অর্থাভাবে নিজেরা বেশিদূর লেখাপড়া করতে পারেননি। চেয়েছিলেন দুই ছেলে যেন সেই অভাব পূরণ করতে পারে। বড় ছেলে ইতিমধ্যেই ডাক্তারি পড়ছে। সোমবার সকালে যখন জানতে পারলেন ছোট ছেলে কৃশানু এ বার মাধ্যমিকে শুধু ভাল ফলই করেনি, মেধা তালিকায় দশম স্থান পেয়েছে তখন চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি বাবা অজয় বসু ও মা কৃষ্ণাদেবী। টাকি রামকৃষ্ণ মিশন হাইস্কুলের ছাত্র কৃশান এ বার মাধ্যমিকে ৬৭১।
বসিরহাট মহকুমার টাকি স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা অজয়বাবু দোকানে দোকানে ঘুরে কাগজ-খাতা বিক্রি করেন। |
উপার্জনের বেশিরভাগটাই চলে যায় দুই ছেলের পড়ায়। বড় ছেলে কৌশিক দিল্লিতে এইমসে এমডি পড়ছে। কৃশানুও দদার মতো ডাক্তারি পড়তে চায়। দিনে ৬-৭ ঘণ্টা পড়া আর বাকি সময় হয় খেলা, নয়তো ফেলুদা, ব্যোমকেশে ডুবে যাওয়া, এটাই ছিল তার রোজনামচা। মাধ্যমিকে মেধাতালিকাতেই শুধু নয়, টাকির এই ছাত্রটি জাতীয় মেধা তালিকাতেও ২২তম স্থান পেয়ে পড়ার খরচ বাবাদ ৬০০০ টাকাবাতা পায়। মাধ্যমিকে এমন ফলের জন্য স্কুলের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞ কৃশানু। তাঁর কথায়, “ওঁরা সাহায্য না করলে এই ফল হত না।”
নিজের এই সাফল্য অবশ্য মা-বাবাকেই উত্সর্গ করতে চায় কৃশানু। সে জানায়, দিনের শেষে কাজ থেকে ফিরে বাবা জানতে চাইতেন পড়ার কোনও বিষয় নিয়ে সমস্যা আছে কি না। থাকলে রাতবিরেতেই ছুটে যেতেন শিক্ষকের কাছে। প্রধান শিক্ষক স্বামী অঘোরানন্দ বলেন, “দু’বছর আগে আমাদের স্কুলের ছাত্র তৌসিফ ইসলাম মাধ্যমিকে অষ্টম স্থান পেয়েছিল। তবে কৃশানু যে এত ভাল করবে তা বোঝা যায়নি। ওর জন্য আমরা গর্বিত।” |