আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও মাস ছয়েক ‘স্বেচ্ছা নির্বাসন’ নিতে চাইছেন সুভাষ ভৌমিক। দূরে থাকতে চাইছেন ক্লাব কোচিং থেকে!
চার্চিল ব্রাদার্সকে চূড়ান্ত ভাবে ‘না’ করে দিয়ে সুভাষ বুধবার বলে দিলেন, “আপাতত ছয় মাস আমি কোনও ক্লাবের কোচিং করাব না। ইচ্ছে আছে বিদেশে গিয়ে ফুটবল নিয়ে আরও কিছু শিখে আসার। তারপর দেখা যাবে।”
মঙ্গলবার ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে চার্চিলের পাঠানো চুক্তিপত্র দেখিয়ে সুভাষ দাবি করেছিলেন, তিনি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি। সইও করেননি। কিন্তু ওই দিন রাতেই চার্চিল প্রধান আলেমাও চার্চিলের সঙ্গে ফোনে কথা হয় সুভাষের। বকেয়া মাইনের পাশাপাশি পরের বারের দল নিয়ে কথা বলতে আই লিগ জয়ী কোচকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন চার্চিল প্রধান। সুভাষ বললেন, “ওরা শর্ত দিচ্ছে ওদের সঙ্গে কথা বলে দলগঠন করতে হবে। মাঠে টিম নামাতে হবে। আমি আমার ফুটবল-বুদ্ধি ওদের সঙ্গে ভাগ করব কেন? ওটাই তো আমার টি আর পি। আমি জানিয়ে দিয়েছি, আপনি অন্য কাউকে খুঁজে নিন। আমি আপনাদের কোচিং করাব না।”
সুভাষ তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়ার পরই চার্চিল আলেমাও দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হওয়ার প্রস্তাব দেন সুখবিন্দর সিংহকে। সুখী বুধবার ফাগওয়ারা থেকে ফোনে বললেন, “আমি চার্চিলের টিডি হওয়ার প্রস্তাব গ্রহণ করেছি। আমার সম্মতির কথা জানিয়েও দিয়েছি। ওরা যে দিন যেতে বলবে সে দিন যাব।”
কিন্তু তা হলে পরের মরসুমে কোথায় কোচিং করাবেন তিন বারের আই লিগ জয়ী কোচ সুভাষ? চার্চিলকে না করে দেওয়ার পর সুভাষের কাছে আপাতত কোনও ক্লাবের প্রস্তাব নেই। কেরলের যে ফ্র্যাঞ্চাইজি টিমের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা এগিয়েছিল তাদের আই লিগে খেলার ছাড়পত্র দেয়নি ফেডারেশন। এই অবস্থায় সুভাষ চাইছেন ‘অপেক্ষা’ করতে। “আরে আমি তো বিপদের কোচ। চার্চিলও তো আমাকে বিপদে পড়ে গোয়ায় ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। দলকে টেনে তুলে বাঁচিয়ে আই চ্যাম্পিয়ন করে দিয়েছি। আই লিগ শুরু হোক। কেউ না কেউ বিপদে পড়বেই। কোচিংটা আমার প্যাশন। সুযোগ পেলে আবার করাব,” বলে দিলেন ইস্টবেঙ্গলকে আসিয়ান কাপ দেওয়া কোচ।
আপাতত কোচিং না করিয়ে নিউ আলিপুরের বাড়িতে অবশ্য বসে থাকতে নারাজ সুভাষ। বললেন, “ইচ্ছে আছে বিদেশে গিয়ে কিছু শিখে আসার। এখন বিশ্ব ফুটবলের ৪-২-৩-১-এর যে ফর্মেশন চলছে সেটা এখনও আমি ভাল করে বুঝে উঠতে পারিনি। চার্চিলকে এ বার কয়েকটা ম্যাচে খেলিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্বের যে ক্লাবগুলি এই ফর্মেশনে খেলছে তাদের খেলা দেখে মনে হয়েছে চেষ্টা করলেও চার্চিলের মধ্যে সেটা আমি সে ভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। সে জন্যই ওই ফর্মেশনটা ভাল করে শেখার ইচ্ছে আছে।”
কিন্তু এই প্রজন্মের অন্যতম সেরা কোচ হয়েও আবার ‘শিক্ষা’ নিতে যাওয়া? “আরে মাস্টার ডিগ্রি করার পরও তো লোকে হায়ার স্টাডি করতে যায়। ব্যাপারটা সে রকম ভাবে দেখাই ভাল।” কিন্তু যদি এর মাঝে কোনও ক্লাব থেকে কোচিংয়ের প্রস্তাব আসে? সুভাষ বললেন, “দেখতে হবে আমি যে স্বপ্ন দেখছি সেটা সফল হচ্ছে কি না। চার নম্বর আই লিগ জেতার লক্ষ্যের চেয়ে এ এফ সি-র ফাইনালে ওঠা আমার কাছে অনেক বড় ব্যাপার।” |