এক দিনের ক্রিকেটের পর আইপিএল থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। তবে টেস্ট ক্রিকেটকে যে এখনই বিদায় জানানোর কোনও বাসনা নেই, সেটা স্পষ্ট করে দিলেন সচিন তেন্ডুলকর। জানিয়ে দিলেন, নিজের দু’শোতম টেস্ট ম্যাচ খেলার কথা ভেবে মনে মধ্যে একটা ‘বিশেষ অনুভূতি’ হচ্ছে!
বছর শেষের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তিনি যে যাচ্ছেন, মুম্বইয়ের নিজের সাপ্রতিকতম সাক্ষাৎকারে সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন সচিন। বলেছেন, “আমাদের ডিসেম্বরের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শুরু হতে এখনও কিছুটা দেরি আছে। তবে দু’শোতম টেস্টের কথা ভেবে মনের মধ্যে একটা বিশেষ অনুভূতি টের পাচ্ছি। দু’শো একটা বড় নম্বর। ওই টেস্টটা খেলা বেশ ইন্টারেস্টিং হবে!” |
ভারতীয় ক্রিকেটে গত দু’বছর ধরে সব থেকে বড় জল্পনার নাম, সচিন তেন্ডুলকরের অবসর। অথচ ক’দিন আগে ওয়াংখেড়েতে করণ শর্মাকে তিনি যখন লং অন বাউন্ডারির উপর দিয়ে পেল্লাই ছক্কাটা মারছিলেন, তখনও কেউ ভাবতে পারেননি যে, ওটা আইপিএলে সচিনের খেলা শেষ শট হয়ে থাকবে। এক দিনের ক্রিকেট থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তের মতোই আইপিএল থেকেও অবসরটা বাকিদের বুঝতে না দিয়ে নিয়েছেন সচিন। তায় এই প্রথম, ‘বয়স হয়ে যাচ্ছে’ গোছের কথা শোনা গিয়েছে মাস্টার ব্লাস্টারের মুখে। স্বাভাবিক ভাবেই সচিনের টেস্ট অবসর নিয়ে জল্পনা নতুন করে উস্কে উঠছিল তাতে। কিন্তু মুম্বইয়ের এক দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সব জল্পনায় এখনকার মতো জল ঢেলে দিলেন সচিন।
দু’শোতম টেস্ট খেলতে তিনি উদ্গ্রীব জানালেও সচিন অবশ্য নিজেও বুঝে উঠতে পারছেন না সেই অনুভূতি ঠিক কেমন হতে পারে। টেস্ট ক্রিকেটের ১৩৬ বছরের ইতিহাস ঢুঁড়ে এমন দ্বিতীয় কাউকে তো পাওয়াও যাবে না, যিনি সচিনকে একটা আগাম ধারণা দিতে পারেন। কারণ সচিনের থেকে বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারই যে নেই। তাই অনুভূতিটা কেমন হতে পারে আন্দাজ করতে গিয়ে বেশ সমস্যাতেই পড়তে হচ্ছে সচিনকে। শেষে বলেছেন, “দু’শোতম টেস্ট খেলতে নামার সময় কেমন লাগবে এখনই বলতে পারছি না। মুহূর্তটা আসার পর হয়তো ঠিকঠাক নিজের অনুভূতির বর্ণনা দিতে পারব!” তবে সচিন জানিয়েছেন তিনি দু’শো টেস্টের মাইলস্টোনের লক্ষ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা যাবেন না। বলেছেন, “টেস্ট সিরিজ জেতাই হবে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। আমরা জেতার জন্যই যাব। সেই কাজটা করতে গিয়ে যদি ঘটনাচক্রে কোনও রেকর্ড হয়ে যায়, তবে ঠিক আছে।” |
অর্জুনের পুরস্কার নেওয়া দেখছেন সচিন-অঞ্জলি-সারা। |
এই মুহূর্তে সচিনের মাথায় অবশ্য স্রেফ ছুটির চিন্তা। আইপিএল জেতার উৎসব-পর্বও শেষ। তাই কঠিন ক্রিকেট অনুশীলনে ডুব দেওয়ার আগে ক’টা দিন বিশ্রাম চান তিনি। বলেছেন, “সামনের ক’টা দিন স্রেফ ছুটি কাটাতে চাই। বিশ্রাম করতে চাই।” তার পরেই আবার ফিরবেন ট্রেনিংয়ে। জোর দেবেন ফিটনেসের উপরও। সচিনের কথায়, “ছুটির পরেই ট্রেনিং শুরু করে দেব। নিয়মিত নেট সেশনের সঙ্গে ফিটনেসেও জোর দেব।”
ছুটি কাটানোর সময় পাশে থাকবে পরিবার। সচিনের ছেলে অর্জুন জুনিয়র পর্যায়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। এমনকী বুধবার রাতের ওয়াংখেড়েতে এমসিএ-র বার্ষিক অনুষ্ঠানে বাবা সচিন যখন রঞ্জিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির জন্য দিলীপ বেঙ্গসরকরের হাত থেকে পুরস্কার নিচ্ছেন, তার একটু আগে একই মঞ্চে অনূর্ধ্ব-১৪ পর্যায়ে পুরস্কার পেলেন অর্জুনও। গরমের ছুটিতে, আপনি কি এ বার ছেলের ক্রিকেট নিয়ে পড়বেন? মুচকি হাসি সহযোগে সচিন জানিয়েছেন, “না”’। বলেছেন, “দু’জন কোচ ওকে ক্রিকেটটা শেখাচ্ছেন। সেই ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমি ওকে নিজের কোচদের কথা শুনে এগনোর স্বাধীনতা দেব। সবাই মিলে পরামর্শ দিয়ে ওকে বিভ্রান্ত করে লাভ নেই।” |