সারদা গোষ্ঠীর কয়েকজন আমানতকারীর শ্যামল সেন কমিশনে জমা দেওয়া নথির প্রতিলিপি মিলল ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনের পূর্বসাতগাছিয়ার কাছে রেললাইনে। ঘটনাটি রবিবার সকালের। তবে জিআরপি-র কালনা শাখার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর আগেই স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিলিপিগুলি নিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ। পরে অবশ্য পুলিশ কাছাকাছি বন্দেবাজ এবং মালপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে ৬’টি ভোটার কার্ড এবং চারটি প্রতিলিপি উদ্ধার করে। নথিগুলি থেকে জানা গিয়েছে, ওই আমানতকারীরা মূলত মুর্শিদাবাদ এবং ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বন্দেবাজ গ্রামের বাসিন্দা অসিত হালদার রেললাইন পেরিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই তাঁর চোখে পড়ে লাল কাপড় দিয়ে জড়ানো একটা পুঁটুলি পড়ে রয়েছে। তবে তিনি তা খুলে দেখেননি। রবিবার সকালে রেললাইন পেরিয়ে ফুল তুলতে যাওয়া কয়েকজন ওই পুঁটুলি খুলে বেশ কিছু কাগজপত্র, ছবি এবং ভোটার কার্ড পান। কিন্তু লাইনের ধারে সেগুলি ছড়িয়ে রেখেই তারা চলে যান বলে অভিযোগ। পরে আরও সবাই দেখতে পান যে নথিগুলি শ্যামল সেন কমিশনে আবেদনকারীদের। |
কিন্তু কেউ কেউ সেগুলি ছড়িয়ে রেখে যান, কেউ কেউ নিয়েও চলে যান বলে জানা গিয়েছে। বেলা দশটা নাগাদ রেল পুলিশের একটি দল এলাকায় পৌঁছয়। কিন্তু কোনও নথিই পাননি তাঁরা। পরে গ্রামবাসীদের অনেকেই উদ্ধার হওয়ায় পরিচয়পত্র বা আমানতকারীদের প্রতিলিপি পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে স্থানীয়দের দাবি, এখনও বেশ কিছু নথি রয়ে গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া কাগজগুলি থেকে জানা গিয়েছে, ওই আমানতকারীদের বেশিরভাগই টাকা রেখেছিলেন সারদার ২১৩, পাকুড় শাখায়। আবেদনপত্রের অনুলিপি ছাড়াও মিলেছে আমানতকারীদের নাম, ঠিকানা, সাক্ষর, আঙুলের ছাপ, ছবি। কমিশনের স্ট্যাম্প থেকে জানা গিয়েছে, ২৩ মে এগুলি জমা হয়। প্রতিলিপির মধ্যে সারদার সঙ্গে আমানতকারীদের চুক্তিপত্র, মাসিক টাকা জমা দেওয়ার রসিদও মিলেছে। বন্দেবাজ গ্রামের সৌরেশ হালদার, গঙ্গা হালদারদের বক্তব্য, “নথিগুলি পিন দিয়ে সাঁটা ছিল। কিন্তু টানাটানি করে দেখতে গিয়ে অনেকগুলিই ছড়িয়ে যায়। পুলিশের প্রাথমিক সন্দেহ, কোনও এজেন্ট নথিগুলি নিয়ে কমিশনের কলকাতা শাখায় জমা দিতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে কোনও কারণে সেগুলি ট্রেন থেকে পড়ে যায়, অথবা কেউ ফেলে দেয়। জিআরপি-র কালনা শাখার ওসি প্রবীরকুমার রেজা বলেন, “খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে গেলেও আমরা কোনও নথি পাইনি। স্থানীয় মানুষ পরে আমাদের কাছে ৬’টি ভোটার কার্ড এবং চারটি রিসিভড্ কপির প্রতিলিপি দেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।” |