রাস্তা তো নয়, এ যেন আস্ত ডোবা। শুনতে অবাক লাগলেও কান্দির বড়ঞা ব্লকের ডাকবাংলো থেকে বাহাদুরপুর মোড় হয়ে পান্তটিয়া যাওয়ার ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাজ্য সড়কের এমনই দশা।
পিচের চাদর উঠে গিয়ে বড় বড় খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। যা দেখে ছোটখাটো ডোবা ছাড়া অন্য কিছু মনে হবে না। গত দু’ বছর ধরে এই দশা। রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য বারবার দাবি জানানো হলেও কোনও নজর দেয় না পূর্ত দফতরের কর্তাব্যক্তিরা, এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের। রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ার জন্য ক্ষুব্ধ বড়ঞা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কংগ্রেসের কৃষ্ণেন্দু রায়। তিনি বলেন, “ওই রাস্তা যাতায়াতের অযোগ্য। বারবার পূর্ত দফতরে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দাবি জানানোর পরও কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয় না।” |
ডাকবাংলো মোড় থেকে শুরু খানাখন্দ। বাজারের মাঝে রাস্তার পিচের চাদর উঠে গিয়ে মাটি বেরিয়ে গিয়ে গর্ত হয়ে আছে। একই অবস্থা সোনাইমোড়, নারায়ণপুর মোড় থেকে সাহেবনগর পর্যন্ত। সামান্য বৃষ্টি হলেই জল থই থই করে। এ ছাড়া ওই রাস্তা দিয়ে ময়ূরাক্ষী নদীর দু’টি বালির ঘাট আছে। সেখান থেকে বালি বোঝাই করে ট্রাকগুলি ফেরার সময় বালি থেকে জল পড়ে রাস্তাটি বছরভর জল-কাদায় ভরে থাকে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতাল। ওই হাসপাতালে চিকিৎসা করতে যেতে হয় এই রাস্তা দিয়েই। রাস্তাটি বেহাল থাকায় রোগী নিয়ে যাতায়াত করতে হিমসিম খেতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দা দীনেশ মণ্ডল, সাইদুল শেখরা বলেন, “এলাকার রাস্তার এই বেহাল দশার বিষয়ে কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয় না। বাজার-হাট থেকে চিকিৎসা সব কিছুই এই রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। কোনও কিছুতেই কিছু হয় না।”
পূর্ত দফতরের দাবি, ওই রাস্তা দিয়ে মূলত বালি বোঝাই ট্রাকের যাতায়াত বেশি। ট্রাকের বালি থেকে জল পড়ে রাস্তা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই রাস্তাটি সংস্কার করতে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ত দফতর। পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, ২০০১ সালে ওই রাস্তাটি সংস্কার হয়েছিল। কিন্তু ভারী যানবাহন চলার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই রাস্তাটির পিচের চাদর উঠে যায়। বর্তমানে ওই রাস্তাটির মধ্যে যে সব এলাকায় বালির ঘাট আছে সেই সব এলাকা চিহ্নিত করে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা কংক্রিটের তৈরি করা হবে। পূর্ত দফতরের মুর্শিদাবাদ হাইওয়ে ডিভিশন দু’ নম্বরের আধিকারিক অলোকনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাস্তাটি সত্যিই চলাফেরার অযোগ্য হয়ে উঠেছে। আমরা দ্রুত এই রাস্তার কাজ শুরু করব। প্রাথমিক ভাবে খানাখন্দগুলি ভরাট করে যাতায়াতের যোগ্য করে তোলা হবে, পরে ভাল ভাবে কাজ হবে।” কিন্তু এত দিন না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে নিরুত্তর ওই পূর্তকর্তা।
|