পর্যটনের হাত ধরে গয়েরকাটার অর্থনৈতিক অবস্থা ফেরাতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবে’র সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করলেন উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। রবিবার হাসিমারার কাছে সুভাষিনী চা বাগানে দুই জনের মধ্যে আলোচনায় গয়েরকাটার পর্যটন ব্যবসার সম্ভাবনা-সহ বেকারত্ব দূর করতে হাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কলেজ তৈরির প্রস্তাব দেন সমরেশবাবু।
ভুটান বেড়াতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন বহু পর্যটক হাসিমারা স্টেশনে নেমে সোজা ভুটানে চলে যান। হাসিমারার কাছেপিঠে রয়েছে জলদাপাড়া, চিলাপাতা জঙ্গল ও চা বাগান। হাসিমারাতে পর্যটকদের থাকা ও আশেপাশে ঘোরানোর জন্য ব্যবস্থা করা হলে পর্যটকরা ভুটানের পাশাপাশি এই এলাকায় যাতে অন্তত একটা রাত কাটাতে পারেন, তার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে পর্যটনের বিকাশ সম্ভব বলে সমরেশবাবু প্রস্তাব দেন। প্রবীণ এই সাহিত্যিকের প্রস্তাব নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন গৌতমবাবু। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র
সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। রবিবার।—নিজস্ব চিত্র। |
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর কথায়, “সমরেশবাবুর প্রস্তাব ভাল। ডুয়ার্স ও পাহাড়ের পর্যটন বিকাশের জন্য বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ চলছে। গয়েরকাটা, হাসিমারায় পর্যটন কেন্দ্রের জন্য পর্যটন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলব। আঙরাভাসা নদী, খুট্টিমারির ঘন জঙ্গল, স্বর্গছেঁড়া চা বাগান, প্রাকৃতিক শোভায় ভরপুর ডুয়ার্সের স্বর্গছেড়া বা গয়েরকাটার সঙ্গে আশির দশকে বাঙালি পাঠকদের পরিচয় ঘটান সাহিত্যিক সমরেশবাবু।
পুরনো বাসিন্দারা জানান, এক সময় কাঠের ব্যবসার জন্য ডুয়ার্সের এই গঞ্জটির রমরমা ছিল। মানুষের আর্থিক অবস্থা অনেক ভাল ছিল। তবে গাছ কাটা নিয়ে সরকারি নানা বিধি নিষেধ ও ফরমান জারি হওয়ার পর গয়েরকাটায় ব্যবসায়ীদের আনাগোনা বন্ধ হতে থাকে। কাঠের ব্যবসার মন্দা দশার পাশাপাশি চা বাগানের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে। কলকাতার বাসিন্দা হলে ডুয়ার্সে এলে সমরেশবাবু নাড়ির টানে ঘুরে যান গয়েরকাটায়। লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ছেলেবেলায় অনিমেষের চোখে দেখা স্বর্গছেঁড়ার ফারাক ঘোচাতে কর্মসংস্থান যে কতটা প্রয়োজন তা উপলব্ধি করেই তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন।
সমরেশবাবু বলেন, “খুঁট্টিমারি জঙ্গল ও চা বাগানকে কাজে লাগিয়ে দারুণ পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে। চা বাগানের বাসিন্দা ও তার বাইরে বহু স্বল্প শিক্ষিত বেকারেরা আছেন। তাঁদের কারিগরি শিক্ষা দেওয়া গেলে নানা ধরণের কাজ তাঁরা পেতে পারেন। আশা করি, গৌতমবাবু বিষয়গুলি দেখবেন।” সমরেশবাবুর সঙ্গে আলোচনা ছাড়াও এ দিন ডুয়ার্সের কালচিনি ব্লকের প্রত্যন্ত এলাকায় যান গৌতমবাবু, কালচিনির বিধায়ক উইলসন চম্প্রামারি। মন্ত্রী বলেন, “সেন্ট্রাল ডুয়ার্সে একটি স্কুলে সমস্যা রয়েছে। কর্তৃপক্ষকে লিখিত আবেদন জমা করতে বলেছি। কালচিনি থেকে সেন্ট্রাল ডুয়ার্সের পথে পানা ও বাসরা নদী আছে। সেখানে সেতু ও রাস্তার বিষয় দেখা হবে। সুভাষিনী বাগান থেকে হ্যামিল্টনগঞ্জের পথে ২০১০-এ বাসরার তোড়ে ভেঙে যাওয়া সেতু দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে কেন কাজ শুরু হয়নি তার খোঁজ নেন মন্ত্রী।
|