সড়ক পরিকাঠামোর অভাবের কথা স্বীকার করে নিয়ে নয়া শিল্পনীতির খসড়ায় রাস্তা তৈরিতে জোর দিয়েছে রাজ্য। অথচ শুধু জমির অভাবেই প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে ডানকুনি থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণ নিয়ে।
জমি সমস্যা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা রেল ইন্ডিয়া টেকলিক্যাল অ্যান্ড ইকনমিক সার্ভিসেস (রাইটস)। জমি জটেই পুরনো দরপত্র কার্যত বাতিল করে সড়ক উন্নয়নের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার রিপোর্ট তৈরির জন্য উপদেষ্টা সংস্থাগুলির কাছ থেকে ফের দরপত্র চেয়েছে রাজ্য সড়ক উন্নয়ন নিগম। জমির অভাবে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজও আটকে।
সোমবার ইন্ডিয়ান চেম্বারের এক সভায় সড়ক উন্নয়নে জমি সমস্যার প্রসঙ্গ ওঠে। গোড়ায় অবশ্য রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জমি না-পাওয়ার দায় জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের উপরেই চাপিয়ে দেন। সভার পরে তিনি বলেন, “আমরা জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে। ওঁরা চিঠি দিয়ে জমি চেয়েছেন। কিন্তু তাতে সমস্যা মেটে না। স্থানীয় স্তরে আলোচনা করে জমিদাতাদের বোঝাতে হয়।”
শিল্পমহলের অভিযোগের তির অবশ্য রাজ্য সরকারের দিকে। ডানকুনি থেকে খড়্গপুর পর্যন্ত ১১১.৪ কিলোমিটার করে দু’দিকের জাতীয় সড়ক চার থেকে ছয় লেনে সম্প্রসারণের বরাত পেয়েছে অশোক বিল্ডকন। কোলাঘাটের নতুন সেতু নির্মাণের দায়িত্বেও ছিল তারা। এ দিন সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (প্রজেক্টস) মোহিত কুমার কর জানান, জমি পেতে চুক্তি মতো রাজ্যের সহযোগিতা মিলছে না। দেড় বছর আগে জমি অধিগ্রহণের প্রাথমিক পর্ব শুরু হলেও প্রায় অর্ধেক জমিই এখনও মেলেনি। বহু এলাকায় জমি জবরদখল হয়ে রয়েছে। উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় ‘হট মিক্স প্লান্ট’-এ স্থানীয় সিন্ডিকেটের দাপটে ব্যাহত হচ্ছে প্রকল্পের কাজ।
নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, কাজ শেষ করতে তাঁদের হাতে রয়েছে ১৬ মাস। গোড়ায় প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছিল ২০১৭ কোটি টাকা। মাস তিনেকের মধ্যে জমি সমস্যার সমাধান না-হলে খরচ প্রায় ২০০ কোটি টাকা বেড়ে যাবে বলে সংস্থার আশঙ্কা।
রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণেও জমি সমস্যার অভিযোগ উঠেছে। তবে নিগমের এমডি মনোজ অগ্রবাল জানান, ডানকুনি-কল্যাণী দুটি পর্যায়ে রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণে ৫০০ কোটি খরচ হবে। সেই জমি তাঁদের হাতে আছে। জুলাইয়ে ডানকুনি-চন্দননগর ও অগস্টে চন্দননগর-কল্যাণী সম্প্রসারণ প্রকল্প শুরু হবে। |