আবগারি দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
নামেই তল্লাশি, রমরমা বাড়ছে চোলাই-মাদকের
মাঝেমধ্যেই অভিযান হয়। চলে ধরপাকড়। এলাকাবাসীর উদ্যোগেও ভাটি ভাঙা হয়। নষ্ট করা হয় লিটার লিটার মদ। তারপরেও অবশ্য পশ্চিম মেদিনীপুরে রমরম করে চলছে চোলাই মদের কারবার। জাঁকিয়ে বসছে বেআইনি চরস, হেরোইন, হাঁড়িয়ার ব্যবসা। মাদকের অন্ধকারে ডুবছে যুব-সমাজের একাংশ। দরিদ্র পরিবারে সঙ্কট আরও বাড়ছে। জেলায় বিষমদে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে একাধিক বার। এমন কিছু ঘটলে হইচই হয়। তারপর সব চুপচাপ। যদিও জেলা আবগারি দফতরের সুপারিন্টেনডেন্ট তন্ময় বিশ্বাসের দাবি, “বেআইনি চোলাই ও মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত তল্লাশি চালানো হয়। মদ নষ্ট করা হয়।”
আবগারি দফতর সূত্রে খবর, জেলায় সব থেকে বেশি চোলাই তৈরি হয় খড়্গপুরের বর্গাই ও নানকারে। এই এলাকায় চোলাই তৈরি ক্ষুদ্রশিল্পের আকার নিয়েছে। ঘরে ঘরে এই কারবার চলে। চোলাইয়ের ভাটি রয়েছে নয়াগ্রাম থানার ধোবা গোবিন্দপুর, মুগপাহাড়ি, নিমাইনগর-সহ একাধিক এলাকায়। অনেক জায়গায় আবার নকল বিলিতি মদ তৈরি হচ্ছে। কেশিয়াড়ির খাজরা, খড়্গপুরের সুভাষপল্লি, খরিদা, মালঞ্চ, গোপালি তো রয়েছেই। ঘাটালের দাসপুরেও এরকম একাধিক কারখানা রয়েছে।
গাঁজা, চরস, হেরোইনের মতো মাদকের বাড়বাড়ন্ত আবার খড়্গপুরে। বর্তমানে মেদিনীপুর শহরেও এই ব্যবসা ডালপালা মেলেছে। এছাড়া দাঁতন, বেলদা, কেশিয়াড়ি, চন্দ্রকোনা রোডের মতো কিছু এলাকায় এই ব্যবসা চলে। আবগারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পুটু, রেহানা, আজাদ, মন্টু, কেদার, বুলবুলের মতো ২৪ জন স্মাগলারের একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। এদের ধরতে পারলেই এই চক্রকে থামানো যেত। কিন্তু তালিকা তৈরির পর কাজ আর এগোয়নি। ফলে, মাদকের ব্যবসা সহজেই ছড়াচ্ছে।
জানা গিয়েছে, প্রথমে নিখরচায় দু’-চারদিন মাদক খাইয়ে অল্পবয়সী ছেলেদের আসক্ত করা হচ্ছে। তারপর তাদের মাধ্যমেই বিক্রি করা হচ্ছে মাদক। এ ভাবেই পেডলার বাড়িয়ে চলেছে স্মাগলাররা। এক সময় যেখানে খড়্গপুর আইআইটি সংলগ্ন পুরীগেট ছিল মাদক বিক্রির একমাত্র এলাকা। এখন মেদিনীপুর-খড়্গপুর শহরের অন্যত্র ছাড়িয়ে তা পৌঁছে যাচ্ছে গ্রামীণ এলাকাতেও।
মদের দোকান, পানশালার লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ধর্ম প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অদূরে গড়ে উঠছে পানশালা। কোথাও আবার লাইসেন্স নবীকরণ না করিয়েই মদের পাইকারি ব্যবসা চলছে। কোনও দোকান সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে অভিযোগ দায়ের করার কথা। কিন্তু এ রকম ঘটনা কমই হয়। এ ক্ষেত্রে আবগারি দফতরের কর্মী-আধিকারিক ও ব্যবসায়ীদর মধ্যে আঁতাতের অভিযোগ রয়েছে। সে জন্যই আবগারি দফতরের ঝাড়গ্রাম, ঘাটাল, খড়্গপুরের (পূর্ব) মতো সার্কেলে ২০০৯-১০ ও ২০১০-১১ তে কোনও অভিযোগই হয়নি! বেলদা সার্কেলে আবার ওই দুই আর্থিক বছরের এরকম কোনও নথিই রাখা হয়নি! আবগারি দফতরের এমন ভূমিকার জন্যই মদ ও মাদক ব্যবসার রমরমা বাড়ছে বলে সংশ্লিষ্ট সকলের অভিমত।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.