|
|
|
|
গ্রামবাসীদের দাবিতে নির্দেশ প্রত্যাহার, বদলি রদ চিকিৎসকের
নিজস্ব সংবাদদাতা • হাবরা |
আবেগের কাছে হার মানল সরকারি নির্দেশ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে বুধবার বদলির নির্দেশ এসেছিল প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক চিকিৎসকের। এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয় ওই চিকিৎসকের বদলির খবর রাতেই পৌঁছে যায় সাধারণ মানুষের কাছে। বৃহস্পতিবার সকালেই কয়েকশো গ্রামবাসী পৌঁছে যান স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে শুরু হয় অবস্থান বিক্ষোভ। ওই চিকিৎসক বৃহস্পতিবার হাসপাতালে গেলে তাঁর হাত ধরে অনুরোধ করতেও দেখা যায় অনেককে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের মাধ্যমে খবর যায় জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। নির্দেশ প্রত্যাহার করে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকের নাম প্রদীপ দাস। বৃহস্পতিবার তাঁর স্বরূপনগরের শাঁড়াপোল গ্রামীণ হাসপাতালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। বছর আটচল্লিশের প্রদীপবাবুর বাড়ি গাইঘাটায়। ১৯৯২ সালে তিনি মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগ দেন। পরে ‘ডেপুটেশনে’ তিনি অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলে গেলেও ২০০৮ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ফিরে আসেন। তারপর বৃহস্পতিবার থেকে পুর্নবহাল হলেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয়কুমার আচার্য বলেন, “গ্রামবাসীরা যখন চাইছেন তখন চিকিৎসক ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই থাকবেন। ওঁনাকে নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে যে এত আবেগ রয়েছে সেটা জানতাম না।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শিমুলপুর, সলকা, সলুয়া, বাউগাছি, নাঙলা-সহ প্রায় ত্রিশটি গ্রামের মানুষ মছলন্দপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপর নির্ভরশীল। ‘সবেধন নীলমনি’ ওই হাসপাতালের উন্নয়নের জন্য তৈরি হয়েছে হাসপাতাল বাঁচাও কমিটি। ওই কমিটির সম্পাদক নুরুল আমিন মণ্ডল বলেন, “প্রদীপবাবু আমাদের কাছে ভগবান। ওনার কাছে দিন রাত বলে কিছু নেই। সমস্যায় পড়লে সব সময় পাওয়া যায়। উনি যদি চলে যান তাহলে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে।” স্থানীয় বাসিন্দা অরবিন্দু মজুমদার বলেন, “রোগী চিকিৎসক সর্ম্পক যে কতটা আন্তরিক হতে পারে সেটা উনিই দেখিয়েছেন।” প্রদীপবাবুকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক করার দাবিতে সই সংগ্রহও শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীদের ভালবাসায় আপ্লুত চিকিৎসক। তিনি বলেন, “আমি কেবল আমার দায়িত্ব পালন করেছি মাত্র। কাজের স্বীকৃতি পেলে ভাল লাগে। আমার প্রতি গ্রামবাসীদের ভালবাসাই আমার কাজের স্বীকৃতি।” |
|
|
|
|
|