চার্চিলের পথ খোলা রাখছেন সুভাষ
‘ফুটবলের আইপিএল যেন সার্কাস না হয়ে দাঁড়ায়’
ফুটবলের আই লিগ সার্কাসে পরিণত হতে পারে। আশঙ্কা সুভাষ ভৌমিকের। একই সঙ্গে আই লিগ জয়ী চার্চিল ব্রাদার্স টিডির মন্তব্য, “ক্রিকেটের মতো ফুটবলের আইপিএলে যেন ম্যাচ গড়াপেটা কিংবা জুয়াড়িদের অনুপ্রবেশ না ঘটে।”
মঙ্গলবার কলকাতা ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাবের ‘মিট দ্য প্রেস’-এ এসে সুভাষ বলেন, “ফুটবলের আইপিএল নিয়ে অনেক কথাই শুনছি। কিন্তু সেটা যেন সার্কাসে পরিণত না হয়।” এখানেই না থেমে তিনি বলেন, “এর মধ্যে বেটিং ঢুকলে তার ফল হবে আরও মারাত্মক। এর জন্য সতর্ক থাকতে হবে।” নিউ আলিপুরের বাসিন্দা আরও বলছেন, “আই লিগের বিপণন খুব একটা জোরদার নয়। ফুটবলের আইপিএল যদি এক্ষেত্রে আধুনিক বিপণনের ওপর জোর দেয় তা হলে টুর্নামেন্টের আগ্রহ আগামী দিনে বাড়তে পারে।”
আসন্ন মরসুমে তিনি কোথায় কোচিং করাবেন? গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্স? নাকি অন্য কোনও দলে? ময়দানে এ নিয়ে হাজারো জল্পনা। সুভাষ বোধহয় জানতেন সাংবাদিক সম্মেলনে এই প্রশ্ন উঠবেই। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে নজিরবিহীন ভাবে জামার পকেটে সেই চুক্তিপত্র নিয়ে এসেছিলেন সুভাষ। ভারতের কোনও ফুটবল কোচ যা কোনও দিন করেননি এ দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মাঝে তাই করেন তিনি। চার্চিলের সেই চুক্তিপত্র সাংবাদিকদের দেখিয়ে তিনি বলেন “এই চার্চিলের চুক্তিপত্র। আমি কিন্তু সই করিনি। এ বার আমার এএফসি নিয়ে বিশেষ স্বপ্ন আছে।”

এখনও চার্চিলে যেতে পারি। চুক্তিপত্রে সেটাই দেখাচ্ছেন সুভাষ। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস।
কী সেই স্বপ্ন? তাও খোলসা করে বলে দিয়েছেন চার্চিল টিডি। “আর্মান্দো কোলাসো এএফসি কাপের সেমিফাইনাল পর্যন্ত গিয়েছিল। আমি ফাইনাল খেলার স্বপ্ন দেখি। এখন এএফসি কাপের গ্রুপ বিন্যাস আগের চেয়ে সহজ।” তা হলে কি সামনের মরসুমে ফের তিনি চার্চিলেই? উত্তরে সুভাষ বলছেন, “ঢাল-তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দার হয়ে কোথাও থাকব না। চার্চিল কর্তাদের বলেছি, বিলাল-হেনরিকে ফিরিয়ে এনে আগের মরসুমের দলটাকেই ধরে রাখুন। মন মতো দল হলে চার্চিলে থেকেও যেতে পারি। না হলে অন্য দলে যাব। কিংবা কোচিং করাব না।” এ মাসের শেষে ছুটি কাটাতে ব্যাঙ্কক যাচ্ছেন সপরিবারে। সেখানে থেকে ফিরেই সামনের মাসের শুরুতে চার্চিল কর্তা আলেমাও চার্চিলের সঙ্গে চূড়ান্ত বৈঠক হওয়ার কথা সুভাষের।
আসন্ন ফুটবল মরসুম থেকেই বদলে যাচ্ছে আই লিগ এবং ফেডারেশন কাপের পরিকাঠামো। এ দিন সে ব্যাপারে সুভাষের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তাঁর সোজাসাপটা জবাব, “অর্থ বাঁচানোর জন্য দুটো গ্রুপে ভাগ করে আই লিগ হবে। যদিও এতে লিগের মজাটাই চলে যেতে পারে। তবে ফেডারেশন কাপের পরিকাঠামো ঠিকই আছে।” এর সঙ্গেই ফেডারেশনের অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলার অন্তর্ভুক্তিকে সাধুবাদ জানালেও ফুটবলারদের বয়স ভাঁড়ানো নিয়ে চিন্তা রয়েছে তাঁর। “প্রতি দলে এক জন করে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলার খেলানোর সিদ্ধান্তটা বরং বেশ ভাল। কিন্তু দেখতে হবে সেটা যেন অনূর্ধ্ব-২৩ থাকে। কোনও ফুটবলারের বয়স নিয়ে সন্দেহ থাকলে এমআরআই বাধ্যতামূলক করা হোক।”
আশিয়ান কাপের পর এ বারের আই লিগটাও তাঁর জীবনের অন্যতম তৃপ্তির মুহূর্ত বলে জানাচ্ছেন বর্ষীয়ান এই ফুটবল কোচ। তাঁর কথায়, “শুরুর দিকে কেউ আমাদের সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন হিসাবে স্বপ্নেও ভাবেনি।”
আই লিগ জয়ী কোচ শহরে অথচ ইস্টবেঙ্গল বিদেশি কোচ খুঁজছে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে বলব না, বলব না করেও ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদারকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি সুভাষ। বলেন, “ইস্টবেঙ্গল কাকে কোচ করবে সেটা তাঁদের ব্যাপার। আমার কিছু বলার নেই।” পরক্ষণেই তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হয় সোমবারই লাল-হলুদ সচিব বলেছেন, ইস্টবেঙ্গলকে কোচিং করানোর দক্ষতাসম্পন্ন কোনও দেশীয় কোচ নেই। শুনেই প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল কোচের জবাব, “শুনলাম উনি নিজেকে ক্লাবের সেরা সচিব বলেছেন। ওনার জমানায় ক্লাবের বেশির ভাগ ট্রফিই কিন্তু স্বদেশি কোচের হাত ধরেই এসেছে।” এর পরেই স্বভাবসিদ্ধ রসিকতার সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “শেলি, কিটসদের মতো রবীন্দ্রনাথও তো লিখেছেন। বিদেশি কোচদের বায়োডাটা ভাল করে দেখা উচিত। দেখা হোক তাঁরা কী কী ট্রফি জিতেছেন।”
আর যার সঙ্গে এ বারের আই লিগে তাঁর ফুটবল মস্তিষ্কের লড়াই ছিল, সেই ট্রেভর জেমস মর্গ্যান? ইস্টবেঙ্গলের সদ্য বিদায়ী কোচ প্রসঙ্গে সুভাষের মূল্যায়ন, “কোনও কোনও গাড়ি প্রথম ১০ কিমি দুরন্ত গতিতে এগিয়ে শেষ দিকে গিয়ে বিগড়ে যায়। আবার কোনও কোনও গাড়ি হাইওয়েতে উঠে ভাল দৌড়োয়। মর্গ্যান প্রত্যেক বার শেষের দিকে হোঁচট খেয়েছেন। ফলে আই লিগ আসেনি। আর আই লিগ না এলে সেই কোচ তো ব্যর্থই।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.