জেলা পরিষদের ওয়েবসাইট
নামে ই-প্রশাসন, ক্লিক করলে মেলে তামাদি তালিকা
ন্দিরা আবাস যোজনার বাড়ি আপনি কি পাচ্ছেন?
টেন্ডার জমা দেবেন, ফর্ম পাবেন কোথায়?
সপ্তাহান্তে কোথায় বেড়াতে যাবেন?
তিনটি প্রশ্নেরই উত্তর পাওয়ার কথা জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইটে নানা প্রকল্পের তথ্য থাকলে প্রশাসনের স্বচ্ছতা থাকে, আবার জনসংযোগের কাজটাও হয় সামান্য আয়াসে। ওয়েবসাইট থেকেই নাগরিকেরা জেনে যেতে পারেন জেলা থেকে গ্রাম, সব স্তরের সদস্যদের নাম, ফোন নম্বর। অনলাইনে জমা দিতে পারেন অভিযোগ, চাইতে পারেন তথ্য। তাই ‘ই-গভর্ন্যান্সের’ উপরে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
কিন্তু বাস্তবে কাজ কতটুকু হচ্ছে?
এ রাজ্যের নানা জেলা পরিষদের ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেল, কেউ বেশ যত্ন করে তৈরি করেছেন সাইট, সাজিয়েছেন সুন্দর ছবি দিয়ে, কিন্তু তথ্য চার বছর আগের। কেউ বা প্রাপকের তালিকায় একেবারে ‘আপডেটেড’, কিন্তু টাকা জমা-খরচের হিসেব রাখেনি। মাত্র দু’টি জেলা পরিষদ, পুরুলিয়া ও হাওড়া, তাদের বাজেট রেখেছে ওয়েবসাইটে।
জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে কী কী রাখতে হবে, সে বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা দেয়নি রাজ্য পঞ্চায়েত দফতর। তবে প্রশাসনিক কর্তাদের মতে যা যা থাকা দরকার তা হল, বরাদ্দ খরচের হিসেব, বাজেট, নানা প্রকল্পের প্রাপকদের স্থায়ী তালিকা (পার্মানেন্ট ওয়েটলিস্ট ফর বেনিফিসিয়ারি), জেলা সম্পর্কে জরুরি তথ্য, নির্বাচিত সদস্য ও সরকারি কর্মীদের ঠিকানাফোন নম্বর। টেন্ডার, ফর্ম ডাউনলোডের ব্যবস্থা, অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থাও থাকা চাই। ওয়েবসাইট হওয়া চাই আকর্ষণীয়, সহজে ব্যবহারের যোগ্য।
কলকাতা ও দার্জিলিং বাদ দিলে রাজ্যে ১৭টি জেলা পরিষদ। তাদের অনেকের নিজস্ব সাইট-ই নেই। জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটের মধ্যে জেলা পরিষদের সাইটের লিংক রয়েছে। ক্লিক করলে আসে নামমাত্র একটি ওয়েবপেজ। বীরভূম জেলা পরিষদের লিংকে গিয়ে দেখা গেল, জেলার সভাধিপতি এখনও মনসা হাঁসদা। অন্নপূর্ণা মুখোপাধ্যায়ের সভাধিপতি পদে সময়সীমা শেষ হতে চলল, নিজের দফতরের ওয়েবসাইটে তিনি আজও স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ রয়ে গেলেন!
বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর ও কোচবিহার এই আটটি জেলা পরিষদের নিজস্ব ওয়েবসাইট নেই। বাঁকুড়া, হাওড়া, পুরুলিয়া ও নদিয়ার ওয়েবসাইট অন্যদের তুলনায় দেখতে ভাল। বাঁকুড়ার সাইটটি চমৎকার ছবি দিয়ে সাজানো। ব্যবহারও সহজ। কিন্তু প্রকল্পের তথ্য প্রায় কিছুই নেই। একই কথা বলা যায় নদিয়ার ক্ষেত্রেও। ঝকঝকে দেখতে ওয়েবসাইটে কোনও প্রকল্পের হিসেব নেই। রয়েছে শুধু সভাধিপতি, সহ-সভাধিপতি, সদস্য, আধিকারিকদের নাম, ফোন নম্বর আর কনফারেন্স হল বুকিংয়ের তথ্য।
পুরুলিয়ার সাইটে বেশ কিছু তথ্য পাওয়া যায়, তবে ‘আপডেটেড’ নয়। ইন্দিরা আবাস যোজনার তথ্য মিলছে ২০০৮-০৯ পর্যন্ত। টোটাল স্যানিটেশন ক্যাম্পেন-এর তথ্য ২০০৭-০৮-এর। স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনার হিসেবপত্র ২০১০ পর্যন্ত। ‘বাজেট’-এ ক্লিক করে আয়-ব্যয়ের হিসেব মেলে, তবে তা ২০১০-১১ পর্যন্ত। বর্ধমানে ইন্দিরা আবাস যোজনার ব্লক অনুসারে ‘ওয়েটলিস্ট’ রয়েছে, তবে তা ২০০৯-১০ বর্ষের। পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের অধীনে প্রকল্পের তালিকা রয়েছে। তবে ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ বা ‘সজলধারা’, যে কোনও লিংকের উপর ক্লিক করলে ফুটে ওঠে ‘পেজ আন্ডার কনস্ট্রাকশন’। ইন্দিরা আবাসের তথ্য ২০০৫ সালের। প্রায় একই অবস্থা হুগলিরও। নানা প্রকল্পের নামে ক্লিক করলে শূন্যই থাকে স্ক্রিন। রয়েছে ব্লগও, তাতে একটাই প্রশ্ন, ‘হুগলি জেলা পরিষদের ব্লগ কী কী কারণে ব্যবহার করা যায়?’
দেখতে সাদামাটা হলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ওয়েবসাইটে বেশ কিছু প্রকল্পের হিসেব মেলে।
ইন্দিরা আবাসের ক্ষেত্রে ২০১৩-এর মার্চ পর্যন্ত তথ্য রয়েছে। জেলা পরিষদের বৈঠকের লিংক রয়েছে। তবে তাতে শুধু রয়েছে বৈঠকের দিন। শেষ দিন ছিল ২০১১ সালের জুলাইয়ে। ‘আমাদের যোগাযোগ’-এর (কনট্যাক্ট আস) উপরে ক্লিক করা যাচ্ছে না। কোচবিহার, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদের সম্পত্তি, সদস্য-কর্তাদের নাম-যোগাযোগের নম্বর দিয়েই কাজ সারা হয়েছে। কাজে লাগবে, এমন তথ্য প্রায় কিছুই নেই।
দক্ষিণের রাজ্যগুলির নানা জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যায়, সেই রাজ্যের নিজস্ব ভাষায় ওয়েবসাইট লেখা হয়েছে। কেউ সঙ্গে ইংরেজিও রেখেছেন, কেউ রেখেছেন অনুবাদের সুযোগ।
এ রাজ্যের ১৭টা জেলা পরিষদ ওয়েবসাইট আতিপাঁতি খুঁজেও বাংলায় লেখা তথ্য মিলল না।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.