বর্ধমানের সঙ্গে ঝামেলা অন্যত্রও
কদা ‘লালদুর্গ’ বর্ধমানে ‘মর্যাদার লড়াই’ লড়তে গিয়ে একের পর এক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে সিপিএম। তুলছে একতরফা আক্রমণের অভিযোগও। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা করা নিয়ে হিংসা অন্য জেলাতেও থেমে নেই। রাজ্যে দ্বিতীয় দফায় যে সব জেলায় (বীরভূম, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ) ভোট হচ্ছে, তাদের মনোনয়ন তোলা শুরু হল শনিবারই। এই চার জেলায় বড় কোনও গোলমাল হয়নি। পুলিশ-প্রশাসন সাহায্য না করলে তারা ব্লক অফিসের কাছে জমায়েত করে মনোনয়ন জমা দেবে বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিল বর্ধমান জেলা সিপিএম। সেখানে তো বটেই, দুই মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাতেও গোলমাল অব্যাহত।
এ দিন দুপুরে বর্ধমানের রানিগঞ্জে তৃণমূল ও সিপিএমের সংঘর্ষে সাত জন জখম হন। তৃণমূলের অভিযোগ, মনোনয়ন জমা দিতে আসার সময়ে ব্লক অফিসের কাছেই সিপিএমের লোকজন তাদের প্রার্থীদের উপরে চড়াও হয়। আহত এক তৃণমূল কর্মীকে দুর্গাপুরের নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। সিপিএম অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধেই তিন মহিলা-সহ কয়েক জন কর্মীকে মারধরের অভিযোগ এনেছে। তাদেরও এক জন রানিগঞ্জে নার্সিংহোমে ভর্তি।
ভাঙচুরের পরে সিপিএম কার্যালয়। শনিবার রানিগঞ্জে।
ব্লক অফিসে ঢুকেও দুই সিপিএম প্রার্থীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ব্লক অফিসের সামনে মার খান জেমারি পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রধান নিমাই ঘোষ। সিপিএমের পিওর সিহারশোল শাখা অফিসে ভাঙচুর হয়।
বর্ধমানেরই পাণ্ডবেশ্বরে ব্লক অফিসের সামনে বোমাবাজি করে সিপিএমের লোকজনকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বারাবনিতেও মনোনয়ন জমা করতে গেলে সিপিএম প্রার্থীদের তাড়া করা হয়। পরে তাঁরা আসানসোল মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফরিদপুরের লস্করবাঁধে তৃণমূল কর্মীর কানে কোপ মারা ও অন্যদের মারধরের অভিযোগে সিপিএমের চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সংঘর্ষের অভিযোগে ধরা হয়েছে তিন তৃণমূল কর্মীকেও। দু’পক্ষের আহত সাত জন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। শুক্রবার রাতে মন্তেশ্বরের মামুদপুরেও সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষে ৫ জন জখম হন। পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। খণ্ডঘোষে আবার মনোনয়ন জমা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। দু’জন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে সংঘর্ষে জখম তৃণমূলের জিতেন্দ্রনাথ দত্ত।
বিকেলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপেও কামারহাট মোড়ের কাছে তৃণমূল-সিপিএম সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৬ জন আহত হয়েছেন। সিপিএম প্রার্থীরা মনোনয়ন দিয়ে ফেরার সময়ে তৃণমূলের লোকজন গাড়ি আটকায় বলে অভিযোগ। তিনটি গাড়িও ভাঙচুর হয়েছে। বাসন্তীর চড়াবিদ্যা এলাকাতেও আরএসপি প্রার্থীদের বাড়িতে ঢুকে হুমকি ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সন্ধ্যায় মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দিয়ে ফেরার সময়ে ক্যানিংয়ের জীবনতলায় এক কংগ্রেস নেতাকে মারতে-মারতে তুলে নিয়ে গিয়ে তৃণমূলের পার্টি অফিসে কিছুক্ষণ আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
শুক্রবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ১ ব্লকের মহম্মদপুরে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পশ্চিম মেদিনীপুরে দাঁতন ২ ব্লকের তুরকা পঞ্চায়েতেও এক প্রার্থীর প্রস্তাবককে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শনিবার খড়্গপুর ২ ব্লকে কংগ্রেস এবং সিপিআই কর্মীরা মনোনয়ন জমা দিতে গেলে তৃণমূলের লোকজন তাঁদের মারে বলে অভিযোগ। সিপিআইয়ের আট ও কংগ্রেসের চার জন জখম হয়েছেন। কংগ্রেস থানায় বিক্ষোভ দেখানোর পরে পুলিশের সাহায্যে তাদের প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেন। কিন্তু জোর করে মনোনয়ন কেন্দ্রে ঢোকার দায়ে সেখান থেকেই ২১ জন কংগ্রেস সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। পিংলা, ঘাটাল, চন্দ্রকোনাতেও তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছে। কেশপুর ও শ্যামচকে সিপিআই কর্মীদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বাসন্তীর চড়াবিদ্যা ছাড়া সব ক্ষেত্রেই তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

—নিজস্ব চিত্র



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.