পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অভিযান চালিয়ে বড় রকমের আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করল বনগাঁ থানার পুলিশ। সোমবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে থানার আইসি চন্দ্রশেখর দাসের নেতৃত্বে পুলিশ জয়ন্তীপুর এলাকা থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। যার মধ্যে রয়েছে একটি নাইনএমএম রিভলভার ও পাঁচটি ওয়ান শটার, চার রাউন্ড গুলি। গ্রেফতার হয়েছে এক দুষ্কৃতী।
বনগাঁয় একেবারে সীমান্ত ঘেঁষা ছয়ঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন জয়ন্তীপুর। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, বনগাঁর ওই এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ডান, বাম সব পক্ষের কাছেই যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি বনগাঁয় একটি খুনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিআইজি (পিআর) দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এসেছিলেন। বার বার ছয়ঘরিয়া এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি জানিয়েছিলেন, ওই এলাকায় যা অস্ত্র আছে তা দিয়ে পুলিশকে ‘চ্যালেঞ্জ’ জানানো সম্ভব। তবে বসে নেই পুলিশও। কখনও বনগাঁর এসডিপিও কখনও আইসি-ক নেতৃত্বে অস্ত্র উদ্ধারে লাগাতর অভিযান চলছেই। ফলও মিলচতে হাতেহাতে।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি মাসেই ছয়ঘরিয়ার জয়ন্তীপুর, খলিতপুর, পিরোজপুর, হরিদাসপুর, পেট্রাপোল, কালিয়ানি ইত্যাদি এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই ২০টির মতো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ধরা পড়েছে ১৫ জন দুষ্কৃতী। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রে মধ্যে যেমন বিদেশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে, তেমনই রয়েছে দেশি রিভলবার, ভোজালি, দা প্রভৃতি। বনগাঁর এসডিপিও রূপান্তর সেনগুপ্ত যে পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে তাতে আগামীতে তল্লাশি আরও জোরদার করা হবে।
পুলিশর একাংশের মতে, সাম্প্রতিক কালে বনগাঁ থানা এলাকা থেকে এত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এই সব আগ্নেয়াস্ত্রের অনেকটাই যেমন পাশ্ববর্তী রাজ্য বিহার থেকে আসে, তেমনই সীমান্তের বেশ কিছু জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া না থাকার সুযোগে সেই সব এলাকা দিয়েও এ পারে অস্ত্র ঢুকছে। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ, গুলি চালানো বন্ধের নির্দেশের সুযোগ নিয়েই সীমান্তের ও পার থেকে দুষ্কৃতীরা আরও বেশি সংখ্যায় এ পারে ঢুকছে। যদিও সীমান্তে যথেষ্ট কড়া নজকদারি রয়েছে বলে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুমান, এলাকা দখল, তোলাবাজি, অপরাদ জগত্ নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্যই এই এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিত্ দাস বলেন, “ছয়ঘরিয়া এলাকা থেকে সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই এলাকায় সন্ত্রাসের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে। সিপিএমের মদতে দুষ্কৃতীরা চলছে। পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” ছয়ঘরিয়ার বাসিন্দা ও বনগাঁ পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সিপিএমের গোবিন্দ মণ্ডলের আশঙ্কা, পুলিশ সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ব্যাপক সন্ত্রাস হবে। শাসকদলের মদতে অবাধে বুথ দখল, ছাপ্পা ভোট চলবে। যদিও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের ভূমিকায় বনগাঁর মানুষ কিছুটা স্বস্তিতে।
|
কামারহাটির পিটুরিঘাটে মঙ্গলবার বিকেলে এক কিশোর গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। নাম অভিলাষ দাস। বাড়ি কামারহাটির দাশুবাগানে। গঙ্গায় স্নান করতে নেমেছিল সে। সাঁতার না-জানায় সে তলিয়ে যায়। |