চিট ফান্ড আইনে অ্যামওয়ে ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও সিইও উইলিয়াম এস পিঙ্কনি গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছে শিল্পমহল। তাদের দাবি, আইন মেনে প্রত্যক্ষ বিপণন ব্যবসা করে অ্যামওয়ে। তাই সংস্থার কর্তা ও ২ ডিরেক্টর আচমকা ‘প্রাইজ চিট্স অ্যান্ড মানি সার্কুলেশন স্কিম (নিষিদ্ধকরণ) আইন’ ভাঙার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়ায় তারা স্তম্ভিত।
পাশাপাশি, প্রত্যক্ষ বিপণন সংস্থাগুলির জন্য আলাদা আইন ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা গড়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিল্পমহল। এই মুহূর্তে তা নেই বলেই এ ধরনের সংস্থাকে চিট ফান্ড আইনের আওতায় রাখা হয়, যা বিভ্রান্তিমূলক। আমেরিকা ভিত্তিক বহুজাতিক অ্যামওয়ে কর্তাদের হয়রানির এই ঘটনা ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে বণিকসভা ফিকি। তারা বলেছে কোনও ‘অপরাধ’ এ ক্ষেত্রে ঘটেনি। বিষয়টির সমাধান ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেই করা যেত। ইন্দো-আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স-এর প্রেসিডেন্ট শ্যৌর্য মণ্ডল বলেছেন, “ভারতীয় বা বিদেশি, যে কোনও প্রত্যক্ষ বিপণন সংস্থাই যাতে ভারতে ব্যবসা করতে গিয়ে বিপাকে না-পড়ে, তার জন্য সরকারের নড়েচড়ে বসার সময় এসেছে। আমরা সরকারি অফিসারদের সঙ্গে দেখা করব।”
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ২৭ মে কেরলের ওয়েআনদের অপরাধ দমন শাখার পুলিশ চিট ফান্ড আইনে গ্রেফতার করে অ্যামওয়ে ইন্ডিয়া-র চেয়ারম্যান ও সিইও উইলিয়াম এস পিঙ্কনি-কে। একই সঙ্গে ধরা হয় সংস্থার দু’জন ডিরেক্টর সঞ্জয় মলহোত্র এবং অংশু বুধরাজ-কে। ২০১১ সালে সংস্থার বহু স্তর বিপণন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত জনৈক বিক্রয়কারীর প্রাপ্য নিয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁদের ধরা হয়। তবে মঙ্গলবারই জামিনে মুক্তি পান তিন জন।
সাধারণ একটি অভিযোগের ভুল অর্থ ধরে চিট ফান্ড আইন ভাঙার অভিযোগে তিন কর্তাকে গ্রেফতার করা হয় বলেও অভিযোগ এনেছে সংস্থা। অ্যামওয়ে জানিয়েছে, তারা প্রত্যক্ষ বিপণনের মাধ্যমে পণ্য বেচে। টাকা তোলা বা নিশ্চিত আয়ের প্রতিশ্রুতি দেয় না, যেটা এই আইনের বিচার্য বিষয়। এ দিকে প্রত্যক্ষ বিপণন সংস্থাগুলির সংগঠন ইন্ডিয়ান ডিরেক্ট সেলিং অ্যসোসিয়েশন-এর পক্ষ থেকেও চিট ফান্ড আইনে অ্যামওয়ে কর্তাদের গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা করা হয়েছে। তাদের মতে ওই আইন প্রত্যক্ষ বিপণনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তারা এই আইন প্রত্যক্ষ বিপণন শিল্পে প্রয়োগ করার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। প্রত্যক্ষ বিপণনের আর একটি সংস্থা ওরিফ্লেম-ও বলেছে, অহেতুক কোনও সংস্থার এমডি-কে গ্রেফতার করা যুক্তিসঙ্গত নয়। |