|
|
|
|
ফল বেরোল মাধ্যমিকের |
|
দারিদ্রকে হারিয়ে কৃতী মনোজিত্ |
বাবা অশোক দে-র পান গুমটি রয়েছে। তা থেকে যে সামান্য আয় হয়, তা দিয়েই সংসার চলে। এর মধ্যে পড়েই মাধ্যমিকে ৬১৩ নম্বর পেয়েছে মনোজিৎ দে। বাড়ি মেদিনীপুরের বড়বাজারে। মেদিনীপুর টাউন স্কুলের এই ছাত্র ডাক্তার হতে চায়। তার কথায়, “ডাক্তার হয়ে গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই।” মা আলপনাদেবী গৃহবধূ। দুই ছেলে। মনোজিৎ ছোট। বড় ছেলে বিশ্বজিৎ এ বার উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে। ছোট্ট একটি ঘর। সেখানেই দিনগুজরান। আঁকতে ভালবাসে মনোজিৎ। সময় পেলেই বসে যায় আঁকার খাতা নিয়ে। আর এক ভালবাসা ক্রিকেট। বাড়িতে টিভি নেই। তাই আইপিএল দেখা হয়ে ওঠেনি। সে জন্য যে মন খারাপ হয়েছে, মানছে মনোজিৎ। আলপনাদেবী বলছিলেন, “যা আয় হয়, তাতে সংসারই চলে না। জানি না ছেলেদের কতদূর পড়াতে পারব।” ছাত্রের সাফল্যে তৃপ্ত টাউন স্কুলের প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তী। তিনি মানছেন, “দারিদ্র্যের মধ্যে থেকেও ও নিজের ইচ্ছেয় এই ফল করেছে। ওর জন্য আমাদের সকলের শুভেচ্ছা থাকল।”
|
|
|
রেজাল্ট হাতে: ফলপ্রকাশের পর মেদিনীপুর
কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্ররা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
ভিড় পর্ষদ
অফিসের সামনে |
|
গোয়েন্দা গল্পের পোকা মধুরিমা |
এ বারের মাধ্যমিকে পশ্চিম মেদিনীপুরে মেয়েদের মধ্যে সম্ভাব্য প্রথম মধুরিমা কারক। প্রাপ্ত নম্বর ৬৫৯। মেদিনীপুর মিশন গার্লসের এই ছাত্রীও ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়। সেই মতোই আগামী দিনে প্রস্তুতি নেবে কৃতী এই ছাত্রী। মধুরিমার কথায়, “আর একটু বেশি নম্বর পাব আশা করেছিলাম। উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করতে চাই।” মধুরিমারা মেদিনীপুর শহরের পুলিশ লাইনের আবাসনে থাকে। বাবা সুব্রত কারক পুলিশকর্মী। কাজ করেন জেলা পুলিশের কন্ট্রোলরুমে। মা লক্ষ্মীদেবী গৃহবধূ। মধুরিমা সর্বাধিক নম্বর পেয়েছে ভৌতবিজ্ঞানে, ৯৯। জীবনবিজ্ঞানে ৯৮, অঙ্কে ৯৮, ইতিহাসে ৯০, ভূগোলে ৯৭, ইংরাজিতে ৯২ এবং বাংলায় ৮৫। পড়াশোনা ছাড়াও গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। তার কথায়, “সময় পেলে গল্পের বই পড়ি। গোয়েন্দা গল্প পড়তেই বেশি ভাল লাগে।” সঙ্গে অবসরে গান শোনা, খেলা দেখা তো রয়েইছে। মিশন গার্লসের প্রধান শিক্ষিকা কৃষ্ণা নন্দী বলছিলেন, “ সত্যিও ও খুব ভাল মেয়ে। মেধাবী ছাত্রী। ওর ভবিষ্যৎ আরও ভাল হবে। শুভেচ্ছা থাকল।”
|
ফল ভাল হবে জানত সৌম্যদীপ |
এ বার মেধাতালিকা অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুরে মাধ্যমিকে সম্ভাব্য প্রথম সৌম্যদীপ বসু। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৬৫। সৌম্যদীপের কথায়, “ফল ভাল হবে জানতাম। আমি ডাক্তারি পড়ব।” সৌম্যদীপের বাড়ি খড়্গপুর শহরের বুলবুলচটিতে। খড়্গপুর সিলভার জুবলি হাইস্কুলের এই ছাত্র ছোট থেকে পড়াশোনায় মেধাবী। বাবা সিদ্ধার্থশঙ্কর বসু বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। মা সোমাদেবী গৃহবধূ। সৌম্যদীপ সব থেকে বেশি নম্বর পেয়েছে অঙ্কে, ৯৯। ভৌতবিজ্ঞানে ৯৭, জীবনবিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৫, ভূগোলে ৯৬, ইংরাজিতে ৯০ এবং বাংলায় ৯০। পড়াশোনা ছাড়াও ভাল লাগে ছবি আঁকতে। অবসরের সঙ্গী গল্পের আর টিভিতে ক্রিকেট। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলের সব খেলাই দেখেছে সৌম্যদীপ। তার কথায়, “মন দিয়ে পড়াশোনা করলে যে কেউ ভাল ফল করতে পারে। পড়ার সময়ে পড়লেই হল। উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করতে চাই।” সিলভার জুবলি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সিতিকন্ঠ দে বলছিলেন, “সৌম্যদীপ বরাবরই পড়াশোনায় ভাল। ওর ভবিষ্যৎ জীবন আরও উজ্জ্বল হবে।” |
|
|
|
|
|