তাঁর টিম চেন্নাই সুপার কিংস আইপিএলের ছ’বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে কঠিন সঙ্কটের খাদে ডুবে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গেও অভূতপূর্ব ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে গড়াপেটার কলঙ্ক। রাহুল দ্রাবিড় দু’দিন আগে এই ইডেনে বসেই বলে গিয়েছেন, গড়াপেটার দাওয়াই কী কী হতে পারে। আর এই গভীর অন্ধকার সময়ে তিনি মহেন্দ্র সিংহ ধোনি স্পিকটি নট!
আইপিএল ফাইনালের চব্বিশ ঘণ্টা আগে সাংবাদিক সম্মেলন করতে আসেননি। টিমের তরফ থেকে বিবৃতি পড়ে শুনিয়েছিলেন সিএসকে কোচ। ধোনির অনুপস্থিতির কারণ হিসেবে শনিবার বলা হয়েছিল, বৃষ্টির জন্য টিম হোটেলেই থেকে গিয়েছে। কিন্তু ফাইনালের পরের সাংবাদিক সম্মেলন করতে তো আসার কথা সিএসকে অধিনায়কের। কোথায় কী? রবিবার মাঝরাতেও টিমের প্রতিনিধি হিসেবে এলেন সেই স্টিভন ফ্লেমিং। আজ কেন এলেন না এমএসডি? প্রশ্ন শুনে ফ্লেমিংয়ের ছোট্ট, শুকনো জবাব, “ও তো মিডিয়ার সামনে খুব একটা আসে না!” |
এ বারও অধরা। ছবি: উৎপল সরকার |
মিডিয়ার সঙ্গে যে ধোনির সম্পর্ক খুব মাখোমাখো নয়, সাধারণ ক্রিকেট জনতার এত দিনে জানতে বাকি নেই। তাই বলে ভারতীয় ক্রিকেটের চরম সঙ্কটমুহূর্তেও তিনি নিজেকে এ ভাবে গুটিয়ে রাখবেন? প্রকাশ্য কোনও অবস্থান নেবেন না ‘মিস্টার ইন্ডিয়ান ক্রিকেট’? ম্যাচের পর শুধু টিভিতে “আমাদের ব্যাটিং ব্যর্থ হয়েছে। হাসি আর রায়না দারুণ দুটো বলে আউট হয়েছে। কিন্তু বাকিদের শট বাছাই খুব হতাশাজনক,” গোছের কথা বললেই কি তাঁর দায়বদ্ধতা শেষ হয়ে যায়? না রাজীব শুক্লর হাত থেকে সিএসকে-র পক্ষ থেকে ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড নিতে যাওয়া পর্যন্তই তাঁর দায়িত্ব সীমাবদ্ধ?
পরপর দু’বার আইপিএল ট্রফি তো হাতছাড়া হলই। রবিবার রাতে যেন শ্বশুরবাড়ির শহরের ভালবাসার একটা বড়সড় ভাগও হারিয়ে বসলেন এমএসডি। ভারতীয় ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এক জন যেমন এ দিন বলছিলেন, “রাহুল দ্রাবিড় তো প্রেস কনফারেন্সে এসে স্পট-ফিক্সিং নিয়ে এত কিছু বলে গেল। আর তুমি ইন্ডিয়া ক্যাপ্টেন হয়েও দু-দু’বার সাংবাদিক সম্মেলনে এলে না কেন?”
ভারতীয় ক্রিকেটের ‘সুপারহিট’ জুটি ধোনি-শ্রীনির যোগসূত্রটা যেন এ দিনের পর থেকে আরও শক্তপোক্ত হয়ে গেল। শ্রীনিবাসন যেমন বোর্ড প্রেসিডেন্টের চেয়ারে থেকেও চরম ধিকৃতদের তালিকায় নাম লেখালেন, ধোনিও তো অনেকটা সে রকমই। তাঁর নেতৃত্ব থেকে গেল। কিন্তু সম্মান? টি-টোয়েন্টি রাজ্যপাটের সঙ্গে বোধহয় রবিবারের ইডেনে সেটাও ফেলে এলেন! |