এক ঝলকে...
পৃথিবী
বুড়ো বলে বরবাদ
• তেহরান • আকবর হাশেমি রফসানজানির বয়স এখন আটাত্তর। ইরানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পক্ষে তিনি কি খুব বেশিই বুড়ো? সে দেশের গার্ডিয়ান কাউন্সিল তো তাই বলছে, প্রেসিডেন্স নির্বাচনে রফসানজানির প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর আবেদন-পত্র তারা খারিজ করে দিয়েছে। আর তারা যদি কিছু ‘বলে’ কিংবা ‘করে’, সেটায় আপত্তি করার মতো বুকের পাটা কারই-বা? তবে একটা কথা। ইরানের সর্বেসর্বা এই গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বারো জন সদস্য, ছয় জন জুরি, ছয় জন ধর্মযাজক— তার মধ্যে অন্তত দুই জনের বয়স যে আটাত্তরের অনেক বেশি? আর, ইরানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আয়াতোল্লা খোমেইনি যে আরও বেশি বয়সেই দেশের হাল ধরেছিলেন? এই সব প্রশ্নের উত্তর কোথায়?
উত্তর খুঁজছেন প্রাক্তন নেতা খোমেইনির কন্যা জেহ্রা মোসতাফাভি। রফসানজানির আবেদন বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি লম্বা চিঠি লিখেছেন ধর্মীয় মহানেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে। চিঠির সার কথা, যোগ্য প্রার্থীদের এ ভাবে নাকচ করলে ইরানে একনায়কতন্ত্র বহাল হতে বাকি রইল কী!
সত্যিই বাকি কিছু আছে কি? সাড়ে ছশো মনোনয়ন-পত্রের মধ্যে আটটি বাদে সবই বাতিল করেছে পরিচালিত গার্ডিয়ান কাউন্সিল। বাতিলের দলে রফসানজানি ছাড়াও আছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট আহমদিনেজাদের ঘনিষ্ঠ প্রার্থী এসফানদিয়ার রহিম মাশাই। মাশাই-এর বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আছেন আহমদিনেজাদ নিজেও। ঠিক করেছেন, ক্ষোভ জানাতে যাবেন খামেনেই-এর কাছে। তবে মাশেই-এর ঘটনাটা প্রত্যাশিত কেননা আহমদিনেজাদ শিবির তুলনায় নরমপন্থী বলে কিছু কাল ধরে ব্রাত্য হয়ে আছে খামেনেই-এর চোখে। কিন্তু অপ্রত্যাশিত আঘাত— রফসানজানির বাতিল হওয়ার ঘটনা। তিনি পর পর দুই বার প্রেসিডেন্ট হয়েছেন, ইসলামিক রিপাবলিক-এর বড় সমর্থক, জনমানসে ধারণা তিনি এক জন প্রাজ্ঞ রাজনৈতিক নেতা। ইরানের ‘অভিভাবক’রা তবে পুরোদস্তুর কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট পেতেই বদ্ধপরিকর?

বছর পঞ্চাশ পর
• ওয়াশিংটন ডি সি • ১৯৬৬-এর পর এই প্রথম মায়ানমারের কোনও রাজপুরুষ হোয়াইট হাউসে পা রাখলেন। ৫০ বছরে এই প্রথম মার্কিন প্রশাসন ‘বর্মা’ না বলে ‘মায়ানমার’ বলল, এই প্রথম কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট বর্মী সামরিক শাসকদের দেওয়া নাম ‘মায়ানমার’ ব্যবহার করলেন।
দুটো তথ্য থেকেই পরিষ্কার, কী ধরনের কথাবার্তা হল মায়ানমার প্রেসিডেন্ট থিন শেইন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার মধ্যে।
সদর্থক, সন্ধিবাচক, মিত্রতাবর্ধক। ওবামা বললেন, মায়ানমার যে ভাবে গণতন্ত্রের অভিমুখে যাত্রা অক্ষুণ্ণ রাখছে, তাতে তাঁর দেশ প্রীত। তবে কি না এখনও মুসলিম অধিবাসীদের উপর যে ভাবে হামলা চালাচ্ছে সংখ্যাগরিষ্ঠরা, তাতে তিনি উদ্বিগ্ন। আমেরিকার হাঁচিকাশি-উদ্বেগ সবই ভারী গুরুতর থিন শেইনের কাছে, আমেরিকা থেকে যে প্রভূত অর্থসহায়তার প্রত্যাশা তাদের!

নজরবন্দি
তা হলে ইভো মোরালেসই বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট থাকছেন? দেশের সর্বোচ্চ আদালতের অন্তত তেমনই মত। ২০০৬ সালে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন ইভো। ২০০৯ সালে তাঁর নেতৃত্বেই সংবিধান সংশোধন করে স্থির হয়েছিল, কেউ দু’বারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না। সে হিসেবে ইভোর মেয়াদ ফুরোচ্ছে আগামী বছর। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, যেহেতু সংবিধানটি সংশোধিত হওয়ার আগেই ইভো প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন, কাজেই সেই মেয়াদটি আব্বুলিশ, মানে ওটা গোনা হবে না। বিরোধীরা যথারীতি এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। বিরোধীদের মতে, এই ঘটনাই দেখিয়ে দিচ্ছে, দেশের আইনব্যবস্থাকে নিজের খেয়ালখুশি মতো ব্যবহার করছেন মোরালেস।
লাতিন আমেরিকার আর এক স্যোশালিস্ট নেতা, প্রয়াত উগো চাভেস ইভোর বিশেষ বন্ধু ছিলেন। মহাদেশ জুড়ে গড়ে ওঠা সমাজতান্ত্রিক ‘পিঙ্ক টাইড’-এর দুই মূল হোতা ছিলেন তাঁরা। মোরালেস-এর রাজনীতি চাভেসের খুব কাছাকাছি। দু’জনেই ঘোর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-বিরোধী, দু’জনেই দেশের প্রধান শিল্পগুলিকে রাষ্ট্রায়ত্ত করেছেন, দু’জনেই রাজকোষ উজাড় করে জনমোহনে বিশ্বাসী। ইভোর সঙ্গে আরও এক জায়গায় তাঁর প্রয়াত বন্ধুর মিল— চাভেসও ২০০৯ সালে সংবিধান পাল্টে স্থির করেছিলেন, প্রেসিডেন্টের মেয়াদের কোনও ঊর্ধ্বসীমা থাকবে না। গণতন্ত্রে বিশ্বাস অবশ্য কোনও দিনই তাঁদের অভিজ্ঞান ছিল না। মুশকিল হল, গণতন্ত্রের বদলে যে স্বেচ্ছাতন্ত্র, তাতে দেশের অর্থনীতি ক্ষতি বই লাভ নেই। চাভেসের মৃত্যুর পর এখন যেমন বোঝা যাচ্ছে, অগাধ তেলের ভাণ্ডার থাকা সত্ত্বেও ভেনেজুয়েলা মহা বিপন্ন। মূল্যস্ফীতির হার অতি চড়া, খাবার পাওয়া যাচ্ছে না, বেদম লোডশেডিং। একনায়কের ইচ্ছেয় চলতে চলতে দেশ এখানে এসে ঠেকেছে। মোরালেসও চাভেসেরই আর এক সংস্করণ। তাঁর দেশের হালও এই স্বেচ্ছাচারিতার পথে শোভন-সুন্দর হয়ে উঠবে, মনে হয় না!


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.