|
|
|
|
ইন্টারমিডিয়েটে শীর্ষে কৃষক পরিবারের ছেলে
নিজস্ব সংবাদদাতা • রাঁচি |
রোদে পুড়ে, জলে ভিজে বাবা সারা বছর মাঠে কাজ করেন। পেশায় কৃষক। আর মা গৃহবধূ। নিতান্ত দরিদ্র পরিবার। তা সত্ত্বেও লেখাপড়া শেখার অদম্য ইচ্ছে। আর সেই ইচ্ছেশক্তির জোরেই উঠে আসা। প্রথমে মাধ্যমিক স্তরে অঙ্কে পূর্বী সিংভূম জেলায় শীর্ষস্থান পাওয়া। তারপরে এবার ইন্টারমিডিয়টে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ স্থানে থাকা।
উমাশঙ্কর তিওয়ারি। পূর্বী সিংভূম জেলার পটমদা ব্লকের বাসিন্দা দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে। কিন্তু আজ দুপুরের পর থেকে তাঁর নতুন আরও একটি পরিচয় তৈরি হয়েছে। আর তা হল ‘ইউনিভার্সিটি টপার’। ঝাড়খণ্ডের কোলহান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে তিরাশি শতাংশ নম্বর নিয়ে শীর্ষস্থান পেয়েছেন উমাশঙ্কর। তাঁর কথায়, “বাবা আমাকে বড় করতে অনেক কষ্ট করছেন। আমি চাই একদিন বাবাকে সব দিক থেকে সুখী করতে। তাই লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই। আপাতত আমার ইচ্ছে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার।” |
|
শিকড় উত্তর প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে গাড়া থাকলেও উমাশঙ্করের তিন প্রজন্ম পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলার লাগোয়া পটমদার কাশমারা গ্রামের বাসিন্দা। পুরো পরিবারই পরিষ্কার বাংলায় কথা বলেন। মাধ্যমিক স্তরে অঙ্কে জেলায় শীর্ষস্থান পাওয়ায় ইন্টারমিডিয়টে তাঁকে লেখাপড়া করতে সাহায্য করেছিলেন কলেজের অধ্যাপকরাই। জামশেদপুরের করিম সিটি কলেজের ছাত্র উমাশংকর বিজ্ঞান বিভাগের জন্য আলাদা করে কোচিং নিয়েছিলেন কলেজেরই দুই অধ্যাপকের কাছে। উমাশঙ্করের কথায়, “আমার আর্থিক অনটনের কথা আর আমার লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহের কথা অধ্যাপকরা জানতেন। মাধ্যমিক স্তরে ভালো নম্বর থাকায় ইন্টারমিডিয়টে কলেজের ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রির অধ্যাপক আমায় বিনা খরচেই পড়িয়েছেন। আর অঙ্ক যাঁর কাছে পড়েছি তিনি আমাদের কলেজের নন। তবে তিনিও আমার কাছ থেকে টাকা পয়সা নেননি।”
পরীক্ষায় ছেলে ভালো ফল করায় স্বভাবতই খুশি তিওয়ারি পরিবার। উমাশঙ্করের বাবা বিজয়গোপালের কথায়, “অনেক কষ্ট করে ছেলের মেসে থাকার টাকার যুগিয়েছি দু’বছর ধরে। গ্রামের বাড়ি থেকে কলেজ অনেক দূরে। ছেলে বলেছিল ভালো ফল করতে হলে এত দূর থেকে ও কলেজ যেতে পারবে না। ছেলে ভালো ফল করল। আমি খুব খুশি।” |
|
|
|
|
|