বাম আমলে এ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীরা যখন মনোনয়ন জমা দিতে পারতেন না, তখন তাঁদের সাহায্যের আশ্বাস দিতেন সিপিএম নেতারা। তাঁরা বিরোধীদের প্রার্থী খুঁজে দেওয়ার কথাও বলতেন। বামেরা এখন বিরোধী। শাসক তৃণমূলের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এ বার সেই একই সুরে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে সিপিএমকে সাহায্যের আশ্বাস দিলেন!
রাজ্য সরকারের দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে রবিবার গোবরডাঙায় এক জনসভায় তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পর্যবেক্ষক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “আমার পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মানুষের ভোট পেতে চাই। ওদের (সিপিএম) কেউ মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারলে লিখিত ভাবে জানাক। আমরাই পুলিশ প্রহরার ওদের মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেব।”
এ দিনের জনসভা থেকে গোবরডাঙায় কার্যত পঞ্চায়েত ভোটেরই প্রচার শুরু করল তৃণমূল। জ্যোতিপ্রিয়বাবু দাবি করেন, “ডিআইবি-র রিপোর্ট অনুযায়ী এই জেলায় পঞ্চায়েত ভোটে ৫০ শতাংশ আসনে সিপিএম প্রার্থী খুঁজে পাচ্ছে না। সিপিএমের নির্দেশ, গ্রামীণ এলাকাগুলিতে প্রার্থী খুঁজে পাওয়া না গেলে ওদের লোকাল ও জোনাল কমিটির সম্পাদকদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াতে হবে।” |
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, “আমার অবশ্য কাউকে ভয় দেখাচ্ছি না। আধা সামরিক বাহিনীর জন্য সিপিএম মায়াকান্না কাঁদছে। পুলিশ সুপারের অফিসে ধর্না দিয়েও আমরা ২০০৮ সালের নির্বাচনে এই জেলায় ১১০০ আসনে প্রার্থী দিতে পারিনি। কিন্তু আমরা ওই খেলায় বিশ্বাসী নই।”
জ্যোতিপ্রিয় সিপিএমের লোকাল বা জোনাল কমিটির সম্পাদকদের ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে যে নির্দেশের কথা এ দিন বলেছেন, তা উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। দলের জেলা নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ অমিতাভ নন্দী বলেন, “ওই ধরনের কোনও নির্দেশ নেই। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সব আসনেই আমরা প্রার্থী পেয়েছি। ওঁর (জ্যোতিপ্রিয়বাবুর) বদান্যতার দরকার নেই। ওঁরা ভোটে সন্ত্রাস না করলে ফলে সব টের পাওয়া যাবে।”
খাদ্যমন্ত্রী অবশ্য পঞ্চায়েত ভোটে জয় নিয়ে নিশ্চিত। তিনি বলেন, “১৩ জুলাই ভোট গণনার পরে ওদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজতে হবে। বারাসতের কাছারি ময়দানে বিজয় উত্সব করার দিনও আমরা নির্দিষ্ট করে ফেলেছি।” জনসভায় জ্যোতিপ্রিয়বাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং উদ্বাস্তু পুনর্বাসন দফতরের মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর। |