বাড়ি তৈরিতে তৃণমূলের দাবি ৫০ হাজার, নালিশ
তৃণমূল নেতাদের ‘দাদাগিরি’-তে ভেস্তে যেতে বসেছে বাড়ি তৈরির কাজ।
যদিও বাড়ি তৈরির জন্য প্রশাসন ও পঞ্চায়েতের প্রয়োজনীয় অনুমতি রয়েছে। তা সত্ত্বেও পুকুর ভরাট করে বাড়ি তৈরি হচ্ছে অভিযোগ তুলে বহরমপুর থানার ভাকুড়ি-১ পঞ্চায়েতের চুঁয়াপুর কদমতলার কাছে বিবেকানন্দ পল্লিতে শুক্রবার সকালে ‘আন্দোলন’ শুরু করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
অভিযোগ, সাত দিন আগে তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতার নাম করে ওই এলাকায় বাড়ি তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। বাড়ির মালিক পেশায় পুস্তক ব্যবসায়ী নেতাজুল ইসলাম ওই অর্থ দিতে রাজি হননি। তার পরেই এদিন তৃণমূলের জেলা যুব সভাপতি উত্‌পাল পালের নেতৃত্বে এক দল তৃণমূল নেতা-কর্মী এদিন আন্দোলনে নামে। আন্দোলনকারীরা অবশ্য জেলা তৃণমূলে মন্ত্রী সুব্রত সাহার অনুগামী বলে পরিচিত। এতে অস্বস্তিতে পড়েছেন উদ্যানপালন দফতরের মন্ত্রী সুব্রতবাবু। তিনি বলেন, “ওরা বলেছিল পুকুর ভরাট করে বাড়ি তৈরি হচ্ছে। তা বলে তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
এ দিকে তৃণমূলের ওই আন্দোলন ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতি এড়াতে খবর পেয়ে বহরমপুরের পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু তার আগেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা গিয়ে রাজমিস্ত্রীদের ভয় দেখিয়ে এলাকা ছাড়া করে। পরে ওই ঘটনা জানিয়ে বহরমপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন বাড়ির মালিক। নেতাজুল বলেন, “এক দল লোক তৃণমূলের পতাকা হাতে এসে বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়। মারধরের ভয় দেখিয়ে রাজমিস্ত্রী ও শ্রমিকদের তাড়িয়ে দেয়।”
টাকার দাবিতে ঝান্ডা ঝোলাল তৃণমূল। বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
নেতাজুল ইসলামের স্ত্রী তারিফা খাতুন বহরমপুর থানায় কনস্টেবল। অভিযোগ, ওই দম্পতি গোরাবাজারে যেখানে বাড়ি ভাড়া করে থাকেন, সেখানে সপ্তাহ খানেক আগে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিন জন অপরিচিত লোক এসে নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে তাদের ‘তৃণমূলের দিলীপদা পাঠিয়েছে’ বলে জানায়। নেতাজুলবাবুর অভিযোগ, “ওখানে বাড়ি করতে হলে দিলীপদা ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও বলেছে বলে তারা জানায়। ব্যাঙ্ক ঋণ করে আমি বাড়ি করছি। ফলে ওই টাকা দিতে পারব না বলে জানাই। তখন তারা ওই টাকা দিতে না পারলে বাড়ি তৈরি আটকে যাবে বলে।”
বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দিলীপ রায়ই কি দিলীপদা? গত পঞ্চায়েত ভোটে তিনি কংগ্রেসের হয়ে জিতে পরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তৃণমূলের তরফে ভাকুড়ি-১ পঞ্চায়েত এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে। দিলীপবাবু অবশ্য বলেন, “গত ২৬ বছর ধরে রাজনীতি করছি। কোনও টাকাপয়সা লেনদেনের সঙ্গে আমি জড়িত নই।”
গত ৩ মে থেকে ওই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়। বাড়ির তিন ফুট দূরত্বে প্রতিবেশী শুভেন্দু মণ্ডল বাড়ি তৈরি করেছেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ‘পুকুর ভরাটের’ কোনও অভিযোগ ওঠেনি। এ দিনের আন্দোলনে অবশ্য ছিলেন না বহরমপুর ব্লকের পূর্বপাড়ের দায়িত্বে থাকা তৃণমূলের জেলা নেতা সত্যেন চৌধুরী। সত্যেনবাবু বলেন, “এক সময়ে ওখানে পুকুর ছিল। পরে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অনুমতি নিয়ে পুকুর থেকে ভিটা জমিতে পরিণত হয়েছে। অন্যরা বাড়ি করতে পারলে, ওই দম্পতি কেন পারবেন না!” এ দিনের আন্দোলনের কোনও যৌক্তিকতা নেই বলে সত্যেনবাবু জানান। তিনি বলেন, “আন্দোলনের পিছনে কোনও অসত্‌ উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা দেখা উচিত।” যাঁর নেতৃত্বে এই আন্দোলন, তৃণমূলের যুবনেতা উত্‌পল পাল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.