জঙ্গিপুরে জলের দামে বিকোচ্ছে লিচু। ফরাক্কাতেও লিচুর দাম পাচ্ছেন না ফলচাষিরা। আম অবশ্য এখনও সে ভাবে বাজারে নামেনি। মুর্শিদাবাদে এ বারে আমের যা ফলন হয়েছে তাতে জেলায় ১৫ টাকা কিলোতে নেমে আসবে হিমসাগর। এক পশলা বৃষ্টি হওয়ায় আমের সাইজও ভাল হবে। মুর্শিদাবাদ জেলায় আম হয় ভাগীরথীর পূর্ব পারে বাগড়ি এলাকার প্রায় সর্বত্র। কিন্তু লিচুর সিংহভাগ ফলন হয় জঙ্গিপুর ও ফরাক্কায়।
এ বারেও জেলায় আমের চাষ হয়েছে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতেয় মোটামুটি আমের ফলনও ১ লক্ষ হাজার টন ছাড়াবে। লিচু অবশ্য এ বারে অনেকটাই কমেছে। ২.৮ হাজার হেক্টরে যেখানে লিচু হওয়ার কথা অন্তত ২৮ হাজার টন, এবারে তা নেমে আসবে প্রায় ২২ হাজার টনে।
জেলায় আম পাকে মূলত জ্যৈষ্ঠ মাসের মাঝামাঝি থেকে। প্রায় দেড় মাস ধরে সেই আম বাজার পায়। কিন্তু লিচুর ফলনের সময়টা বড্ড কম হওয়ায় আগামী দিন দশেকের মধ্যে গাছ থেকে লিচু তুলে না নিলে তাতে পচন ধরতে শুরু করবে। ইতিমধ্যেই বহু লিচুতেই পোকা লাগতে শুরু করেছে। ফলে সকলেই চাইছে গাছ থেকে লিচু নামাতে। |
সে জন্যই দু’দিন ধরেই জঙ্গিপুর হাজারে লিচুর আমদানি যথেষ্ট হারে বেড়ে গেছে। তুলনায় ক্রেতা কম। গত কয়েকদিন ধরে ভাল বৃষ্টি হয়েছে জঙ্গিপুরে। ফলে আমের ভাল হলেও লিচুর ক্ষতি হয়েছে। ফরাক্কায় অবশ্য সে ভাবে বৃষ্টি নেই। সেখানকার প্রায় সব বাগানেই গুটি লিচুর বদলে বোম্বাই লিচুর ফলন। সময়মতো জলের ছোঁয়া পেলে লিচুর সাইজও ভাল হয়। কিন্তু অর্জুনপুরের রহমান শেখের কথায়, “বৃষ্টি না হওয়ায় ফরাক্কার কোনও বাগানেই লিচুর ভাল সাইজ নেই। ফলে গত বছর যে লিচু ৯০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা হাজারে বিকিয়েছে, এ বারে তা ৩৫০ টাকার বেশি উঠছে না। সব বাগানেই লিচু পেকেছে। তা তুলে নিতে হবে ১০ দিনের মধ্যে। না হলে যা দাম পাচ্ছি, তাও পাব না। তাই লিচু জলের দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।”
উদ্যান পালন দফতরের জেলা আধিকারিক গৌতম রায় বলেন, “লিচু পাকার সময় খুব কম। বেশি দিন গাছে রাখা যাচ্ছে না। বাধ্য হয়েই চাষিরা লিচু ছেড়ে দিচ্ছেন দাম না পেয়েও। তবে জেলার কোনও বাগানেই আম এখনও সে ভাবে পাকেনি। আরও দিন দশেক পর জেলার আম বাজারে আসবে। এখন যে আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে, তা অন্য জেলা থেকে আসা। এ জেলায় আম বাজারে এলে তা ১৫ টাকায় নেমে আসবে। তা ছাড়া, বৃষ্টি হওয়ায় তাদের ক্ষতিও হতে পারে।” |