|
|
|
|
সারদা গোষ্ঠীর আরও জমির হদিস উত্তরে
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সারদা গোষ্ঠীর আরও একটি জমির হদিস পেল পুলিশ। শিলিগুড়ির কাছে মাটিগাড়ার বানিয়াকুড়িতে একটি আড়াই কাঠার প্লট কিনেছিলেন সারদা’র কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। পাশাপাশি, সারা রাজ্যে সারদা গোষ্ঠীর ৮০০ বিঘার উপরে জমি রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। এ ছাড়াও ২০০টির উপরে গাড়ির মালিক সারদা গোষ্ঠীর মালিক। সম্প্রতি বিধাননগরে গিয়ে শিলিগুড়ির বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়কে জেরা করেন। দিনভর জেরাতে ওই তথ্য পুলিশকে জানান। এ ছাড়াও তার কয়েকটি বড় অফিস ঘর, কিছু প্রকল্পের কথাও পুলিশের কাছে জানান। উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলায় তার ২৫০ বিঘার উপরে জমি রয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন তিনি। একমাত্র উত্তর দিনাজপুর জেলায় সুদীপ্ত সেনের কোনও জমির হদিস পাওয়া যায়নি।
তদন্তকারী দলের সদস্যদের সুদীপ্ত সেন জানিয়েছেন, উত্তর দিনাজপুরে ব্যবসা ভাল না থাকার কারণে কোনও সম্পত্তি সেখানে তিনি করেননি। শিলিগুড়ির লিঙ্কনস স্কুলকে প্রতি মাসে ২ থেকে আড়াই লক্ষ টাকা ভর্তুকি তিনি দিতেন বলে পুলিশের কাছে দাবি করেছেন। অতিরিক্ত হারে সুদ দেওয়ার কথা বলে বাজার থেকে যে টাকা তোলা হয়েছে তা কী ভাবে ফেরত দেওয়া সম্ভব ছিল? সে ব্যপারে সুদীপ্ত সেন কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। এক পুলিশ অফিসার বলেন, “আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলতে পারেননি তিনি। বিভিন্ন প্রকল্পের জমি, বাড়ি বিক্রি করে টাকা ফেরতের কথা বললেও খাতায়-কলমে হিসেব করে দিতে পারেননি।” |
|
অভিযোগ জানাতে এসে অপেক্ষা। শিলিগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র। |
পুলিশ জানিয়েছে, বানিয়াকুড়িতে যে জমিটি সুদীপ্ত সেন কিনেছিলেন তা চিহ্নিত করার জন্য ভূমি রাজস্ব দফতরের ব্লক অফিসে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি দার্জিলিঙের ঘুমে সারদা গোষ্ঠীর যে জমি রয়েছে তা নিয়েও খোঁজখবর করেছে পুলিশ অফিসাররা। ঘুমের জমির ১ কোটি ৫ লক্ষ টাকা কিনে নিলেও ওই জমি এখনও সারদা গোষ্ঠীর নামে রেকর্ড হয়নি। বিষয়টি বিশেষ তদন্তকারী দলের পক্ষ থেকে রাজ্য পুলিশের ডিজি, সিআইডিকে জানানো হয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর শিলিগুড়ি শাখায় কর্মরত ছিলেন দীপক মোহান্তি। তিনি বলেন, “বানিয়াকুড়ির জমির কথা আমরা জানতাম না। তা ছাড়া যে যে সম্পত্তি কথা আমাদের জানা ছিল তা পুলিশকে জানিয়েছে। সুদীপ্ত সেন কোথায় কি সম্পত্তি কিনে রেখেছেন তা আমাদের কাছে কখনও খোলসা করতেন না।” সোমবার শিলিগুড়ির হিমাঞ্চল বিহারে শ্যামল সেন কমিশনের অফিসে অভিযোগপত্র জমা দিতে দীর্ঘ লাইন পড়ে যায়। রবিবার দুপুর থেকে মালদহ, কোচবিহার, দক্ষিণ দিনাজপুর, জলপাইগুড়ির বিভিন্ন এলাকা থেকে এজেন্ট আমানতকারীরা ভিড় করতে থাকে। রাতভর তাঁরা অফিসের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকে। এদিন সকালে অফিস কাউন্টার খুলতেই হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। পরে পুলিশ এজেন্ট ও আমানতকারীদের লাইন ঠিক করার কাজ করেন। ফালাকাটার বাসিন্দা এজেন্ট ও আমানতকারী আশা রায় বলেন, “রাতভর দাঁড়িয়ে ছিলাম। ২৫টি ফর্ম জমা দিতে হবে। আরও এক দিন থাকতে হবে।” মাথাভাঙার আমানতকারী ও এজেন্ট গণেশ বর্মন বলেন, “গরমে থাকা যাচ্ছে না। আরও কাউন্টার হলে ভাল হয়।” দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। প্রয়োজনে কাউন্টার বাড়ানো হবে।” এ দিন ৭৭৫৭টি হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। সব মিলিয়ে অভিযোগ হল ৬৪ হাজার ৫২টি। |
|
|
|
|
|