জুনের মধ্যে প্রকল্প তৈরির নির্দেশ
বৃষ্টির জল ধরে সেচের হাল ফেরানোর উদ্যোগ পশ্চিমে
ক দিকে ভূমিক্ষয় রোধে পদক্ষেপ করা, প্রয়োজনে গাছ লাগানো। অন্য দিকে, বৃষ্টির জল ধরে রেখে সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে’ এই দুই ধরনের কাজে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। কাজ কী ভাবে এগোবে, শুরুতে কী করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে শুক্রবার মেদিনীপুরে এক বৈঠক হল। কালেক্টরেটের সভাঘরে এই বৈঠকে ছিলেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত, দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক রজতকুমার সাইনি এবং অরিন্দম দত্ত, জেলা উন্নয়ন ও পরিকল্পনা আধিাকরিক প্রণব ঘোষ প্রমুখ। আগামী জুন মাসের মধ্যেই বিস্তারিত প্রকল্প তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। আগে থেকে ১৬টি প্রকল্প হবে বলে ঠিকই রয়েছে। সঙ্গে আর কোথায় এলাকায় এই প্রকল্পের কাজ করা যায়, তা দেখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
বৃষ্টির জল ধরে রাখতে ‘জল ধরো, জল ভরো’ প্রকল্প আগেই শুরু হয়েছে। এর জন্য পুকুর খনন, চেক ড্যাম তৈরি প্রভৃতি হচ্ছে। এ বার ‘ইন্টিগ্রেটেড ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে’র মাধ্যমেও সেচ ব্যবস্থার উন্নতির চেষ্টা হবে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গড়বেতা-নয়াগ্রাম মিলিয়ে ১৬টি জায়গায় প্রকল্পের কাজ হবে। প্রতিটি প্রকল্পের জন্য প্রাথমিক ভাবে ১৫ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ করেছে কৃষি দফতর। সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১১টি সংস্থা এই প্রকল্পের কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। যে এলাকায় প্রকল্পের কাজ হবে, সেই এলাকার মানুষই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। ওই সংস্থা স্থানীয়দেরই কাজে নিযুক্ত করবে। এর ফলে ভূমিক্ষয় রোধ এবং সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণের পাশাপাশি ওই এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিরও উন্নতির সুযোগ থাকছে। জেলা প্রশাসনের ওই আধিকারিকের কথায়, “প্রকল্পের কাজ শেষ হলে স্থানীয় মানুষ উপকৃত হবেন। গ্রামের পরিবেশও পাল্টে যাবে। পাশাপাশি, প্রকল্পের কাজের সঙ্গে গ্রামবাসীদেরই যুক্ত করা হবে। এর ফলে, একদিকে তাঁদের কাছে রোজগারের সুযোগ আসবে। অন্য দিকে, গ্রামে স্থায়ী সম্পদ গড়ে উঠবে। যা থেকে পরবর্তীকালে আয়ও হতে পারে।” বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “জেলায় সব মিলিয়ে ১৬টি প্রকল্প হবে। প্রকল্পের সঙ্গে যে সব সংস্থা যুক্ত, তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে আগেও বৈঠক হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।”
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলস্তর কমছে। ফলে উদ্বেগ বাড়ছে। এই পরিস্থিতির প্রভাব পড়ছে চাষে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে চাষের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্য দিকে, সর্বত্র সেচের ব্যবস্থাও নেই। জেলার উপর দিয়েই বয়ে গিয়েছে কংসাবতী, সুবর্ণরেখা নদী। তাও বিস্তীর্ণ এলাকায় সেচের জল পৌঁছয় না। বৃষ্টির জল শেষমেশ নদীতে গিয়েই মেশে। এই পরিস্থিতিতে বৃষ্টির জল ধরে রেখে তাকে সেচের কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন আবার বৃষ্টির পরিমানও কমছে। ফলে, জলস্তর দ্রুত নীচে নামছে। বৃষ্টির জল ধরে রেখে তাকে সেচের কাজে লাগাতে না-পারলে পরবর্তী দিনে সমস্যা আরও জটিল হবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০০৮ সালে জেলায় ১৮৩৪.০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ’০৯ সালে ১২৭০.০১ মিলিমিটার। পরের বছর, অর্থাত্‌ ২০১০ সালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১০০১.০১ মিলিমিটার। ২০১১ সালে বৃষ্টির পরিমান বাড়ে। সবমিলিয়ে ১৭১৭. ০৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। ২০১২ সালে বৃষ্টি হয়েছে ১ হাজার ২২৪.৯ মিলিমিটার। যেখানে জেলায় বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান ১ হাজার ৫৪২ মিলিমিটার। প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “উঁচু এলাকা থেকে গড়িয়ে আসা জল যাতে ধরা যায়, ওয়াটার শেড ম্যানেজমেন্ট প্রোজেক্টে সেই চেষ্টাও হবে। এতে বর্ষার পর জমে থাকা জল নানা কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। সমীক্ষা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.