প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পশ্চিমবঙ্গে ছ’হাজার কিলোমিটারের বেশি রাস্তা তৈরির দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ন্যাশনাল বিল্ডিংস কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন (এনবিসিসি)-এর হাতে তুলে দিতে চায় রাজ্য সরকার। ওই সংস্থার কাছে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় সোমবার জানান। প্রতি কিলোমিটার রাস্তা তৈরির খরচ পড়বে ৬০ লক্ষ টাকা।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় কেন্দ্রের কাছ থেকে আরও চার হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন পেতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। তার সঙ্গে ওই একই যোজনায় এর আগে মঞ্জুর হওয়া দু’হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির দায়িত্বও এনবিসিসি-র হাতে তুলে দেওয়া হবে।
রাজ্যে পালাবদলের পরে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় পশ্চিমবঙ্গে ন’হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির প্রস্তাব অনুমোদন করে কেন্দ্র। কিন্তু সময়মতো সেই সব রাস্তা তৈরির দরপত্র জমা না-পড়ায় কাজ পিছিয়ে যায়।
এখনও পর্যন্ত ওই ন’হাজার কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৭৫ শতাংশের দরপত্র ডেকে কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার ওই সড়ক যোজনায় আরও চার হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির প্রস্তাবে মঞ্জুরি দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ জানায়। কেন্দ্র বলে, বাড়তি রাস্তা তৈরির জন্য রাজ্য সরকার যদি অতিরিক্ত পরিকাঠামো গড়তে পারে, তবেই অনুমোদন মিলবে।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রের প্রস্তাব মেনে এ দিন মহাকরণে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় নতুন রাস্তা তৈরির জন্য অতিরিক্ত পরিকাঠামো গড়ার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। সেই প্রস্তাব মোতাবেক দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে একটি করে এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে দু’টি অতিরিক্ত কর্মসূচি রূপায়ণ কেন্দ্র গড়া হবে। ঢেলে সাজা হবে মালদহের কর্মসূচি রূপায়ণ কেন্দ্রটিও।
সর্বোচ্চ স্তরের রাজ্য গ্রাম উন্নয়ন সংস্থায় চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে ইঞ্জিনিয়ার, সার্ভেয়ার-সহ অতিরিক্ত ১৭৩ জন আধিকারিক ও কর্মীকে। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের কথা কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বাড়তি চার হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন মেলা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
নতুন রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ায় কাজের সুবিধা হবে। কারণ, বিশেষ অনগ্রসর এলাকা অনুদান তহবিলের আওতায় থাকায় ওই তিন জেলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার অধীনে রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রে জনসংখ্যার ন্যূনতম কোনও সীমা থাকবে না। যত কম জনসংখ্যার বসতিই হোক, সেখানে রাস্তা তৈরি করা যাবে।
এনবিসিসি-কে দায়িত্ব দেওয়ায় স্থানীয় ঠিকাদারদের তরফে কোনও বাধার আশঙ্কা থাকবে কি? জবাবে সুব্রতবাবু বলেন, প্রথম দফার কাজে যথেষ্ট ঠিকাদার না-পাওয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তা হলে আর বাধা আসার প্রশ্ন ওঠে কী করে? ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি রাজ্য এনবিসিসি-কে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় তাদের সমস্ত রাস্তা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছে। |