এবিজি-বিদায়ের জের
হলদিয়ায় কম দরে পণ্য
খালাসে রাজি নয় কেউ

বিজি পর্বের রাহুগ্রাস যেন কাটছে না কলকাতা বন্দরের। আন্তর্জাতিক মানের এই পণ্য খালাস সংস্থাটি পাততাড়ি গোটানোর পর হলদিয়ার ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে যন্ত্রনির্ভর পণ্য খালাস ব্যবস্থা ফের চালু করতে পর পর দু’বার দরপত্র চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তার পরেও কোনও সংস্থাকে বরাত দেওয়া গেল না। কারণ সংস্থাগুলির দেওয়া সর্বনিম্ন দরে পণ্য নামানো হলেও বন্দরের লোকসান হত।
এক দিকে পণ্যের পরিমাণ কমে যাওয়া, অন্য দিকে ব্যবসা করার ‘স্থানীয় মূল্য’ চোকানো এই দুই কারণ দেখিয়ে হলদিয়ায় কম দরে কাজ করতে রাজি হচ্ছে না কোনও সংস্থা। এবিজি-র যে দশা হয়েছিল, তা-ও ভাবাচ্ছে অন্য পণ্য খালাস সংস্থাগুলিকে। তাই তারা বেশি টাকা চাইছে।
তা হলে উপায়? কলকাতা বন্দরের মুখপাত্র সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় বলেন,“সোমবার অছি পরিষদ দ্বিতীয় বারের জন্য ওই দুই বার্থের দরপত্র বাতিল করেছে। ঠিক হয়েছে তৃতীয় বার দরপত্র চাওয়ার আগে কিছু শর্তের পরিবর্তন করা হবে। তবে তার আগে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হবে। কারণ, এবিজি-র সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই তারা চলে গিয়েছে। এখন তার পরিবর্তন করতে হলে আইনজ্ঞদের পরামর্শ জরুরি হয়ে পড়েছে।”
বন্দর সূত্রের খবর, আমদানি-রফতানিকারীদের কাছ থেকে পণ্য খালাসের ফি হিসেবে হলদিয়া বন্দর টন প্রতি ২৩৭ টাকা নেয়। ২ এবং ৮ নম্বর বার্থে যন্ত্রের সাহায্যে পণ্য খালাসে বন্দরের কাছ থেকে টন প্রতি ৭৫ টাকা নিত এবিজি। ফলে প্রতি টন পণ্য খালাসে বন্দরের ১৫২ টাকা লাভ হত। কিন্তু এবিজি চলে যাওয়ার পর আর কেউ এত কম দরে পণ্য খালাসে রাজি হচ্ছে না।
বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসাব কষে দেখেছে, কোনও সংস্থা পণ্য খালাসে টন প্রতি ১২১.৩৬ টাকার কম নিলে তবেই বন্দর লাভ করতে পারবে। প্রথম বারের দরপত্রে তিনটি সংস্থা এসেছিল। তার মধ্যে টন প্রতি ২৪৫ টাকা সর্বনিম্ন দর দেয় টাটা গোষ্ঠীর টিএমআইএল। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষ এই দর দিতে রাজি হয়নি। ফলে প্রথম বারের টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। দ্বিতীয় বার সর্বনিম্ন দর দেয় ওসিএল-আইআরসি নামে ওড়িশার একটি সংস্থা। তারা ২ নম্বর বার্থে ১৭৫ টাকা এবং ৮ নম্বর বার্থে ১৭১ টাকা চেয়েছিল। বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসলে, তারা মাত্র ১ টাকা দর নামাতে রাজি হয়। ফলে সেই টেন্ডারও এ দিনের অছি পরিষদের বৈঠকে বাতিল করে দেওয়া হল।
বন্দরের কর্তারা অবশ্য সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে বেশ হতাশ। অছি পরিষদের বৈঠকে এ দিন যে হিসাব পেশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১২-১৩ সালে বন্দরের লোকসান হয়েছে ২৯৮.২২ কোটি টাকা। বন্দর মুখপাত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার ড্রেজিংয়ে ভর্তুকি বাবদ প্রাপ্য ৫০৮ কোটি টাকা দিয়ে দিলে বন্দরের ৮৯.৪৭ কোটি টাকা লাভ হত। চলতি বছরে বন্দরের পণ্য খালাসের পরিমাণও কমেছে। শেষ হওয়া আর্থিক বছরে কলকাতা (১.১৮ কোটি টন) ও হলদিয়ায় (২.৮০ কোটি টন) মাত্র ৪ কোটি টন পণ্য খালাস হয়েছে। গত বছরে এর পরিমাণ ছিল ৪.৩২ কোটি টন।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.