সম্পাদকীয় ২...
গৃহযুদ্ধ অব্যাহত
সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা বহু কালই অস্তমিত। জমানা বদলে আগ্রহী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলি যে সে-দেশের প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ক্ষমতাচ্যুতি ও রাজনৈতিক নির্বাসনের লক্ষ্যেই বিরোধী পক্ষ ‘জাতীয় জোট’-এর যোদ্ধাদের সমর্থনে দাঁড়াইতেছে, তাহাতে সংশয় নাই। মুশকিল হইয়াছে এই জোটের অভ্যন্তরীণ সংহতির অভাব এবং ইহার শরিকদের মধ্যে আল-কায়দার মতো জেহাদি গোষ্ঠীর উপস্থিতিতে। পাছে পশ্চিমের সরবরাহ করা সমরাস্ত্র ও রসদ জেহাদি প্রতিরোধের হাতে পড়িয়া যায়, সেই ভয়ে জাতীয় জোটকে অস্ত্রসজ্জিত করা হইতে এত কাল বিরত থাকিয়াছে পশ্চিমী গণতন্ত্র। আসাদ সরকারের প্রতি রাশিয়ার সমর্থনও এ ব্যাপারে বাধা সৃষ্টি করিয়াছে। কিন্তু আসাদ-বিরোধী জোটের পরাজয়শঙ্কা জাতীয় জোটকে অস্ত্রসজ্জিত করার সিদ্ধান্তে মতৈক্য আনিয়া দিতে পারে।
অন্তত এই মর্মে জোটের শরিকরা মুখর দাবি তুলিয়াছে। রাশিয়া অবশ্য এ ক্ষেত্রেও হাঁচিয়া-কাশিয়া কিছু বলিতেছে না। উপরন্তু রাশিয়ার পাঠানো বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রসম্ভারের প্রথম কিস্তি আসাদের হাতে আসিয়া পৌঁছাইবার খবর আছে। এই সংবাদ সত্য হইলে ইজরায়ল অতর্কিত বিমান-হানার হুমকিও দিতেছে। এই ধরনের যে কোনও হঠকারিতা কিন্তু সিরিয়ার গৃহযুদ্ধকে পশ্চিম এশিয়ার অন্যত্রও সম্প্রসারিত করিয়া দিতে পারে। লেবাননের শিয়া মিলিশিয়া হেজবুল্লা আসাদের পক্ষে দাঁড়াইয়াছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদও আসাদের প্রতি তাঁহার পক্ষপাত গোপন করেন নাই। যুদ্ধের মঞ্চটিকে তাই অনাবশ্যক প্রসারিত হইতে না দিয়া সিরিয়ার সীমান্তের মধ্যেই আটকাইয়া রাখা দরকার।
জেনিভার সম্মেলনে জাতীয় জোটের শরিকরা পশ্চিমী গণতন্ত্রের কাছ হইতে যে-সব অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র প্রার্থনা করিবে, সেগুলি যে জেহাদিদের হাতে গিয়া পড়িবে না, ইহা আগাম নিশ্চিত করার দায় কে লইবে? জেহাদিদের মারফত জমানা-বদল করাইলে পরিবর্তিত সেই জমানাও রাজনৈতিক ইসলামের হরিৎ নিশান উড়াইতে ব্যগ্র হইবে। আরব বসন্তের উৎসারে এ জিনিস দেখা গিয়াছে। লিবিয়া এবং সর্বশেষ মিশরে যে-ইসলামপন্থীরা গণতন্ত্রের অগ্রদূত রূপে আত্মপ্রকাশ করিলেন, তাঁহারা তো জেহাদি মতাদর্শ ও বীক্ষায় রাষ্ট্রনীতির পরিমার্জনে হাত দিয়াছেন। সিরিয়া যে একই দিশায় অগ্রসর হইবে না, তাহার নিশ্চয়তা কে দিবে? রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ সম্ভবত এ জন্যই বিরোধী জাতীয় জোটের শরিক ‘আল-নুসরা ফ্রন্ট’কে আল-কায়দারই রকমফের রূপে শনাক্ত করিয়া তাহাকে কালো-তালিকাভুক্ত করিতে চলিয়াছে, পশ্চিমী সমরাস্ত্র যাহাতে ওই সংস্থার হাতে না পড়ে। আবার ব্রিটেন আসাদ-বিরোধীদের উপর ব্যবহৃত রাসায়নিক মারণাস্ত্রের প্রমাণ পরিষদে পেশ করিতে উদ্যত। ইরাকে কিন্তু সাদ্দাম হুসেনের মারণাস্ত্রের মজুত ভাণ্ডারের এমনই সব ‘প্রমাণ’-এর ভিত্তিতে জর্জ বুশ বাগদাদে আগ্রাসন চালাইয়াছিলেন!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.