মাধ্যমিকের রেজাল্টটাই জীবনের বড় প্রাপ্তি নয়, জীবনটা মানুষের কাজে লাগানোই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। তাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নয় গবেষক হতে চায় মাধ্যমিকে চতুর্থ স্থান পাওয়া উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়ার বাসিন্দা নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র বিল্বশিব বসু মল্লিক। বিল্বশিবের প্রাপ্ত নম্বর ৬৭৭।
স্কুলের শিক্ষক ও বন্ধুদের প্রিয়পাত্র বিল্ব’র অবশ্য নম্বর নিয়ে বিশেষ মাথা ব্যথা নেই। প্রশ্ন করার আগেই তার অকপট যুক্তি, ‘‘নম্বরটা কখনও শিক্ষার মাপকাঠি হতে পারে না। আমি জানি আমার থেকে অনেক কম নম্বর পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরা কোনও কোনও ক্ষেত্রে আমার থেকে অনেক বেশি মেধাবী। পরীক্ষার নম্বর দিয়ে কারও শিক্ষার মূল্যায়ন সম্ভব নয়।’’
বাবা শুভঙ্করবাবু কলেজের শিক্ষক। মা দিব্যশ্রীদেবী স্কুলশিক্ষিকা। এক মামা ভাবা পরমাণুকেন্দ্রে বিজ্ঞানী। গল্প, কবিতার বই পড়ার পাশাপাশি নিজেও লেখে বিল্ব। পড়তে ভাল না লাগলে বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট, টেবিলটেনিস খেলে। তবে বিল্ব’র হবি ফটোগ্রাফি। তার মতে, ‘‘স্মৃতি রোমন্থন করা যায় ফ্রেমবন্দি ছবিগুলোতে। আর আমার খুব ভাল লাগে স্মৃতিগুলো ধরে রাখতে।’’ সোমবারের খুশির ছবিগুলোও ক্যামেরাবন্দি করেছে সে। বিল্ব’র মনে হয় লেখাপড়াটা নিজে নিজে বা বন্ধুদের সঙ্গে গ্রুপ ডিসকাসনের মাধ্যমে করাটায় অনেক কাজে দেয়। নিজেও গৃহশিক্ষক ছাড়াই মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিয়েছে। পড়ার সময়টা যদি শুধু মন দিয়ে পড়া হয় তবে পাঁচ-ছ’ঘন্টাই যথেষ্ট বলেও মনে করে সে। বিল্ব’র প্রিয় বিষয় ফিজিক্যাল সায়েন্স ও অঙ্ক। বিজ্ঞান নিয়েই গবেষণা করবে এমনটাই ইচ্ছা তার। তবে এমন কিছু বিষয় যা মানুষের সেবায় লাগবে, সচেতনতামূলক। তবে এসব কিছুই প্রথাগত পাঠ শেষ করার পরে।
মুখ্যমন্ত্রী তার রেজাল্টের জন্য ফোনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিল্ব’র বক্তব্য, ‘‘এতে নিজের কাছেই নিজের প্রত্যাশা অনেকখানি বেড়ে গেল।’’ |