|
|
|
|
পাঁচ বছর পর জঙ্গলমহলে ফিরল বই বোঝাই গাড়ি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
পাঁচ বছর বন্ধ ছিল ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি। প্রত্যন্ত গ্রামের গ্রন্থাগারগুলো সমস্যায় পড়েছিল। এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসল জেলা গ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ। আপাতত, একটি গাড়ি ভাড়া করেই চালু হল ‘মোবাইল লাইব্রেরি’ পরিষেবা। সোমবার ভাড়া গাড়িতে করে বই নিয়ে যাওয়া হয় জঙ্গলমহলের ৮টি গ্রন্থাগারে। ভাদুতলা নারী কল্যাণ পাঠাগার, সাতপাটি শীতলা পাঠাগার, জয়পুর নিউ তরুণ সঙ্ঘ পাঠাগার, গোয়ালতোড়ের নবীন সঙ্ঘ পাঠাগারে বই গিয়েছে এ দিন। তালিকায় রয়েছে নানা স্বাদের বই। যেমন, ‘কালবৈশাখীর রাত’, ‘ভিক্টোরিয়ার বাগান’, ‘এককুড়ি শিবরাম’ প্রভৃতি। সেই সঙ্গে সুস্থ থাকার সহজ উপায়, টবে ফল ও সব্জি চাষ নিয়ে লেখা বইও। |
|
বই তোলা হচ্ছে গাড়িতে। মেদিনীপুর গ্রন্থাগারে। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
জেলা গ্রন্থাগারের যুগ্ম-সম্পাদক বিমান গুপ্ত বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, মে মাস থেকেই পরিষেবা চালু করব। সেই মতো সোমবার তা চালু করা হল। আপাতত, মাসে অন্তত তিন দিন এই বইয়ের গাড়ি গ্রাম এবং শহরের গ্রন্থাগারগুলোয় পৌঁছবে।” তিনি আরও জানান, এই পরিষেবার জন্য বরাদ্দ গাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে অচল হয়ে গ্যারাজে পড়ে রয়েছে। কর্মীর সমস্যাও আছে। এ সবের দন্যই ২০০৮ সাল থেকে বন্ধ করে দিতে হয় ভ্রাম্যমাণ এই পরিষেবা। সম্প্রতি রাজ্য সরকার ‘মোবাইল লাইব্রেরি’র জন্য ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে। তারপরই গাড়ি ভাড়া নিয়ে পরিষেবা চালুর তোড়জোড় শুরু হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুরের সব মিলিয়ে ১৫৮টি গ্রন্থাগার রয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণ গ্রন্থাগার ১৪২টি, শহরের গ্রন্থাগার ১৫টি এবং জেলা গ্রন্থাগার একটি। বই কেনার জন্য প্রতিটি গ্রন্থাগারই বছরে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পায়। রাজ্য সরকারের গ্রন্থাগার দফতর এই অর্থ বরাদ্দ করে। তবে তা পর্যান্ত নয়। ফলে চাহিদা অনুযায়ী বই কেনা যায় না। যে কোনও গ্রন্থাগারেই বিভিন্ন বয়সের পাঠকেরা আসেন। কেউ গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। কেউ বা দেশ- বিদেশের লেখা নিয়ে প্রকাশিত বই। পাঠকদের কাছে পছন্দের বই পৌঁছে দিতেই এক দশকেরও বেশি সময় আগে মেদিনীপুরে ‘মোবাইল লাইব্রেরি’ চালু হয়। কোন এলাকার গ্রন্থাগারে কী বইয়ের চাহিদা রয়েছে, তার খোঁজ রাখেন জেলা গ্রন্থাগারের কর্মীরা। পরে ওই গ্রামীণ বা শহুরে গ্রন্থাগারে গাড়ি করে বই পৌঁছে দেওয়া হয়। একটা নির্দিষ্ট সময় পর ফের সেই গ্রন্থাগারে গাড়ি পৌঁছত। তখন আগের দেওয়া বই ফেরত নিয়ে নতুন বই দেওয়া হয়। এ ভাবেই পাঠকের কাছে পছন্দের বই পৌঁছে যায়।
জেলা গ্রন্থাগারে ১০ জন কর্মী থাকার কথা। রয়েছেন ৪ জন। ৩ জন অস্থায়ী কর্মীও আছেন। জেলা গ্রন্থাগারের যুগ্ম-সম্পাদক বিমান গুপ্ত বলেন, “কর্মীর সমস্যার কথা দফতরে জানানো হয়েছে। ‘মোবাইল লাইব্রেরি’র জন্য যে গাড়িটি ছিল, সেটি আর মেরামত করা সম্ভব নয়। নতুন গাড়ি কেনা না- হওয়া পর্যন্ত ভাড়া গাড়িতে করেই গ্রন্থাগারগুলোয় বই পৌঁছনো হবে।” ডিস্ট্রিক্ট ইনোভেটিভ ফান্ড থেকে নতুন গাড়ি কেনার জন্য যাতে অর্থ বরাদ্দ করা হয়, সেই জন্য দরবার করা হয়েছে। |
|
|
|
|
|