|
|
|
|
কর্মী সঙ্কটে রাজস্ব কমছে চেক পোস্টে |
সুমন ঘোষ • মেদিনীপুর |
থাকার কথা ১৪ জন। রয়েছেন ৮ জন।
কর্মী সঙ্কটে ভুগছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অবস্থিত ঝাড়গ্রাম থানা এলাকার বেলতলা চেকপোস্ট। অথচ, পরিবহণ দফতরের এই চেকপোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাইরের রাজ্য থেকে ওড়িশা হয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকা সমস্ত লরির নথি পরীক্ষার দায়িত্ব এই চেক পোস্টেরই। এখান থেকে দিনে প্রায় ৬-৭ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হওয়ার কথা। কিন্তু কর্মী সঙ্কটের জেরে দিনে গড় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ টাকায়।
বিহার, ঝাড়খণ্ড-সহ অন্য রাজ্য থেকে ওড়িশা হয়ে প্রতিদিন কয়েকশো লরি ঢোকে পশ্চিমবঙ্গে। এর জন্য দু’টি পথ রয়েছে। একটি ঝাড়গ্রাম মহকুমার চিঁচিড়া (৬ নম্বর জাতীয় সড়ক) হয়ে, অন্যটি খড়্গপুর মহকুমার দাঁতন থানা এলাকার সোনাকনিয়া (৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক) দিয়ে। চেক পোস্টটি রয়েছে ঝাড়গ্রাম থানা এলাকার বেলতলায়। যা ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। সবসময় খোলা রাখার জন্য ১৪ জন আধিকারিকের পদ রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২ জন অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিক ও ১২ জন মোটর ভেহিক্যালস্ ইন্সপেক্টর (নন টেকনিক্যাল)। বছর খানেক ধরেই একজন অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিকের পদ শূন্য। সম্প্রতি এক আধিকারিক অবসর নিয়েছেন। ফলে সর্বোচ্চ এই দু’টি পদই এখন খালি।
আর ছিলেন ১২ জন মোটর ভেহিক্যালস্ ইন্সপেক্টর (এমভিআই)। এই পদেও বহুদিন আগে থেকে একটি পদ শূন্য ছিল। কয়েক মাস আগে আরও একজনকে কলকাতায় বদলি করা হয়। সম্প্রতি খড়্গপুরে নতুন পরিবহন দফতরের অফিস খোলায় সেখানে একজনকে পাঠানো হয়। মাস দু’য়েক আগে রাজ্য পরিবহন দফতর থেকে এক নির্দেশিকায় বেলতলা চেকপোস্ট থেকেই ৩ জনকে বদলির নির্দেশ আসে। তাঁদের বদলি করা হয় বারাসাত, হাওড়া ও আলিপুরদুয়ারে। কিন্তু পরিবর্তে সেখানে কোনও নতুন আধিকারিক দেওয়া হয়নি। তাই ৩ জনের মধ্যে ১ জনকে ছাড়া হলেও ২ জনকে আটকে রাখা হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, বাকি ২ জনকে ছাড়লে চেকপোস্ট চালানো অসম্ভব হবে। তাতে মুখ থুবড়ে পড়বে রাজস্ব আদায়ও।
চেকপোস্টের এক কর্মীর কথায়, “লরি তো পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেই। তাতে অনেক টাকা ফাঁকি দেওয়া যায়। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় রাতের সব গাড়ি ধরাও সম্ভব হয় না। তাতে রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। কর্মী সংখ্যা ঠিক থাকলে এটা হত না।” এমনকী আগে মাসে দশ দিন খড়্গপুরে চেকিং হলেও চলতি মাস থেকে তা ছ’দিন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জেরে সোনাকনিয়ার দিক থেকে এ রাজ্যে ঢোকা লরিগুলির বেশিরভাগই ফাঁকি দিয়ে পালাতে পারবে মনে করছে পরিবহণ বিভাগ। এ ছাড়াও কর্মী কম থাকায় নথি পরীক্ষাতেও অনেক সময় লাগছে। ততক্ষণ লরিগুলিকেও দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তাতে যে সব লরির নথি ঠিক রয়েছে তাঁদের মধ্যে ক্ষোভও দেখা দিচ্ছে। এক সঙ্গে প্রচুর লরি ঢুকে পড়লেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এত সমস্যা সত্ত্বেও বারবার এখান থেকেই বদলি করা হচ্ছে কেন?
এই প্রশ্নে অবশ্য মুখ খোলেননি প্রশাসনিক কর্তারা। রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র এই সমস্যার কথা মেনে নিয়ে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন শুধু। |
|
|
|
|
|