আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র তোলার প্রথম দিনেই হাওড়া ও হুগলির দু’টি এলাকায় শাসক দলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তুলল বিরোধীরা।
আগামী ২ জুলাই প্রথম দফায় যে ন’টি জেলায় পঞ্চায়েত ভোট হতে চলেছে, তার মধ্যে রয়েছে হাওড়া ও হুগলি। বুধবার থেকে শুরু হল মনোনয়ন তোলা। উদয়নারায়ণপুরে এ দিন সিপিএমের প্রতিনিধি সঞ্জীব খাঁড়া বিডিও-র কাছ থেকে ২৫০টি মনোনয়নপত্র তুলে ফেরার সময়ে ব্লক অফিসের বাইরে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হাতে প্রহৃত হন এবং তাঁর কাছ থেকে মনোনয়নপত্রগুলি কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেলা হয় বলে অভিযোগ। দলের উদয়নারায়ণপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।” উলুবেড়িয়ার এসডিপিও শ্যামলকুমার সামন্ত বলেন, “অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
অভিযোগ সাজানো বলে দাবি তৃণমূলের। উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজার দাবি, “বৃষ্টির জন্য আমাদের দলের কোনও কর্মী-সমর্থক ব্লক অফিসে যাননি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে এ দিন মনোনয়নপত্র তোলাও হয়নি। মঙ্গলবার সর্বদলীয় বৈঠকেই ঠিক হয়েছে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কাউকে বাধা দেওয়া হবে না।” সমীরবাবুর অনুমান, প্রার্থী করার মতো কর্মী পাচ্ছে না সিপিএম। সেই কারণেই তারা নাটক করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে সরে যেতে চাইছে।
অন্য দিকে, শ্যামপুর-২ ব্লকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের হামলার ভয়ে মনোনয়নপত্র তোলা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতারা।
মনোনয়নপত্র তুলতে আসার সময়ে হুগলির আরামবাগ ব্লক অফিসে ঢোকার মুখে তিরোল পঞ্চায়েতের মাদ্রা গ্রামের কংগ্রেস কর্মী শেখ রাজুকেও মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। শেখ রাজু আর মনোনয়নপত্র তোলেননি। কংগ্রেসের পক্ষে বিষয়টি পুলিশ এবং ব্লক প্রশাসনকে জানানো হয়।
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি প্রভাত ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “সকাল থেকে তৃণমূলের শ’দুয়েক ছেলে ব্লক অফিসের মূল ফটক-সহ তিনটি ফটকেই জমায়েত করে ছিল। আমাদের মনোনয়নপত্র তুলতে দেয়নি। অন্য প্রয়োজনেও ব্লক অফিসে ঢুকতে বাধা দেয়।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আরামবাগের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরার দাবি, “মনোনয়নপত্র তোলাকে কেন্দ্র করে কিছু হয়নি। পারিবারিক বিবাদের জেরে ওই ঘটনা ঘটেছে।”
বিডিও তথা রিটার্নিং অফিসার প্রণব সাঙ্গুই বলেন, “ঘটনা শোনামাত্র ব্লক অফিসের মূল ফটকের বাইরেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এই ধরনের ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।” মহকুমার অন্য পাঁচটি ব্লক অফিসের প্রবেশ পথগুলিতে তৃণমূল জমায়েত করে অন্য দলগুলির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করছে বলেও অভিযোগ কংগ্রেস ও বিজেপি। তৃণমূল এই অভিযোগ মানেনি। |