পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা আজ
কাজিয়া এ বার পুলিশকর্তাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে
নিরাপত্তা বাহিনী পাওয়া ও তার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যেই আজ, সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে।
এমনিতেই পঞ্চায়েত ভোটের সময়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা বাহিনী কোথা থেকে আসবে তা নিয়ে কমিশন এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে বিরোধ এখনও মেটেনি। এখন আবার নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হয়ে যাওয়ার পরে পুলিশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষে নতুন করে বিরোধ বেধেছে। দুই পক্ষই বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথা বলছে। ফলে এ নিয়েও আর এক দফা আইনি টানাপোড়েনের ফাঁকে পড়তে পারে পঞ্চায়েত নির্বাচন।
রাজ্যের সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকায় নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাবে কমিশনের বিজ্ঞপ্তি জারির সঙ্গে সঙ্গেই। সেই সূত্রে কমিশনের এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, “নির্বাচনী বিধি কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য পুলিশের ডিজি-সহ পঞ্চায়েত এলাকার সব পুলিশ বাহিনী আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।” যদিও রাজ্য সরকার কমিশনের এই দাবি মানতে নারাজ। মহাকরণ সূত্রের মতে, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে সংবিধানে এমন কথা বলা থাকলেও রাজ্য নির্বাচন কমিশনগুলির ক্ষেত্রে তা কার্যকর নয়। রাজ্য সরকারের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “পুলিশের পদস্থ কর্তারা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আওতায় আসবেন বলে আমরা মনে করছি না। বিষয়টি নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছি আমরা।”
ভোটের সময় পর্যাপ্ত বাহিনী পাওয়া নিয়েও কমিশন-রাজ্য সংঘাত ফের আদালতে গড়ানোর আশঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। মহাকরণ সূত্রের খবর, ঝাড়খণ্ড, বিহার, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ ও অসমের কাছ থেকে গড়ে ৩০-৩৫ কোম্পানি করে বাহিনী চেয়ে রেখেছে রাজ্য। কিন্তু কোনও রাজ্য থেকেই এখনও সবুজ সঙ্কেত পায়নি পশ্চিমবঙ্গ। অথচ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া। এবং ওই সময় থেকেই সশস্ত্র বাহিনী চেয়ে রেখেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার কী ভাবে সেই নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যবস্থা করবে তা নিয়ে রবিবার পর্যন্ত রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের কোনও চিঠি পায়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে ওই চিঠি আসুক বা না আসুক কমিশন আজ, সোমবার বিকেলের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দেবে বলে ঠিক করেছে।
রাজ্য সরকার যদি পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করতে না পারে তবে আগামী ৩ জুন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের শরণাপন্ন হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। হাইকোর্টকে তারা জানাবে, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ মেনে তারা ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে ভোট-প্রক্রিয়া শেষ করতে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। কোথা থেকে নিরাপত্তা বাহিনী আসবে, সেটা হাইকোর্টকেই ঠিক করে দিতে বলা হবে বলে কমিশন সূত্রের খবর।
রাজ্য সরকার ঘোষণা করে রেখেছে, প্রথম ধাপে ২ জুলাই দক্ষিণবঙ্গের ন’টি জেলায় ভোটগ্রহণ হবে। পরের দুই ধাপে ৬ জুলাই এবং ৯ জুলাই চারটি করে জেলার ভোটগ্রহণ হবে। সেই মতো কমিশন আজ, সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করলে ন’টি জেলায় মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরু হবে বুধবার থেকে। কমিশন বাহিনী চায় তখন থেকেই। প্রথম দফার ভোটের জন্য শুধু বুথ এবং ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে লাগবে ৫০ হাজার সশস্ত্র পুলিশ ও ২৬ হাজারের মতো কনস্টেবল। এর বাইরে এলাকাভিত্তিক তল্লাশি চালাতে আরও কয়েক হাজার পুলিশ লাগবে।
পর্যবেক্ষকদের ব্যাপারেও এ বার বাড়তি সতর্ক রাজ্য নির্বাচন কমিশন, এত দিন মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া হয়ে যাওয়ার পরেই সুষ্ঠু ভোটগ্রহণের স্বার্থে পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ করা হত। এ বার পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরুর দিন থেকেই। সেই মতো শনিবার প্রথম ধাপের ২১০ জন পর্যবেক্ষককে শিশির মঞ্চে এনে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়েছে কমিশন। ৩১ মে, শুক্রবার বাকি দুই পর্বের পর্যবেক্ষকদের ডাকা হয়েছে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য। প্রত্যেক পর্যবেক্ষককে একটি করে সিম কার্ড দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁরা সব সময় কমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন।
কমিশনের পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষকদের বলে দেওয়া হয়েছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার জায়গায় যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে কি না, এলাকায় গিয়ে তা খতিয়ে দেখতে হবে। শুধু মনোনয়ন জমা দেওয়ার কেন্দ্রে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করাই নয়, প্রার্থীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পেলে দরকারে তাঁর বাড়িতে গিয়েও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিতে হবে। অর্থাৎ, রাজ্যের সব রাজনৈতিক দলের প্রত্যেক প্রার্থী যাতে নির্বিঘ্নে মনোনয়ন পেশ করতে পারে, তা নিশ্চিত করার জন্যও উদ্যোগী হচ্ছে কমিশন।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.