|
|
|
|
স্পনসর-এর খোঁজে সৌম্যজিত্ |
লক্ষ্য ব্রাজিলের অলিম্পিক
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
লন্ডন অলিম্পিকে দ্বিতীয় রাউন্ডে হেরে ছিটকে যান। সেই থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু শিলিগুড়ির সৌম্যজিত্ ঘোষের। এ বছর জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। এ মূহূর্তে টেবল টেনিসে দেশের ১ নম্বর র্যাঙ্কিং সৌম্যজিতের সামনে হাতছানি দিচ্ছে ২০১৬ সালে রিও ডি জেনেইরো অলিম্পিক। তার জন্য এখন থেকেই পুরদস্তুর প্রস্তুতি নিতে চান। নিয়মিত বিদেশি কোচের প্রশিক্ষণ, বিদেশে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার জন্য বাধ সেধেছে অর্থ তথা স্পনসর। তাই সাংবাদিক বৈঠক করে স্পনসরের জন্য আবেদন করতে হল তাঁকে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে সেই আবেদন জানান তিনি।
সৌম্যজিত্ এ দিন বলেন, “আগামী অলিম্পিকে ভাল কিছু করার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। বিদেশে আরও বেশি করে ‘প্রোট্যুর’ খেলা দরকার। সব সময়ের জন্য পিটার কার্লসনের মতো এক জন বিদেশি কোচ দরকার। এই সবের খরচের জন্য বছরে ৩০ লক্ষ দিতে রাজি কোনও স্পনসর পেলে ভাল হয়।” সেই মতো ৩ বছরের জন্য ১ কোটি টাকা দরকার। সৌম্যজিত্ এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করতে চান। যোগাযোগ করতে চান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গেও। রাজ্য সরকারের তরফে সেই ব্যবস্থা করা হলে তিনি কৃতজ্ঞ থাকবেন বলে জানান। বর্তমান সরকার তাঁকে ইতিমধ্যেই নানা ভাবে আর্থিক সহযোগিতা করেছে বলেও জানান। পাশাপাশি সাইয়ের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রকের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই টেবল টেনিস তারকা। তা ছাড়া সতীর্থ তামিলনাড়ুর খেলোয়াড় জি সত্যেনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আগামী অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য তামিলনাড়ু সরকার ওকে ১ কোটি টাকা দিয়েছে। নিজের প্রস্তুতির জন্য তাই স্পনসর পেতে চাইছি।” |
শিলিগুড়ি জানালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
|
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সৌম্যজিতের জন্য আমরা গর্বিত। ওর কোনও সমস্যা হলে প্রথমেই সাংবাদিক বৈঠক না করে আমার সঙ্গে দেখা করতে পারত। সমস্যা থাকলে আলোচনা করতে পারত।” ফেডারেশনের অন্যতম কর্মকর্তা মান্তু ঘোষও মনে করেন, অলিম্পিকের জন্য প্রস্তুতি নিতে বিদেশি কোচের কাছে প্রশিক্ষণ এবং প্রট্যুর বেশি করে খেলা দরকার। সে জন্য স্পনসর পেলে খেলোয়াড়দের অবশ্যই সুবিধা হবে।
টেবল টেনিস ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার তরফে বছরে বিদেশে গোটা চারেক প্রট্যুরের খেলার ব্যবস্থা করা হয়। সৌম্যজিতের দাবি, সেটা পর্যাপ্ত নয়। অলিম্পিকের প্রস্তুতি নিতে বিদেশে বছরে অন্তত ১২ টা প্রট্যুর খেলা দরকার। দরকার একজন নির্ভরযোগ্য কোচের যাঁকে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে খেলার সময় পাওয়া যাবে। ফেডারেশনের সৌজন্যে লন্ডন অলিম্পিকের প্রস্তুতির জন্য পিটার কার্লসনের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছিল সৌম্যজিত্। সেই থেকে এখনও তাঁর কাছেই প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তবে ফেডারেশনের তরফে ২ বছর সেই প্রশিক্ষণের খরচ বহন করা হয়েছিল। এখন সৌম্যজিতকেই সেই ব্যবস্থা করতে হয়। সুইডেনে ফাল্কেনবার্গ বোর টেনিস ক্লাবে খেলতে চুক্তি বদ্ধ সৌম্যজিত্। সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মূলত খেলার মরসুম। ওই ক্লাবের কোচ পিটার কার্লসনই। তাতে সুবিধা হয়েছে ক্লাবের কোনও ম্যাচ খেলতে পিটার কার্লসনের প্রশিক্ষণ পেয়েই থাকেন। তার জন্য বাড়তি খরচ লাগে না। ক্লাবের তরফে সৌম্যজিতের থাকা, খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়। তা ছাড়া ক্লাবে খেলার জন্য টাকাও পান। কিন্তু সুইডেনের বাইরে কোথাও খেলতে গেলে বা নিজের ক্লাবের খেলা না-থাকলে পিটার কার্লসনের পরামর্শ মেলে না।
আগামী অলিম্পিক পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রে পিটার কার্লসনের প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ পেতে তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে চুক্তি বদ্ধ হতে চায় সৌম্যজিত্। তাতে বছরে ৮ মাসের জন্য তাঁকে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এক জন ফিজিও দরকার। যাঁকে মাসে ৫০ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দিতে হবে। নিজের উদ্যোগে বিদেশে বিভিন্ন প্রোট্যুরে খেলতে প্রতি ক্ষেত্রে এন্ট্রি ফি, অন্য খরচ জোগার করতে হবে। |
|
|
|
|
|