খামের মধ্যে ভরা এক কিশোরীর একাধিক নগ্ন ছবি। সঙ্গে লেখা, ‘এই কিশোরীর থেকে সাবধান।’ এমন খাম পৌঁছেছে বসিরহাট মহকুমার বেশ কিছু ক্লাবে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ওই কিশোরীর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বেশ কিছু মেয়ের ‘সর্বনাশ’ হয়েছে। ওই কিশোরীর প্ররোচনায় কলকাতার হোটেল-লজে গিয়ে দেহ ব্যবসায় নেমেছে তারা। কিশোরীর নাম-পরিচয়ও লেখা হয়েছে। দেগঙ্গার এক মহিলা পাঠিয়েছেন চিঠি। সেগুলি পাঠানো হয়েছে বারাসতের পোস্টঅফিস থেকে। অল্প বয়সী ছেলে-মেয়েরা কেউ যাতে ওই কিশোরীর খপ্পরে পড়ে ভবিষ্যত্ নষ্ট না করে, সে ব্যাপারে সচেতন করতেই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি পত্রলেখিকার।
কিন্তু পত্রলেখিকার উদ্দেশ্য আদৌ কতটা সত্, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই কিশোরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ যদি সত্যি হয়েও থাকে, সে ক্ষেত্রেও এ ধরনের ছবি-চিঠি পাঠানো কতটা নৈতিক কাজ, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বসিরহাটবাসীর একটা বড় অংশই অবশ্য মনে করেন, পত্রলেখিকার এই কাজ অত্যন্ত অনুচিত। ওই কিশোরী সম্পর্কে তাঁর কোনও অভিযোগ থাকলে তিনি আইনের দ্বারস্থ হতে পারতেন। নগ্ন ছবিগুলি ক্লাবের গণ্ডি ছাড়িয়ে ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষের কাছেও পৌঁছেছে। যা প্রবল আপত্তিকর বলে মনে করছেন বসিরহাটের নাগরিক সমাজ। এ ভাবে এক কিশোরীর সম্মানহানি অত্যন্ত অনুচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
এখনও এ ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি পুলিশের কাছে। যদিও নিজে থেকেই (সুয়ো মোটো) তদন্ত শুরু করেছে তারা। পত্রলেখিকার সন্ধান চলছে। কিশোরীর নগ্ন ছবিগুলি কম্পিউটারে ‘সুপার ইম্পোজ’ করে বানানো বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। বসিরহাট ও দেগঙ্গার সাইবার কাফেগুলিতে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ এ ক্ষেত্রে দোষীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করতে পারে? উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “এ ধরনের ছবি বিলি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
তদন্তকারী পুলিশ অফিসারেরা জানিয়েছেন, এ ক্ষেত্রে দোষীদের আইপিসি-র ২৯২ ও ২৯৩ ধারায় (সাইবার ক্রাইম ও অশ্লীল ছবি বিলি) ৭ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। |