সম্প্রতি মধুসূদন মঞ্চে অন্বেষা আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাধুরী চট্টোপাধ্যায়কে পাওয়া গেল বহু দিন পরে। তাও আবার তাঁর কণ্ঠে শোনা ‘নিজেরে হারায়ে খুঁজি’। এ এক অন্য নস্টালজিক অনুভূতি। এমনই পরিবেশে যখন আরতি মুখোপাধ্যায়ও গাইলেন ‘এক বৈশাখে দেখা হল দু’জনায়’, সৈকত মিত্রের ‘যদি কিছু আমারে শুধাও’। সঙ্গীতে অন্যান্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন তানিয়া দাশ, সুছন্দা ঘোষ, তনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়, বাসবী বাগচী, রূপা চট্টোপাধ্যায়, সুতপা চৌধুরী প্রমুখ। আবৃত্তিতে সুপ্রকাশ মুখোপাধ্যায়-এর কণ্ঠে শোনা গেল রবীন্দ্রনাথের ‘অন্তর মম বিকশিত কর’ কবিতাটি। এ ছাড়াও আবৃত্তি করেন ঊষসী সেনগুপ্ত, মহুয়া দাস প্রমুখ।
|
সম্প্রতি আইসিসিআরে ‘দুই রবি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এক দিকে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ, অন্য দিকে রবিশঙ্কর। অনুষ্ঠানটির ভাবনায় অঞ্জন গুপ্ত। কালজয়ী দুই স্রষ্টার নজিরবিহীন অসংখ্য সৃষ্টির টুকরো টুকরো কিছু কথা ও সুর। সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের ভাষ্যপাঠে, বলাকা দাশগুপ্তের রবীন্দ্রসঙ্গীত ও বরুণকুমার পালের হংসবীণার সুরবিস্তারে অনুষ্ঠানটি এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল। তুলির টানে ও রবীন্দ্রগানে বলাকার প্রথম পরিবেশনা ‘তোমায় গান শোনাব’। বলাকার নিবিষ্ট ভাবের পরিবেশনা ও স্নিগ্ধ কণ্ঠস্বর অনুষ্ঠানের মান যে উচ্চতায় পৌঁছে দেয় সেখান থেকে বরুণকুমার পালের হংসবীণায় পণ্ডিত রবিশঙ্করের সুষ্ঠু রাগের মূর্ছনা শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। সব শেষে বলাকার ‘মনে রবে কিনা রবে’ ও বরুণের হংসবীণার রাগ খাম্বাজের যুগলবন্দি প্রশংসনীয়।
|
সম্প্রতি রবীন্দ্রসদনে দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের জন্মসার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে ‘ডাইমেনশন ফোর’ আয়োজিত অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে ছিলেন নূপুরছন্দা ঘোষ ও তার ৭০ জন ছাত্রছাত্রী। সঙ্গীতে ছিলেন ইফফাত্ আরা দিওয়ান ও ইলোরা আহমেদ শুক্ল। ভাষ্যে ছিলেন সঈদ হাসান তুহিন ও অমিত রায়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুমিত্রা সেন, কৃষ্ণা বসু ও উজ্জ্বল বিশ্বাস। অনুষ্ঠানের শুরুতে নুপূরছন্দা ও তাঁর ছাত্রছাত্রীরা সমবেত সঙ্গীত গেয়ে শোনালেন ‘বঙ্গ আমার জননী আমার’। পরে ‘নূতন রতনে’, ‘হৃদয় আমার গোপন করে’ ইত্যাদি গানগুলি মন ভাল করে দেয়। এর পর নূপুরছন্দা তাঁর সাবলীল সুন্দর পরিশীলিত কণ্ঠে দ্বিজেন্দ্রলালের বিভিন্ন আঙ্গিকের গান অনায়াস দক্ষতায় শোনালেন। একে একে কীর্তনাঙ্গ, হাসির গান, নাটকের গান থেকে প্রকৃতির গান। এর পর ইফফাত্ আরা তাঁর নিজস্ব গায়কিতে শোনালেন ৫টি গান।
|
ইন্দুমতী সভাগৃহে নবদিশারী কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল একটি মনোজ্ঞ সঙ্গীত সন্ধ্যা। গোলপার্ক রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচারের সন্ন্যাসী স্বামী বেদস্বরূপানন্দ মহারাজের মঙ্গলাচরণ ও সঙ্গীত বিষয়ক বিদগ্ধ অভিভাষণের পর ভরতনাট্যম আঙ্গিকে সংক্ষিপ্ত গুরুপ্রণাম নৃত্যে কিশোরী শিল্পী সৃজনী চৌধুরীর প্রয়াস এক কথায় অনবদ্য। বিভাস সাংহাইয়ের তবলা লহরায় বলিষ্ঠ বোলবাণীর প্রয়োগে ছিল কৃতিত্ব ও তালিমি পরিবেশনার নজির। হারমোনিয়ামে রতীন মজুমদার ছিলেন সাবলীল। পরবর্তী ও শেষ শিল্পী ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তীর সেতারে ধ্বনিত হয় মারু বেহাগ। সুললিত মিড়ের প্রয়োগে আলাপ এবং খরজ-পঞ্চমে অতিমন্দ্র স্বরের কুশলী কারুকাজ সমন্বিত জোড়ে রাগ রূপটি সুন্দর ভাবে পরিস্ফুট হয়। রূপক তালের বিলম্বিত গতে মাধুর্যমণ্ডিত বিস্তার। মননশীল লয়কারি এবং অতি দ্রুত তান ও তেহাইয়ের বৈচিত্র গড়ে তোলে অনেক উপভোগ্য মুহূর্ত। দ্রুত তিনতাল গত ও ঝালা ছিল উচ্চ মানের। সংক্ষিপ্ত মিশ্র খাম্বাজ ধুন বাজিয়ে শিল্পী তাঁর অনুষ্ঠান শেষ করেন। সমর সাহার আদ্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ও শ্রুতিসুখকর তবলা সহযোগিতা মনে দাগ কেটে যায়। |