স্কুল-পালানো সেই মহারাজই মেধা তালিকায়
ছোটবেলায় স্কুলে পরীক্ষার সময় পালিয়ে যেত। শিক্ষকেরা ধরে এনে পরীক্ষায় বসাতেন। সেই দীপমাল্য বরাই রাজ্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা তালিকায় সম্ভাব্য তৃতীয়। শিলিগুড়ি বয়েজ হাই স্কুলের ওই ছাত্রের ফলাফলে গর্বিত শিলিগুড়ি-সহ গোটা উত্তরবঙ্গবাসী। এ দিন দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে ওই কৃতী ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে তাকে শুভেচ্ছা বার্তা জানিয়ে আসেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। ফুল, মিষ্টির পাশাপাশি গৌতমবাবু তার হাতে উপহার হিসাবে সমগ্র রবীন্দ্র রচনাবলী তুলে দেন। যা হাতে পেয়ে খুশি দীপমাল্যও।
বাবা-মা’র সঙ্গে দীপমাল্য। —নিজস্ব চিত্র।
এ দিন ফল জানতে টিভির সামনে বসেছিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিত্‌সক কৃষ্ণকান্তবাবু এবং তাঁর স্ত্রী শুভ্রাদেবী। সঙ্গে অপেক্ষায় ছিল তাঁদের একমাত্র ছেলে দীপমাল্য তথা মহারাজ। বাড়ির লোকেরা ওই নামেই তাকে ডাকেন। কখনও আদর করে ডাকেন বাবান বলে। মেধা তালিকায় সেরাদের মধ্যে তাদের মহারাজের নাম দেখে ছেলেকে জড়িয়ে ধরেন বাবা। বাড়িতে হাজির সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। ততক্ষণে খবর ছড়িয়ে পড়েছে। স্কুলে তাদের কৃতী ছাত্রের জন্য অধীর অপেক্ষা করছেন শিক্ষক, ছাত্ররা। দীপমাল্যর মামাবাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরে গঙ্গারামপুর রাজীবপুরে। সেখানেও তখন খুশির হাওয়া। দাদু মাধবেন্দ্র সরকার, দিদিমা সুপ্রভাদেবীর নাতি পরীক্ষায় রাজ্যে কৃতী হওয়ায় তাঁরা পড়শিদের মিষ্টি বিলি শুরু করেছেন। মাঝেমঝেই ফোন করছেন আর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন।
কৃষ্ণকান্তবাবুর বাড়ি কৃষ্ণনগরের চাপড়ায়। ধুবুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তিনি যখন চিকিত্‌সক ছিলেন সে সময় আদমা হাই স্কুলে নার্সারিতে পড়াশোনা শুরু তাঁদের মহারাজের। পরে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে। পেশার কারণে এর পর কৃষ্ণবাবু ব্যারাকপুরে বদলি হয়ে এলে ব্যারাকপুর গভর্নমেন্ট হাই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয় মহারাজ। দু’মাস পরেই শিলিগুড়িতে চলে আসতে হয় কৃষ্ণবাবুকে। মহারাজকে ভর্তি করানো হয় পাঠভবন স্কুলে। পরে পঞ্চম শ্রেণি থেকে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলে ভর্তি হয় সে। তখন থেকেই ক্লাসে প্রথম হত দীপমাল্য। কৃষ্ণবাবু বলেন, “ব্যারাকপুর কলেজিয়েট স্কুলে পরীক্ষার সময় ও পালিয়ে যেত। শিক্ষকেরা খুব ভালবাসতেন। তারাই ওকে ধরে এনে পরীক্ষায় বসাতেন। ওর এই ফলাফলে আমরা খুবই খুশি।” শুভ্রাদেবী বলেন, “ছেলেকে পড়তে বসার জন্য অনেক সমই জোর করতাম। ও কিন্তু তখন ঠিক মতো পড়ত না। যখন নিজের ভাল লাগত কখনই মন দিয়ে পড়ত।’’ দীপমাল্যও মনে করেন, পড়াটা নিজের মতো করেই করা উচিত। নিজের সাফল্যের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের আবদান অনেক বলেই জানায় দীপমাল্য। বলেন, “সমস্ত বিষয় গৃহশিক্ষকদের কাছে পড়তাম। তবে স্কুলের পড়াটাই ছিল সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গৃহশিক্ষকদের কাছে সেটা আবার পড়লে সেটা রপ্ত হয়ে যেত। তা ছাড়া কোনও বাঁধাধরা নিয়ম ছিল না পড়াশোনা করার।” ভবিষ্যতে চিকিত্‌সক হতে চায় দীপমাল্য।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.