রাস্তার কোথাও বড় বড় গর্ত। কোথাও বা পিচের চাদর উঠে গিয়েছে। এমনই অবস্থা মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমার বড়ঞা থানার আন্দির মোড় থেকে বেলগ্রাম হয়ে সনকপুর মোড় পর্যন্ত প্রায় দশ কিলোমিটার রাস্তার। অথচ যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই সড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পণ্য আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রেও এই রাস্তাই মূলত ব্যবহৃত হয়। এলাকাবাসীরা জানান, তিন বছর ধরে প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংস্কার হয়নি রাস্তার। রাস্তার এই বেহাল অবস্থায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দা থেকে পরিবহণ ব্যবসায়ীরাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই রাস্তা ধরেই এলাকার পণ্য পরিবহণ ব্যবসায়ীরা বীরভূমের রামপুরহাট মহকুমার পাথর খাদান থেকে পাথর, মোরাম নিয়ে আসেন। সেই পণ্য চলে যায়, মুর্শিদাবাদ জেলা-সহ লাগোয়া বর্ধমান জেলায়। তবে এই রাস্তা দিয়ে যে শুধু পণ্য বোঝাই যান চলাচল করে তা নয়। ওই রুটে কান্দি রামপুরহাট ভায়া তারাপীঠ হয়ে সাতটা বাস চলাচল করত। এমনকী বহু পর্যটক তারাপীঠ মন্দিরে যাওয়ার জন্য এই রাস্তাই ব্যবহার করতেন। কিন্তু বেহাল রাস্তার জন্য গত তিন বছর ধরে ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খুঁড়িয়ে চলছে পণ্য পরিবহণ। |
ওই রাস্তা দিয়ে পাথর বোঝাই ট্রাক নিয়ে যান রফিক শেখ। তিনি বলেন, “রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো অসম্ভব। রাস্তার বড় গর্ততে গাড়ি পড়লে যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে।”
কিন্তু ওই রাস্তার বিকল্প কোনও রাস্তা রয়েছে কি? পণ্য ব্যবসায়ীদের মতে, ওই রাস্তা দিয়ে কান্দি থেকে রামপুরহাটের খাদানের দূরত্ব ৪৫ কিলোমিটার। অন্য রাস্তা যেমন খরগ্রাম ব্লকের পারুলিয়া অথবা জয়পুর হয়ে কান্দি আসতে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার ঘুরপথে যাতায়াত করতে হয়। ফলে সময়ের সঙ্গেই জ্বালানিরও বেশি খরচ হয়। রাস্তার দশ কিলোমিটার রাস্তা মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের অর্ন্তগত। তবে বাকিটা বীরভূম জেলা পরিষদের অর্ন্তগত। বীরভূম জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ রাস্তা সংস্কার করলেও মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে উদাসীন।
কান্দি মহকুমা ট্রাক মালিক সমিতির সম্পাদক ও কান্দি বাস সিন্ডিকেটের সহ-সভাপতি ফুলু মিঁয়া বলেন, “রাস্তাটি মেরামত করার জন্য বারবার দাবি জানানো হলেও জেলা পরিষদ কোন উদ্যোগ নেয়নি। এর আগে ওই রাস্তা দিয়ে যে সাতটি বাস চলত, রাস্তার খারাপ অবস্থার জন্য তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পণ্য পরিবহণ ব্যবসা।” সমস্যার কথা স্বীকার করে মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “রাস্তাটি মেরামতের জন্য আমরা সমীক্ষা করছিলাম। প্রায় ছয় থেকে সাত কোটি টাকা খরচের রিপোর্ট আমরা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও উত্তর পাইনি।”
|