দাঁতাল খেদাতে গুলি, মৃত বনকর্মী
ভুট্টা খেত থেকে হাতি তাড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হাতি নয় বিপদ ডেকে আনল সহকর্মীর ছোড়া গুলি। পিঠের ডান দিকে গুলি লেগে জঙ্গলেই মারা গেলেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মী রতন দে (৫২)।
বৃহস্পতিবার রাতে কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়ার গোপালবাহাদুর বস্তিতে ওই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে বন দফতর। বনমন্ত্রী হিতেন বর্মন বলেন, “ঘটনার সবিস্তার রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। যদি প্রশিক্ষণের খামতির কারণে এমনটা ঘটে তা হলে কর্মীদের কেন প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ হচ্ছে না তাও খতিয়ে দেখতে হবে।” বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা উত্তরবঙ্গের বনপাল বিপিন সুদ অবশ্য বলেন, “প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে এটা দুর্ঘটনা। তবে তদন্ত শেষ হলে কারণটা স্পষ্ট হবে।”
তিন মাস আগে বন্দুকে কার্তুজ ভরতে গিয়ে সুন্দরবনে এক বনকর্মীর পায়ে গুলি লাগে। তাঁর পা কেটে বাদ দিতে হয়। এ বার সহকর্মীর গুলিতে অন্য এক বনকর্মীর মৃত্যুতে তাঁদের প্রশিক্ষণের খামতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল তৃণমূল প্রভাবিত বন কর্মীদের সংগঠন ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট সার্ভিস এমপ্লয়িজ ফেডারেশন’। সংগঠনের সম্পাদক অমল সিংহ বলেন, “বনকর্মীদের পনেরো দিনের আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এটা যথেষ্ট নয়। বিষয়টি বনমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে।”

রতন দে।— নিজস্ব চিত্র
বন দফতর সূত্রে খবর, দলসিংপাড়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বুনো হাতির উপদ্রব চলছে। ৫ মে থেকে প্রতি রাতে হ্যামিল্টনগঞ্জ রেঞ্জের বনকর্মীরাও সেখানে হাতি খেদানোর কাজ করছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ জনা ছয়েক বনকর্মী জিপ নিয়ে গোপালবাহাদুর বস্তির দিকে হাতি তাড়াতে গিয়েছিলেন। ওই দলে ছিলেন রতনবাবু। অন্য বনকর্মী ধনপতি দাস জানান, রাত ৯টা নাগাদ একটি দলছুট মাকনা হাতি বস্তির এক বাসিন্দার ভুট্টা খেতে ঢোকে। হইচই শুনে বন কর্মীরাও সেখানে যান। ভুট্টা খেতে লুকিয়ে থাকা বিশাল মাকনা হাতিটি তাড়াতে প্রথমে শূন্যে গুলি ছোড়েন ফরেস্ট গার্ড রতনবাবু। গুলির শব্দ শুনে হাতিটি সরে যায়। রতনবাবু বন্দুকটি পিছনে থাকা বনশ্রমিক দশরথ মিঞ্জের হাতে দিয়ে পটকা ছুড়তে শুরু করেন। সেই সময় হাতিটি আচমকা তেড়ে আসে। রতনবাবু পিছু হটতে থাকেন। এই সময় টাল সামলাতে না পেরে তিনি হোঁচট খেয়ে দশরথবাবুর উপরে পড়ে যান রতনবাবু।
তখনই আচমকা বন্দুক থেকে গুলি ছিটকে আসে। রতনবাবুর পিঠের ডান দিকে গুলি লাগে। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান রতনবাবু।
ঘটনার পরে ভেঙে পড়েন দশরথ মিঞ্জ। তিনি বলেন, “ট্রিগারে হাত ছিল। রতনবাবু আমার উপরে আচমকা এসে পড়ায় গুলি ছিটকে যায়।” রতনবাবুর দাদা মিলন দে বলেন, “বনদফতরের তরফে জানানো হয়েছে দুর্ঘটনা। আমরা ঘটনার তদন্ত চেয়েছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.