|
|
|
|
গুরুনাথই মালিক সুপার কিংসের, নিশ্চিত পুলিশ
নিজস্ব প্রতিবেদন |
আইপিএলের ফাইনাল মিটে যাওয়ার পরে সোমবারেও গড়াপেটা কাণ্ড নিয়ে নাটকের পর নাটক।
এক, বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন অস্বীকার করলেও পুলিশ নিশ্চিত, তাঁর জামাই গুরুনাথ মইয়াপ্পনই চেন্নাই সুপার কিংসের মালিক।
দুই, গুরুনাথ কাণ্ডের তদন্তে বোর্ডের নতুন কমিটির সদস্যদের সম্ভাব্য নাম প্রকাশ্যে আসা এবং কমিটির সাফল্য নিয়ে ক্রিকেটমহলের আগাম সন্দেহপ্রকাশ।
তিন, বোর্ড প্রেসিডেন্ট শ্রীনিবাসনের বিরুদ্ধে বিষেণ সিংহ বেদির বিস্ফোরণ। প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের হুঙ্কার, “এন শ্রীনিবাসন নামটাই ক্রিকেটের পক্ষে ক্ষতিকর। যে-ই ওর বিরুদ্ধে বলবে, তার ঠিকানা হবে আস্তাকুঁড়ে!”
চার, বিন্দু দারা সিংহ এবং গুরনাথের মধ্যে নতুন যোগসুত্র আবিষ্কার।
নাম: বিক্রম অগ্রবাল।
পরিচয়: হোটেল ব্যবসায়ী।
পাঁচ, মিডিয়ার প্রশ্নবাণে তিতিবিরক্ত বোর্ড প্রেসিডেন্ট। কলকাতা ও চেন্নাইয়ের মিডিয়া তাঁকে এতই ব্যতিব্যস্ত করেছে যে, প্রচারমাধ্যমকে ‘হিংস্র’ আখ্যা দিলেন শ্রীনিবাসন।
|
গুরুনাথ মইয়াপ্পন |
অথচ যে ঘটনা থেকে গোটা গড়াপেটা পর্বের সূত্রপাত, তার উৎসে কোনও ক্রিকেটার নন, ছিল সন্ত্রাসবাদীরা! দিল্লি পুলিশ এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনআইএ)-র যৌথ উদ্যোগে তদন্তের লক্ষ্য আসলে ছিল, সন্ত্রাসবাদীরা কোথা থেকে টাকা পয়সা পাচ্ছে, তা খুঁজে বার করা। আর তা খুঁজতে গিয়েই শান্তাকুমারন শ্রীসন্তদের স্পট ফিক্সিং কাণ্ডের হদিশ পায় পুলিশ। তা নিয়ে গোটা দেশ এখন উত্তাল। রোজই নতুন নতুন অস্বস্তির কাঁটায় রক্ত ঝরছে বোর্ড সভাপতি এন শ্রীনিবাসনের।
বোর্ডের তরফ থেকে সবে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে গুরুনাথ কাণ্ড খতিয়ে দেখার জন্য। শোনা যাচ্ছে, সদস্য হিসেবে সেখানে থাকছেন রবি শাস্ত্রী, বোর্ড কোষাধ্যক্ষ অজয় শিরকে ও হাইকোর্টের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। কিন্তু শাস্ত্রীরা কাজে নামার আগেই কমিটি নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়ে গিয়েছে ক্রিকেটমহলে। প্রাক্তন আইসিসি প্রেসিডেন্ট এহসান মানি স্পষ্ট দাবি তুলেছেন, শ্রীনিবাসনকে এখনই সরানো হোক। বলেছেন, “কিছু দিনের জন্য হলেও শ্রীনিবাসনের সরে দাঁড়ানো উচিত।” আরও এক ধাপ এগিয়ে বিষেণ সিংহ বেদি বলছেন, “টাকা যেমন কথা বলায়, তেমনই সরব মুখ বন্ধও করে দেয়।”
এই পরিস্থিতিতে সোমবার শ্রীনিবাসন সাংবাদিকদের বিদ্রুপের মুখে পড়েন নিজের শহরেই। তিতিবিরক্ত বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলে ফেলেন, “মিডিয়াই হিংস্র মনোভাব নিয়ে আমার পেছনে ঘুরছে। আমি সরছি না।” তখনও শ্রীনিবাসনের জানা ছিল না, তাঁর অস্বস্তির কাহিনিতে এমন নতুন নাটক থাকবে।
পুলিশ এ দিন বিক্রম অগ্রবাল নামের এক হোটেল-ব্যবসায়ীর সন্ধান পেয়েছে যিনি ছিলেন গুরুনাথ এবং বিন্দু দারা সিংহের যোগসূত্র। মুম্বই পুলিশ জেনেছে, গুরুনাথের সঙ্গে বিক্রমের পরিচয় আজকের নয়। সিএসকে মালিক তাঁকে চিনতেন বছর পনেরো ধরে। সিএসকে ছাড়া আইপিএলের অন্য টিমের গোপন তথ্যও বিক্রমকে পাচার করতেন গুরুনাথ। সোমবার সকাল থেকেই বিক্রম নিখোঁজ। কেউ কেউ বলছেন, সিবিআই তাঁকে জেরার জন্য তুলে নিয়ে গিয়েছে। তামিলনাড়ু পুলিশ তা অস্বীকার করছে। বরং বিক্রমের জন্য চেন্নাইয়ের বিভিন্ন হোটেলে হন্যে হয়ে ঘুরছে মুম্বই পুলিশ।
অস্বস্তির এখানেই শেষ নয়। কলকাতার সাংবাদিক বৈঠকে শ্রীনিবাসন বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেন, জামাই গুরুনাথের সঙ্গে চেন্নাই সুপার কিংসের সরাসরি কোনও যোগ ছিল না। ক্রিকেট নিয়ে প্রবল উৎসাহ ছিল বলেই নাকি গুরুনাথ সিএসকে-র ডাগআউটে থাকতেন! মুম্বই পুলিশ কিন্তু গুরুনাথের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে এমন প্রচুর তথ্য পেয়েছে, যা থেকে প্রমাণ হয়, গুরুনাথ সিএসকে-র মালিকই ছিলেন। তাঁর ভিজিটিং কার্ড থেকে আইপিএলের পরিচয়পত্র সব কিছুতেই মালিকানার অব্যর্থ প্রমাণ মিলেছে। এ দিন চেন্নাইয়ে গুরুনাথের প্রমোদতরীতে তল্লাশি চালিয়ে আরও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ, যা তদন্তকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শ্রীনিবাসন এ বার কী বলেন, শোনার অপেক্ষায় গোটা ক্রিকেটবিশ্ব।
|
জুয়া চক্রের চাঁইকে ধরতে তল্লাশি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
ধৃতদের জেরা করে কলকাতার বেটিং চক্রের এক চাঁইয়ের কথা জানা গিয়েছে। সোমবার রাত পর্যন্ত তার নাগাল মেলেনি বলে পুলিশি সূত্রের খবর। তল্লাশি চলছে। রবিবার আইপিএল ফাইনালের সন্ধ্যায় কলকাতা থেকে তিন জন ক্রিকেট-জুয়াড়িকে ধরে পুলিশ। তাদের মধ্যে আদিত্য দামানি ও রাজ শর্মা নামে দু’জনকে ধরা হয় বড়বাজার থেকে। আদিত্য ও রাজকে জেরা করে তাদের চক্রের চাঁইয়ের নাম মিলেছে। কলকাতার গোয়েন্দা-প্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, “সুমিত শর্মা নামে ওই বুকির খোঁজ চলছে। সে রাজের দাদা।” তদন্তকারীরা জানান, রাজ ও আদিত্যকে দিয়ে বেটিংয়ের টাকা তোলার কাজ করাত সুমিত। কলাকার স্ট্রিটে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই কাজ শুরু করেছিল তারা। |
|
|
|
|
|