আমের জোগানে গুপ্তিপাড়া লোকমুখে ‘দ্বিতীয় মালদহ’
থায় বলে, ফলের রাজা আম। জামাইষষ্ঠীর মুখে সেই আমের ঢল নেমেছে হুগলির বাজারে বাজারে। আর সেই জোগানে এ বার বাজিমাত করছে গুপ্তিপাড়া। অনেকে গুপ্তিপাড়াকে এখন ‘দ্বিতীয় মালদহ’ বলেও ডাকতে শুরু করেছেন। জিনিসপত্রের আগুনে দামের মধ্যে ফলের রাজাই এ বার জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুর-শাশুড়ির মুখে হাসি ফোটাবে বলে মনে করছেন জেলার আম ব্যবসায়ীরা। কেননা, ফলন ভাল হওয়ায় এবং জোগান অনুকূল থাকায় আমের দামে বিশেষ হেরফের হচ্ছে না।
উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর, চন্দননগর থেকে বলাগড় হিমসাগর আমের দাম ঘোরাফেরা করছে কেজিপ্রতি ২০-৩০ টাকায়। হুগলির মূলত দু’টি ব্লকে প্রথাগত ভাবে আম চাষ হয় চুঁচুড়া-মগরা এবং বলাগড়। গুপ্তিপাড়া বলাগড় ব্লকেই। বিকেল হলেই এখানকার আমবাগানগুলিতে একের পর এক ট্রাক এসে দাঁড়াচ্ছে। সন্ধ্যা হলেই সেই সব ট্রাক বোঝাই হয়ে আম পাড়ি দিচ্ছে বিহার, ঝাড়খণ্ড, দুর্গাপুর বা আসানসোল অভিমুখে।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরেই সব্জি চাষে সে ভাবে দাম না পাওয়ায় গুপ্তিপাড়ার চাষিরা অর্থকরী ফসল হিসেবে আম চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। কলমের গাছ করে তাঁরা দু’এক বছরের মধ্যেই আম ফলাচ্ছেন। দামও পাচ্ছেন। এ বার বলাগড় ব্লকে প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লকের অতিরিক্ত কৃষি অধিকর্তা অনিরুদ্ধ দত্ত।
দেদার বিক্রি হচ্ছে আম। —নিজস্ব চিত্র।
গুপ্তিপাড়ার বাসিন্দা সুব্রত মণ্ডলের ১৫ বিঘার আমবাগান রয়েছে। তিনি বলেন, “এ বার প্রাথমিক ভাবে মধুপোকার আক্রমণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল চাষে। কিন্তু সব মিলিয়ে ফলন বেশ ভাল। দাম তাই কিছুটা শস্তা। চাষিরাও দাম পাচ্ছেন। এখান থেকে অন্য রাজ্যেও আম যাচ্ছে। অনেকে তো গুপ্তিপাড়াকে দ্বিতীয় মালদহ বলছেন।” পোলবার শ্যাম ভক্ত দিন কয়েক আগে চুঁচুড়া স্টেশনে আম বিক্রি করতে এসেছিলেন। তাঁর কথায়, “এত তাড়াতাড়ি অন্য বছর কিন্তু আমের দাম নামে না। এ বার উৎপাদন বেশি। তাই দাম সস্তা।”
সামগ্রিক ভাবে হুগলি জেলায় এ বার আম চাষের এলাকাও বেড়েছে। জেলা উদ্যানপালন দফতরের অধিকর্তা দীপক ঘোষ জানিয়েছেন, এ বার হুগলিতে মোট ৫ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। যা অন্য বছরের তুলনায় বেশি। তিনি বলেন, “বছর কয়েক আগে দফতরের পক্ষ থেকে আম চাষিদের চাষে ভতুর্কি দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন পঞ্চায়েত সমিতির তরফেও চাষিদের আম চাষে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।”
বস্তুত, কয়েক বছর ধরেই হাওড়া-বর্ধমান মেন শাখার বৈদ্যবাটি স্টেশনের পর থেকেই রেল লাইন লাগোয়া দু’ধারে জমিতে প্রচুর পরিমাণে আমের চাষ হচ্ছে। এক সময় মানকুণ্ডুও বিখ্যাত ছিল আম চাষের জন্য। কিন্তু এখন ওই এলাকায় আবাসন প্রকল্পের বাড়বাড়ন্তের জন্য চাষের এলাকা কিছুটা কমেছে। উল্টো দিকে, সিঙ্গুর লাগোয়া দিল্লি রোডের পার্শ্ববর্তী জমিতে বেড়েছে আমের চাষ। একই ভাবে চুঁচুড়া, পোলবা, দাদপুর, ব্যান্ডেল, আদি সপ্তগ্রাম হয়ে বলাগড়, গুপ্তিপাড়াতে আমের চাষ ক্রমেই বাড়ছে।
জেলা উদ্যানপালন দফতর সূত্রে খবর, এখানে প্রথাগত ভাবে খাসসরি আমের চাষ হয়। এই আম রীতিমতো মিষ্টি। রাজ্যের অন্য জেলায় এই আম ততটা মেলে না। অবশ্য গত এক দশক বা তার কিছুটা বেশি সময় ধরে আমের বাজারে হিমসাগরের কদরও বেশ বেড়েছে। বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে তাই হিমসাগর চাষের এলাকাও বাড়িয়েছেন চাষিরা।

জেলায় কোন আমের কী দাম
হিমসাগর: ২০-৩০ টাকা।
খাসসরি: ৩০-৩৫ টাকা।
মুম্বই: ২০-২৫ টাকা।
বৈশাখী: ২০-২৫ টাকা।
পেয়ারাফুলি: ৩০-৩৫ টাকা
(হিসেব কেজিতে)



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.