‘ধনুকতানি সম্রাট এবং সঙ্গে তাঁর মহিষী’ ভারতীয় সভ্যতার স্বণর্যুগ বলে কথিত গুপ্তযুগে এই বিখ্যাত মুদ্রাটি আগেই পাওয়া গিয়েছিল। পাওয়া গিয়েছিল লক্ষ্মীর প্রতিকৃতি উৎকীর্ণ গুপ্তযুগের আর একটি বিখ্যাত মুদ্রাও। এ বার পাওয়া গেল অশ্বারোহী এক সম্রাটের মূর্তি। এই ধরনের মুদ্রাও গুপ্তযুগে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের আমল থেকে বহুল প্রচলিত ছিল।
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদের আহিরণের ফিডার ক্যানালের কাছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে যন্ত্রের সাহায্যে মাটি কেটে এনে ফেলা হয়েছিল। সেই মাটির স্তূপের মধ্যেই মিলেছে প্রথম ও দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত আমলের স্বর্ণমুদ্রা। মুদ্রা মিলছে, খবর রটতেই আশপাশের গ্রামের মানুষজন প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এলাকায়। অনেকেই কুড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন মুদ্রা। শুক্রবার রাতভর সেই সব গ্রামবাসীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১১টি মুদ্রা উদ্ধার করতে পেরেছে পুলিশ।
শনিবার রাজ্য পুরাতত্ত্ব দফতরের উপ-অধিকর্তা অমল রায় সরেজমিনে ঘটনাস্থলে তদন্ত করেন। তবে শনিবার নতুন করে আর কোনও স্বর্ণমুদ্রা উদ্ধার করা যায়নি। সারা দিন ধরে মধুডিহি, বসন্তপুর, সরলা, আহিরণ-সহ আশপাশের গ্রামে রীতিমতো ঢেঁরা পিটিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়, যাঁরা স্বর্ণমুদ্রা পেয়েছেন ফিরিয়ে দিলে পুলিশ তাঁদের পুরস্কৃত করবে। কিন্তু যাঁরা স্বর্ণমুদ্রা পেয়েও জমা দিচ্ছেন না? পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেই কী কাজ হবে?
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “এই স্বণর্মুদ্রার কথা এখন সর্বত্র জানাজানি হয়ে গিয়েছে। আমরা গ্রামগুলিতে খবর নিচ্ছি। সীমান্তেও নজর রাখা হয়েছে।”
উদ্ধার হওয়া মুদ্রাগুলির ওজন প্রায় ৯৪ গ্রাম। আকারও ভিন্ন। আহিরণের ওই মাটিতে আরও স্বর্ণমুদ্রা রয়েছে বলে অনুমান অমলবাবুর। এ দিন সুতি থানায় দীর্ঘক্ষণ ধরে স্বর্ণমুদ্রা পরীক্ষা করেন তিনি। তিনি বলেন, “কোন এলাকা থেকে ওই মাটি কেটে আনা হয়েছে তা জানা খুব জরুরি। এ ব্যাপারে পুলিশকে একটি রিপোর্ট তৈরি করতে বলা হয়েছে। তা হাতে পেলে মুর্শিদাবাদে গুপ্ত সাম্রাজ্যের বিস্তারের প্রামাণ্য তথ্য উদ্ধারের ব্যবস্থা নেবে পুরাতত্ত্ব দফতর।” |