রাজ্যে ফের বাড়তে পারে বিদ্যুতের মাসুল।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের মৃল্যবৃদ্ধি করতে রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরি কমিশন) কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন বিদ্যুৎ নিগম কর্তৃপক্ষ। নিগমের তরফে গড়ে ৮৬.১২ % মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ কথা স্বীকার করেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যান মনোরঞ্জন কর্মকার।
এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনও প্রয়োজন রয়েছে কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি মনোরঞ্জনবাবু। তিনি জানিয়েছেন, ওই প্রস্তাবের ‘স্বপক্ষে’ কর্মীদের বেতনবৃদ্ধি, প্রাকৃতিক গ্যাসের ক্রমবর্ধমান দাম, রাজ্যের বাইরে থেকে বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনার খরচের কথা উল্লেখ করেছে বিদ্যুৎ নিগম। সে সব যুক্তি গ্রহণযোগ্য কি না, তা দেখছে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সংস্থার চেয়ারম্যান বলেন, “মাসুল বৃদ্ধি নিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এক মাসের মধ্যেই এ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, গত পাঁচ বছরের তুলনায় এ বার অনেকটাই বেশি হারে (৮৬.১২ %) বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে নিগম। গত বার ৪৬% মাসুল বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিল নিগম। তার প্রেক্ষিতে বিদ্যুতের দাম ১৭% বৃদ্ধি করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যে এ মুহূর্তে বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় জোগান অনেক কম। বিদ্যুৎ নিগমের কর্তা নীলাদ্রি শেখর চক্রবর্তী জানান, রাজ্যে প্রতিদিন গড়ে ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়। বিদ্যুৎ নিগম গড়ে ১০০ মেগাওয়াট উৎপাদন করে। তাতেও ১০০ মেগাওয়াট ঘাটতি থেকেই যায়। ওই ঘাটতি মেটাতে রাজ্যের বাইরে থেকে সর্বাধিক ৬০-৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ নিতে পারে নিগম। তাতে দিনে ৩০-৪০ মেগাওয়াট ঘাটতি থেকেই যায়। বিদ্যুৎমন্ত্রী মানিক দে জানিয়েছেন, ওই ঘাটতির জেরে দিনের মধ্যে কখনও কয়েকটি এলাকায় ‘লোডশেডিং’ করতেই হয়।
বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থার বক্তব্য, আগের তুলনায় এ বছর রাজ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে। পালটানা গ্যাস-বিদ্যুৎ প্রকল্পের একটি ইউনিটে জুন মাস থেকেই বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। ওই ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা ৩৬৩ মেগাওয়াট। ওই বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটও একই ক্ষমতাসম্পন্ন। পাশাপাশি, ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিদ্যুৎ নিগম’-এর (নিপকো) গ্যাস-ভিত্তিক ১০৪ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন মনারচক বিদ্যুৎ প্রকল্পটিও এ বছরই শুরু হওয়ার কথা। ‘নিপকো’র আগরতলা কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতাও সম্প্রতি আরও ৪৬ মেগাওয়াট বৃদ্ধি করা হয়েছে। আগে তা ছিল ৮৪ মেগাওয়াটের। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, ওই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিতে কাজ শুরু হলে ত্রিপুরার প্রয়োজন মিটিয়েও ‘অতিরিক্ত’ বিদ্যুৎ তৈরি হবে।
|