জল সরবরাহের জন্য রাস্তায় নতুন পাইপ পাতার কাজ চলছিল চার দিন ধরে। ওই কাজ বন্ধ হওয়ায় মানবাজার শহরের চৌমাথা থেকে নামপাড়া, রজকপাড়া-সহ কয়েকটি এলাকায় জল সরবরাহ আরও কয়েক দিন পিছিয়ে গেল। প্রশাসনের অভিযোগ, বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ আপাতত বন্ধ রেখেছেন। বাসিন্দাদের পাল্টা দাবি, ঠিকাদার নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে কাজ চালাতে চাইছিলেন। সে কারণেই তাঁরা আপত্তি জানিয়েছিলেন। |
সম্প্রতি মানবাজারের নামপাড়া, রজকপাড়া এলাকায় জন্ডিস ছড়িয়েছিল। স্বাস্থ্য আধিকারিকরা রোগের প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসাবে সরবরাহের জল দূষিত বলে চিহ্নিত করেন। ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে এলাকায় ট্যাঙ্কারে জল দেওয়া শুরু হয়েছিল। পাশাপাশি শহরের চৌমাথা থেকে নামপাড়া অবধি প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তায় পুরনো পাইপ সরিয়ে নতুন পাইপ বসানোর কাজ শুরু হয়েছিল। পাইপ বসানোর বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার গোপাল আচার্য বলেন, “ওই রাস্তায় দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য অতিরিক্ত শ্রমিক লাগিয়েছিলাম কিন্তু, কিছু বাসিন্দার আপত্তিতে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছি। কয়েক জন মারধরের ভয়ও দেখিয়েছেন। তাই অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং বিডিওকে জানিয়ে আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছি।”
নামপাড়ার বাসিন্দা অনাথবন্ধু মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “ওই ঠিকাদার নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে কাজ সারতে চেয়েছিলেন। মারধরের ভয় দেখানোর অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। উনি বাড়িয়ে বলেছেন। পাইপ বসানোর গর্ত কতটা গভীর হবে, কোন মানের পাইপ বসানোর নির্দেশ রয়েছে, এ সব আমরা জানতে চেয়েছিলাম। উল্টে উনি আমাদের সঙ্গে দুর্বব্যহার করেন।” আর এক স্থানীয় বাসিন্দা সনাতন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যে ধরনের পাইপ বসানো হচ্ছে, রাস্তায় ভারী গাড়ি চললে তা বেশি দিন টিকবে না বলেই আমাদের ধারণা।” তাঁরও দাবি, কোনও শ্রমিক বা ঠিকাদার সংস্থার কর্মীকে কাজে বাধা দেওয়া হয়নি। কাজের ধরন ও সরঞ্জামের মান সম্পর্কে স্বচ্ছতা থাকা দরকার। স্থানীয় চিকিৎসক জগবন্ধু মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “যেভাবে গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে, যে কোন সময় বিপদ ঘটতে পারে। জমা ধুলো থেকে দূষণও ছড়াচ্ছে। পাইপ বসানোর কাজ দ্রুত শেষ করা উচিত।”
মানবাজারের বিডিও সায়ক দেব জানান, বিষয়টি জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জেলা আধিকারিকদের জানানো হয়েছে। ওই দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবজিৎ কুণ্ডু বলেন, “কী ভাবে কাজ শুরু করা যায়, তার দিশা পেতে বিডিও এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে মঙ্গলবার মানবাজারে পাঠিয়েছি। সাধারণ বাসিন্দারা প্রযুক্তিবিষয়ক ব্যাপারে তেমন ওয়াকিবহাল নন। নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার করার অভিযোগ ঠিক নয়। আশা করছি দু-একদিনের মধ্যে ফের কাজ শুরু করা যাবে।” |