মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের পরে সফল পরীক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদের ফল ভাল হয়নি, তাদের উৎসাহ দিয়েছেন আরও মন দিয়ে পড়ার জন্য। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেন, “যাদের ফল ভাল হয়নি, তারা মন খারাপ কোরো না। মন দিয়ে একটা বছর পড়। যদি মনে হয় রিভিউ করা দরকার, সেটা কর। এমন কিছু কোরো না, যাতে জীবন শেষ হয়ে যায়।”
কিন্তু ফল প্রকাশের আগে স্রেফ ভয়েই আত্মঘাতী হয়েছে ঘোলার মানিকডাঙা বিবেকানন্দ পল্লির কৌশিক বণিক। কৌশিক এ বার সোদপুর নবোদয় ইনস্টিটিউশন থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল। স্কুলের পরীক্ষায় বরাবর ভাল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়া ছেলেটি কেন এমন চরম পথ বেছে নিল, তা বুঝতে পারছেন না স্কুলের শিক্ষক থেকে পরিবারের কেউই। ছোট ভাইয়ের রেজাল্ট-ভীতির কথা অবশ্য জানত এ বারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দিদি জ্যোৎস্না। এ দিন সে বলে, “কোনও গৃহশিক্ষক ছাড়াই ভাই লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। সব কিছুতেই খুব টেনশন করত। জানতেও পারল না যে চারটি বিষয়ে ‘এ’ আর বাকিগুলিতে ‘বি প্লাস’ পেয়ে ও পাশ করেছে।”
অভাবের সংসারে ছেলেই বড় ভরসা ছিল রেবা বণিকের। সেলাই করতে বসলে ছেলে সাহায্য করত। রান্নাতেও হাত লাগাত। রেবাদেবী বলেন, “রেজাল্ট নিয়ে ভয় ছিল খুব। আমাদের বাইরে পাঠিয়ে ভয়ে আত্মহত্যাই করে বসল।” বেলঘরিয়ার এডিসি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ছেলেটির দেহ ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। খারাপ ফলের ভয়েই ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।”
এই ধরনের প্রবণতা সম্পর্কে মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলেন, “অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্খা থেকেও এমনটা হতে পারে। বহু ক্ষেত্রেই এ ধরনের সমস্যা আত্মবিশ্বাস এবং ধৈর্যের অভাব থেকে হয়। তা ছাড়া, বাবা-মায়ের প্রত্যাশা সন্তানদের উপরে একটা বাড়তি চাপের কারণ হয়।” এগিয়ে চলার জন্য বাস্তব পরিস্থিতিকে মেনে নেওয়ার শিক্ষাটা ছোটবেলা থেকেই হওয়া জরুরি বলে মনে করেন নীলাঞ্জনাদেবী। |