জাতীয় সড়ক মেরামতের দাবিতে রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি রুটে বেসরকারি পরিবহণ ধর্মঘটের জেরে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তি চরমে উঠল বুধবার। উত্তর দিনাজপুর বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং দিনাজপুর চেম্বার অফ কমার্স এ দিন ওই ধর্মঘটের ডাক দেয়। ওই রুটে জেলার প্রায় ৭০টি বেসরকারি বাস ছাড়াও প্রায় ২৫টি ট্রেকার চলাচল করেনি বলে পরিবহণ মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। বাস মালিকদের অভিযোগ, কয়েকবার অনুরোধ করার পরেও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁরা ধর্মঘটের ডাক দিতে বাধ্য হয়েছেন।
এ দিন ধর্মঘটের পরে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মালদহ ডিভিশনের প্রকল্প আধিকারিক মহম্মদ সইফুল্লা বলেন, “দ্রুত জাতীয় সড়ক মেরামতের ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হবে।” জেলাশাসক পাসাং নরবু ভুটিয়া বলেন, “জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে দ্রুত রাস্তা মেরামতের জন্য অনুরোধ করা হবে।” যদিও জেলা বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অশোক চন্দ বলেন, “দু’মাস ধরে ইটাহার থেকে ডালখোলা পর্যন্ত ৭৫ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে আছে। কয়েক দফায় জেলা প্রশাসন ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানিয়ে কোনও লাভ হয়নি। তাই রায়গঞ্জ-শিলিগুড়ি রুটে একদিনের পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। জুনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে জেলাজুড়ে অনির্দিষ্ট কালের পরিবহণ ধর্মঘট করা হবে।” |
ধর্মঘটের জেরে বাসে ভিড়। বুধবার রায়গঞ্জে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
এদিন দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদহ ও দার্জিলিং জেলার বাস মালিকরা ধর্মঘটে অংশ নেন। বেসরকারি বাস না পেয়ে যাত্রীদের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাসের উপরে ভরসা করতে হয়েছেন। বাঁদুড়ঝোলা হয়ে করণদিঘি, ডালখোলা, কিষানগঞ্জ, ইসলামপুর, চোপড়া, কানকি, শিলিগুড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতে বাধ্য হন। শিলিগুড়িমোড়, মোহনবাটি, সুপার মার্কেট সহ বিভিন্ন বাস স্ট্যান্ডেও দেখা গিয়েছে একই ছবি। আসন না পেয়ে বাসের ছাদে গন্তব্যে পৌঁছতে দেখা গিয়েছে। শিলিগুড়ি এবং ডালখোলা-রায়গঞ্জগামী সরকারি বাসগুলিতে ভিড় ছিল। অনেক যাত্রী পরিবহণ ধর্মঘটের দুর্ভোগের কথা আগাম আঁচ করে এদিন সকালে রায়গঞ্জ স্টেশন থেকে রাধিকাপুর-নিউ জলপাইগুড়ি ডিএমইউ প্যাসেঞ্জার ট্রেনে ডালখোলা, কানকি, ইসলামপুর ও শিলিগুড়িতে যান। চেম্বার অফ কমার্সের জেলা সম্পাদক জয়ন্ত সোম বলেন, “বেহাল রাস্তার জন্য পণ্যসামগ্রী পরিবহণ বন্ধ হয়েছে। ওই কারণে দিনের পর দিন লোকসান বাড়ছে। তাই নিরুপায় হয়ে পরিবহণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।”
|