|
|
|
|
প্রশ্নপত্র কম থাকায় ক্ষোভ পরীক্ষার্থীদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • আলিপুরদুয়ার |
বেলা ১২টা নাগাদ পরীক্ষা শুরু হয়। হলে খাতা দেন শিক্ষকরা। এর পরে প্রশ্নপত্র বিলি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েন তাঁরা। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ২৪৩ জন। অথচ প্রশ্নপত্র রয়েছে মাত্র নয়শোটি। নিদিষ্ট সময়ে প্রশ্ন হাতে না-পেয়ে ৩৪৩ জন পরীক্ষার্থী ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
সোমবার আলিপুরদুয়ার কলেজে প্রথম বর্ষ আবশ্যিক বাংলা পরীক্ষাকে ঘিরে ওই ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদে এ দিন পরীক্ষা চলাকালীন কলেজ অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, নিয়ম ভেঙে প্রশ্নপত্র জেরক্স করে বিলি করা হয়েছে। ওই কারণে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমীরকুমার দাস বলেন, “কেমন করে এমটা হল খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।” কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশ্নপত্র কম পাঠানোয় ওই সমস্যা হয়েছে। তাঁরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কলেজের অধ্যক্ষ সুব্রত পঞ্চানন বলেন, “যে সংখ্যক প্রশ্ন পাঠাতে বলা হয়েছিল সেটা আসেনি। ওই কারণে সমস্যা হয়েছে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কলেজের নিজস্ব জেরক্স মেশিনে দ্রুত জেরক্স করে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে। তাই প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ঠিক নয়।” উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাসমূহের নিয়ামক সুশান্ত দাস বলেন, “অধ্যক্ষের ঘরে প্রশ্নপত্র জেরক্স করে বিলি হয়েছে।” |
|
আলিপুরদুয়ার কলেজের অধ্যক্ষকে ঘিরে বিক্ষোভ ছাত্র সংগঠনের। —নিজস্ব চিত্র। |
এদিন বেলা ১২টায় আবশ্যিক বাংলা বিষয়ে পরীক্ষা শুরু হয়। বেলা দুটো পর্যন্ত পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার্থীরা হল ঘরে সময় মতো বসে পড়েন। শিক্ষকরাও খাতা ও প্রশ্নপত্র নিয়ে পৌঁছে যান। তিন শতাধিক পরীক্ষার্থী দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরেও প্রশ্নপত্র হাতে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। অভিযোগ, শিক্ষকরা পাশের পরীক্ষার্থীর প্রশ্ন দেখে লেখা শুরু করতে বললে হইচই শুরু হয়। পরীক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, পরীক্ষার শুরুর প্রায় আধ ঘন্টা পরে জেরক্স করা প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। ছাত্র সংগঠনগুলির তরফে প্রশ্ন উঠেছে অন্তত পনেরো দিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কলেজে প্রশ্ন পৌঁছেছে। কেন সেটা মিলিয়ে দেখা হয়নি। বিষয়টি আগে জানা গেলে প্রশ্ন আনিয়ে নেওয়া যেত। আলিপুরদুয়ার কলেজের শিক্ষক তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পর্যবেক্ষক দিলীপ রায় বলেন, “জানি প্রশ্নপত্র এ ভাবে জেরক্স করা যায় না। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের কথা চিন্তা করে জেরক্স করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে থেকে প্রশ্নপত্র মিলিয়ে রাখা হলে এমনটা হত না।” আলিপুরদুয়ার কলেজ পরিচালন সমিতির সম্পাদক অমিতাভ রায় জানান, অনেক দিন আগে প্রশ্নপত্র কলেজে পৌঁছে যায়। প্যাকেটের উপরে কত প্রশ্ন রয়েছে সেটা লেখাও থাকে। তাই প্যাকেটগুলি মিলিয়ে নিলে এমনটা হত না বলে তাঁর দাবি। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ যাই বলুন না কেন ছাত্র পরিষদ নেতা সঞ্জয় সরকার অভিযোগ করেন, বেশ কিছুক্ষণ পরীক্ষার্থীদের বসে থাকতে হয়েছে। জেরক্স হওয়ায় প্রশ্ন বাইরে বেড়িয়ে গেছে। ওই কারণে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। এসএফআইয়ের তরফে আলিপুরদুয়ার কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিত্ কিশোর মুন্সী এই দিন বলেছেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের গফিলতিতে পরীক্ষার্থীদের ভুগতে হয়েছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল বলেও শুনেছি। এটা মেনে নেওয়া যায় না।” |
|
|
|
|
|