট নাইনটিন ফরটিনাইন আ ম্যান ডায়েড। হিজ মর্টাল রিমেনস ওয়্যার পুট টু ফ্লেম বাট দ্য ইনডমিটেবল স্পিরিট অ্যান্ড দ্য স্ট্রং হেরিটেজ দ্যাট হি লেফট বিহাইন্ড হিম কুড নট বি এক্সটিনগুইশড বাই এনি ফায়ার।”
মৃত্যু বারবার ফিরে ফিরে এসেছে ঋতুপর্ণ ঘোষের কাজে। ‘উনিশে এপ্রিল’ থেকে ‘আবহমান’— ‘দোসর’ থেকে ‘সব চরিত্র কাল্পনিক’।
এমনকী ৩০ মে সকালে যখন তাঁর দেহ শায়িত ছিল ১৮এ ইন্দ্রাণী পার্কের বাড়ির সামনে, তখন অনেকের মুখে একটাই কথা: “দেখে মনে হচ্ছে শ্যুটিংয়ের আগে কাউকে অভিনয় করে দেখানোর জন্য বুঝি ও ভাবে শুয়ে আছে। এই বুঝি উঠে বলবে, ‘নে এবার কর!’”
ছবি: নীল বি মিত্র
ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি পড়েছে সে দিন। মানুষের ঢল নেমেছিল সে দিন, ‘তাসের ঘর’য়ের সামনে। ভিড়ের মধ্যে এক জন বলে ওঠেন, “আচ্ছা ঋতুদার ছবিতে এত বার মৃত্যু এসেছে। কিন্তু কোনও দিন তো এই রকম ভাবে মৃত্যুকে দেখাননি। মৃত্যু এসেছে। কিন্তু এত লোকের ভিড়, প্রসেশন এ সব তো নেই। গোদা গোদা সেন্টিমেন্টালিজম কোনও দিন ছিল না তাঁর মৃত্যুর দৃশ্যে। সব সময় কেমন যেন একটা সাবলাইম ভাব।”
তাঁর মৃত্যুর দু’দিন পরে যখন এ বিষয় নিয়ে কথা হচ্ছিল, ঋতুপর্ণ অভিনীত ‘মেমরিজ ইন মার্চ’ ছবির পরিচালক সঞ্জয় নাগ বলছিলেন, বাঙালি দর্শকের মননে সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’, ‘অপুর সংসার’ ‘অপরাজিত’ ছবিতে মত্যু দৃশ্য খুব স্পষ্ট। “অনেক ক্ষেত্রেই ঋতুপর্ণের ছবির কিছু মৃত্যুদৃশ্য সেই রকমের একটা মাত্রা ছুঁতে চেষ্টা করেছে। ‘আবহমান’ থেকে ‘জীবনস্মৃতি’—মৃত্যু এসেছে নানা রূপে। প্রত্যেকটাই তুলির আলাদা আলাদা রঙে আঁকা,” বলছেন তিনি। ‘জীবনস্মৃতি’তে তিনি রবীন্দ্রনাথের ভূমিকায় পাঠ করেছেন।
সম্পাদক অর্ঘ্যকমল মিত্র, ঋতুপর্ণর সব ছবির সঙ্গে জড়িত। বহু বার মৃত্যুর দৃশ্যে কাঁচি চালিয়েছেন। সযত্ন চেষ্টা করেছেন যাতে অতিনাটকীয়তা বাদ দেওয়া যায়। “ঋতুুর কাছে মৃত্যু মানে মর্বিডিটি ছিল না। মৃত্যুর সিনগুলোয় একটা অন্য রকমের আমেজ থাকত। যাকে বলব ‘গ্রেট সেন্স অব পয়েগনেন্সি’। ‘জীবনস্মৃতি’র কথাই ভাবুন। রবীন্দ্রননাথের মৃত্যুর দৃশ্যে শুধু চার জন অভিনেতার শট। তার সঙ্গে ঋতু নিজে। আন্তর্জাতিক সিনেমাতেও কোনও মৃত্যুকে এ ভাবে দেখানো হয়নি বোধ হয়,” বলছিলেন অর্ঘ্যকমল।
তার পর বলেন কী ভাবে মৃত্যুকে পরিচালক অদ্ভুত ভাবে ব্যবহার করেছিলেন জালিয়ানওয়ালাবাগের দৃশ্যে। “তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছে যে ঋতু আর আমি বসে বসে ‘গাঁধী’ ছবিতে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডটি দেখছি। তার পরের দৃশ্যে দেখানো হচ্ছে সেই চিঠি, যা লিখে রবীন্দ্রনাথ ফিরিয়ে দেন তাঁর নাইট উপাধি। নাইট উপাধির প্রসঙ্গটা এই ভাবে দেখানোটাই স্বাতন্ত্র্য,” বক্তব্য অর্ঘ্যকমলের।
শোক-তাপ-বেদনার আর্তিকে বড় পরদায় ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে ঝুঁকি থাকে। চোখ না ভিজলেও মনকে ভিজিয়ে যেতে হবে, কান্না এসে কুণ্ডলী পাকিয়ে আটকে থাকবে গলার কাছে। রবীন্দ্রনাথের জীবনে বারবার মৃত্যু এসেছে। চোদ্দো বছর বয়সে হারিয়েছিলেন মা সারদা দেবীকে। “ছোট্ট রবীন্দ্রনাথ এসে বসে আছে মায়ের সামনে। তার পর ক্যামেরার ফোকাস চলে যায় দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দিকে। শান্ত আধ্যাত্মিক ভাব। ওই দৃশ্যই আমায় ভীষণ নাড়া দিয়েছিল।” বলছেন রবীন্দ্রনাথের চরিত্রের অভিনেতা সমদর্শী দত্ত। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে শ্যুটিং। সাউন্ড ডিজাইনে পায়রা উড়ে যাওয়ার শব্দ, কিছু মন্ত্র, আর হালকা ডুকরে কেঁদে ওঠার সুর। দূর থেকে ভেসে আসে ‘নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে’—যে গানটি রবীন্দ্রনাথ নিজে গেয়ে শুনিয়েছিলেন মহর্ষিকে। পুরস্কার হিসেবে বাবার কাছ থেকে পেয়েছিলেন পাঁচশো টাকাও।
সুরকার প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মা মারা যাওয়ার ঠিক পরের দিন ফোনটা এসেছিল ঋতুপর্ণর কাছ থেকে। “দিনটা ছিল ১৭ জুলাই, ২০১১। ঋতু সকালে ফোন করে বলল, যদি ওঁর তথ্যচিত্রে আমি মিউজিকটা করি। আজ, মনে করে অদ্ভুত লাগছে” বললেন প্রবুদ্ধ।
ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত তথ্যচিত্র ‘জীবনস্মৃতি’
নন্দনে বরফের ওপর ঋতুপর্ণর দেহটা শোয়ানো দেখে ধাক্কা লেগেছিল তাঁর। মনে পড়ে গিয়েছিল বহু সন্ধ্যার কথা। যখন ইন্দ্রাণী পার্কের বাড়িতে বসে দু’জনে মিলে ঠিক করেছিলেন কী ধরনের মিউজিক করা উচিত ‘জীবনস্মৃতি’র দৃশ্যগুলোতে। বলছেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাজ আর দর্শন ভাল ভাবে বুঝত বলেই ঋতু একটা অন্য ধরনের এসেথটিক ব্যবহার করেছিল মৃত্যুর দৃশ্যগুলোতে। ছবির মধ্যে মৃত্যুকে যেন একটা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। রবীন্দ্রনাথের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার মাঝে কমা আর সেমিকোলন হিসেবে।”
এ ছবিতে সন্তানবিয়োগের দৃশ্যগুলো বড় পরিমিতিবোধ নিয়ে সাজানো। অনেকেই বলে থাকেন রবীন্দ্রনাথ সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছিলেন যে দিন তাঁর কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্রনাথ মারা যায়। দিনটা ছিল তাঁর স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। ছবিতে ঋতুপর্ণ শুধু মাত্র একটা সিলুয়েট ব্যবহার করেছেন। লম্বা একটা ছায়া। বড়ই নিঃসঙ্গ। এক ধূসর দিগন্তে হাত নাড়িয়ে ছেলেকে শেষ বিদায় জানাচ্ছেন। “পরপর অনেক ক’টা মৃত্যুর ঘটনা দেখিয়েছে কিছু মন্তাজ শট ব্যবহার ক’রে। ব্যকগ্রাউন্ডে শব্দ বলতে জ্বলে ওঠা আগুনের শিখা, উপনিষদের কিছু শ্লোকোচ্চারণ। সেই সঙ্গে ‘অন্তর মম বিকশিত কর’র মূর্চ্ছণা,” বলছেন সুরকার।
অনেকটা মাস্টারস্ট্রোকের মতো করেই দেখানো হয়েছে কন্যা মাধুরীলতার মৃত্যু। শুধু একটা হাত এসে তার কপাল ছুঁয়ে যায়। কাট্। পরের দৃশ্য রবীন্দ্রনাথ একা পায়চারি করছেন। দূরে মোমবাতির আলো। “ঋতুর সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি ও কখনও মৃত্যুকে বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখত না। রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়েছিলেন ১৯১৩ সালে। মাধুরীলতা মারা যায় ১৯১৮তে। কিন্তু ঋতু ছবিতে এই দুটো ঘটনাকে দেখিয়েছে একসঙ্গে। পাঁচ বছরের সময়ের ব্যবধানটা একটা ঢেউয়ে মিলিয়ে দিয়েছে যেখানে চূড়াম্ত সাফল্যের পরেই আসে গভীর শোক,” বলছেন প্রবুদ্ধ।
অনেকের কাছে এই তথ্যচিত্রের সব চেয়ে মর্মস্পর্শী দৃশ্য হল কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু। মাটিতে কাদম্বরী দেবীর মৃতদেহ। ঋতুপর্ণ চিত্রগ্রাহক সৌমিক হালদারকে বলেছিলেন খাটের তলা থেকে একটা শট নিতে। ছোট্ট ঘরে শ্যুটিং। খাটের পিছনে ক্যামেরাটা ট্রলিতে বসার মতো জায়গা রয়েছে মাত্র। ঘরে আলোর কোনও সরাসরি উৎস না দেখিয়ে একটা আলো-আঁধারি পরিবেশ তৈরি করা। “এডিটিংয়ের সময় আমাকে বলেছিল যেন কাদম্বরীর পুরো দেহে বেশিক্ষণ ফোকাস না করি। কাদম্বরীর সুইসাইড নিয়ে বিতর্ক ছিল। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে ঘিরেও ছিল নানা গুজব। বিতর্কে না গিয়ে ঋতু পুরোটাই দেখিয়েছিল একটা ‘হাস-হাস’ টোনে,” বলছিলেন অর্ঘ্যকমল।
পোয়েটিক মন্তাজের মধ্য দিয়ে দেখিয়েছেন রবীন্দ্রনাথের বিয়ে, কাদম্বরী দেবীর আত্মহত্যা আর কবি সত্তার উপর তাঁর প্রভাব। ব্যাকগ্রাউন্ডে কিছু ‘মাল্টিলেয়াডর্’ সানাই আর জ্বলে ওঠা চিতায় কাঠকুটো পোড়ার চিড়চিড়ে শব্দ।
প্রথমে শ্যুটিং করার পরে ঠিক হয়েছিল এই দৃশ্যে এক পুরুষকণ্ঠ ব্যবহার করা হবে। একাকী সমদর্শী বিহ্বল হয়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন। আর নেপথ্যে পুরুষকণ্ঠ গেয়ে উঠেছে, ‘সে যে চলে গেল বলে গেল না’। রেকর্ডিংও হয়েছিল সে ভাবে। কিন্তু তার পরে ঠিক হল যে পুরুষকণ্ঠে গানটা গাওয়ালে মনে হবে যে রবীন্দ্রনাথ দুঃখে ভেঙে পড়ে গানটা গাইছেন। সেটা অতিরঞ্জিত লাগতেও পারে। হয়তো রাবীন্দ্রিক চেতনার সঙ্গে মিলত না। তাই ডাক পড়েছিল শ্রাবণী সেনের। “এই দৃশ্যটা দেখলে মানুষের চোখে জল আসবেই,” বলছিলেন সমদর্শী।
‘আবহমান’ ছবির একটি দৃশ্য
এটাই ঋতুপর্ণ ঘরানা। “কোনও কিছুতে মোটা দাগ নেই। বর্ণনার সময়ই আমাদের বুঝিয়ে দিতেন কী ভাবে আবেগ দিয়ে একটা দৃশ্যকে ফুটিয়ে তুলতে হবে। কখনও সরাসরি ভাবে মৃত্যুকে দেখাতে চাইতেন না। একটা আবছায়া, আউট অব ফোকাস ভাব। মনে হত যেন কবিতা। ‘আরেকটি প্রেমের গল্প’ ছবিতে উনি ছিলেন ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর। চপল ভাদুড়ীর মায়ের মৃত্যুদৃশ্য। ফ্রেমে খালি আলতা লাগানো দু’টো পা। আর কেউ এসে সেই পায়ের ছাপ নিয়ে যাচ্ছে। দূরে ভেসে উঠছে, ‘পরজনমে হয়ো রাধা’,” বলছিলেন সৌমিক।
নানা স্মৃতির ভিড়ে তাঁর মনে পড়ে যায় “সব চরিত্র কাল্পনিক’য়ের মৃত্যু দৃশ্য। “নবমীর দিন। বিপাশা বসু খবর পেলেন যে স্বামী প্রসেনজিতের স্ট্রোক হয়েছে। বৈবাহিক সম্পর্কে একটা চিড় ধরেছিল ওদের। খবরটা পাওয়ার পরে বিপাশা ফিরে আসেন কলকাতায়। ঋতুদা বলেছিলেন ট্রেনে একটা ‘ফাঁকা জানালা’কে মেটাফোর হিসেবে শু্যট করতে। তার পরের শট বিপাশা বাড়িতে ঢুকছে। সবাই সাদা পোশাক পরে...” বলছিলেন সৌমিক।
শেষ যে বার ‘আবহমান’ দেখেন, তখন ছবির মৃত্যুর দৃশ্যে নিজেকে দেখে ভয়ই পেয়ে যান দীপঙ্কর দে। “মৃত্যুকে নিয়ে ঋতুর একটা রোম্যান্টিসিজম ছিল। গোটা ছবিতে আমার চরিত্রটি আঙুল দিয়ে একটা তাল রাখত। আমাকে বলেছিল মৃত্যুর দৃশ্যেও আমি যেন ওই আঙুলগুলো ও ভাবেই নাড়াই। বোঝাতে চেয়েছিল যে আমার চরিত্রটির যেন জীবনের লয়টা রাখতে রাখতেই মৃত্যুটা হল,” বলছিলেন দীপঙ্কর। বড় ভয় পেয়েছিলেন ওই দৃশ্যটি দেখে। “মনে হচ্ছিল এ ভাবেই কি আমাকে একদিন চলে যেতে হবে নাকি? ‘চিত্রাঙ্গদা’তেও ঋতুপর্ণের চরিত্রের একটা মৃত্যুভয় ছিল। তাই তো ছবিতে অপারেশনটা শেষ পর্যন্ত করাল না। জানি না, নিজের জীবনেও কি এ রকম একটা সংশয়ে ভুগত ঋতু?”
আজ এ সব কথার উত্তর দেওয়ার আর কেউ রইল না।
মারা যাওয়ার পরের দিন সব পত্র-পত্রিকার কাছে কাচের বাক্সে শায়িত ঋতুপর্ণর ছবি। কাচের গায়ে বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটা। কাচ-বাক্সের ‘অন্তরমহল’য়ের কিন্তু নেই কোনও তীব্র ‘দহন’জ্বালা। ঠোঁটের কোণায় প্রশান্তির হাসি। যেন কাজ শেষ করে একটু বিশ্রাম নিচ্ছেন। ঠিক তাঁর ছবির মতো আলতো ছোঁয়ায় মৃত্যুকে স্পর্শ করেছেন যেন। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন থেকে ছুটি।
‘প্যাক আপ’ বলে রওনা হলেন আবহমানের পথে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.