লোকসান লাঘবে বিদ্যুৎ বণ্টনে শুরু সংস্কার-যাত্রা
দ্যিকালের সাবস্টেশন চাপ সামলাতে না-পেরে মাঝে-মধ্যে বসে যাচ্ছে। কোথাও লাইনের হাল এত খারাপ যে, হঠাৎ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। বহু জেলায় সরবরাহ পরিকাঠামো দুর্বল হয়ে পড়ায় গ্রাহকেরা ঠিক ভোল্টেজের বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না। নড়বড়ে বণ্টন ব্যবস্থার খেসারত দিয়ে লোকসানও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য জুড়ে বিদ্যুৎ-পরিকাঠামো উন্নয়নে বড় মাপের ছ’টি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। সব মিলিয়ে খরচ হবে অন্তত ১,০৪০ কোটি টাকা, যা পাওয়া যাবে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের অধীনস্থ গ্রামীণ বৈদ্যুতীকরণ নিগম (রুরাল ইলেকট্রিফিকেশন কর্পোরেশন, সংক্ষেপে আরইসি)-এর কাছ থেকে। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের খবর: নতুন প্রকল্পগুলো থাকছে কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় বিদ্যুৎ তহবিল (ন্যাশনাল ইলেকট্রিসিটি ফান্ড)-এর আওতায়। ফলে সে বাবদ আরইসি-র থেকে স্বল্প ঋণে ও সহজ শর্তে ঋণ মিলবে।
সম্প্রতি বণ্টন সংস্থার পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে প্রকল্পগুলো অনুমোদন পেয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, যবে ঋণ পাওয়া যাবে, তার তিন বছরের মধ্যে সব ক’টি প্রকল্পের কাজ সেরে ফেলা হবে। কাজের ধরন কেমন হবে?
রাজ্যের এক বিদ্যুৎ-কর্তা জানান, বহু জেলায় ৩৩ কেভি সাবস্টেশনের আমূল সংস্কারের পাশাপাশি নতুন ফিডার বসবে। সাবস্টেশনগুলোয় বিভিন্ন ধরনের সার্কিট ব্রেকারের খোলনলচে পাল্টে ফেলা হবে। আধুনিকীকরণ হবে হরেক যন্ত্রাংশের। বীরভূমের বোলপুর ও নদিয়ার নবদ্বীপের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতেই প্রায় ৬০ কোটি টাকা লাগবে বলে ওই কর্তার দাবি।
রাজ্যের বিদ্যুৎ-প্রশাসন ও গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ: বণ্টন-কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা ও নজরদারির অভাবেই বিদ্যুৎ-ব্যবসায় ক্ষতির (পরিভাষায় এগ্রিগেট টেকনিক্যাল অ্যান্ড কমার্শিয়াল লস, সংক্ষেপে এটিসি লস) বহর বাড়ছে। কেন্দ্রীয় হিসেব মোতাবেক, বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গেলে এই খাতে ১৭% পর্যন্ত আর্থিক ক্ষতি হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এই ‘প্রযুক্তিগত ও বাণিজ্যিক’ ক্ষতি গিয়ে দাঁড়িয়েছে গড়ে ৩০ শতাংশে! অর্থাৎ গড়ে একশো টাকার বিদ্যুৎ বেচে বণ্টন সংস্থার আয় হচ্ছে সাকুল্যে ৭০ টাকা। এমন অবস্থা কেন?
কর্তাদের অনেকের ব্যাখ্যা: অপরিকল্পিত ভাবে বিদ্যুতের লাইন টানলে অথবা সরবরাহ পরিকাঠামোর সংস্কার ঠিকঠাক ও সময়মতো না-হলে ক্ষতি বাড়তে থাকে, যা পুরো ব্যবস্থার মেরুদণ্ড নুইয়ে দেয়। অন্য দিকে ‘এটিসি লস’ স্রেফ ১% কমাতে পারলেই বণ্টন সংস্থার কমপক্ষে ৬৮ কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি।
তাই পরিকাঠামো ঢেলে সাজিয়ে ক্ষতির বহর লাঘবের দিকে নজর দিয়েছে বণ্টন সংস্থা। এক বিদ্যুৎ-কর্তা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রীয় সাহায্যে বিদ্যুৎক্ষেত্রে যে কোনও প্রকল্পের অনুমতির জন্য রাজ্যে বণ্টন সংস্কার কমিটি (ডিস্ট্রিবিউশন রিফর্মস কমিটি) রয়েছে। তারা চূড়ান্ত প্রকল্পগুলোয় অনুমোদন দিয়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য আরইসি-র কাছে বিবেচনার জন্য পাঠিয়েও দিয়েছে। বণ্টন-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আরইসি সে সব খতিয়ে দেখে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। এ বার জাতীয় বিদ্যুৎ তহবিলের স্টিয়ারিং কমিটি সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দিলেই ৃণের টাকা হাতে আসবে।
আধুনিকীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গ্রাহকেরা যেমন ভাল ভোল্টেজের বিদ্যুৎ পাবেন, তেমন সংস্থার আর্থিক ক্ষতিও কমবে বলে বণ্টন-কর্তৃপক্ষের দাবি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.